Home » ধর্মনগর মহকুমা অফিসে চলছে চূড়ান্ত অরাজকতা, সকাল সাড়ে দশটা বেজে গেলেও অফিসের কক্ষগুলিতে ঝুলে বড় বড় তালা।

ধর্মনগর মহকুমা অফিসে চলছে চূড়ান্ত অরাজকতা, সকাল সাড়ে দশটা বেজে গেলেও অফিসের কক্ষগুলিতে ঝুলে বড় বড় তালা।

by admin

ধর্মনগর প্রতিনিধি।
উত্তর জেলা সদর ধর্মনগর মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসে চূড়ান্ত দুর্নীতির চিত্র প্রতিদিন ধরা পড়ছে। মানুষ সকাল থেকে পিআরটিসি, ওবিসি, ওয়ারিশনামা হিয়ারিং এর জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকলেও না দেখা আছে অফিসারদের না দেখা আছে দপ্তরের বাবুদের। বর্তমান মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ অনুযায়ী prtc ওবিসি এবং ওয়ারিশ নামার হিয়ারিং এর জন্য টুকেন নিতে হয়। যারা টুকেন পাবে তারাই সেদিনকার হিয়ারিংয়ে নাম আসবে এবং হিয়ারিং হবে। ধর্মনগর মহাকুমা দিন সাতসঙ্গম রানীবাড়ী ব্রজেন্দ্র নগর বাগন কুর্তি এই সব এলাকা ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। তাই মানুষ নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী সকাল সাতটা থেকে দপ্তর দপ্তরের সামনে হিয়ারিং এর টুকেন পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করলেও সাড়ে দশটা এগারোটা তার আগে দপ্তরের কোন বাবু আসেন না। সাড়ে দশটা পর্যন্ত দেখা যায় বিভিন্ন দপ্তরের বাইরে বড় বড় তালা ঝুলছে। পূর্বের এস ডি এম থাকাকালীন প্রতিদিনের জন্য মানুষ এসে টুকেন নিয়ে হিয়ারিং হয়ে যেত। এখনকার নিয়ম অনুযায়ী টুকেন না থাকলে কোন হেয়ারিং সম্ভব নয়। তাও দিনে আবার ৫০ থেকে ৬০ টি কুপন দেওয়া হবে। অথচ বর্তমানে মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসে পাঁচজন ডিসিএম রয়েছেন। তবুও সাধারণ গ্রামের গরিব মানুষের দৈনন্দিন নির্যাতন বেড়েই চলেছে কমার পরিবর্তে। সরকার থেকে কর্মচারীর সংখ্যা বাড়ানো হলেও কর্মসংস্কৃতি আগে যে জায়গায় ছিল তার থেকে খারাপ অবস্থায় রয়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠে আসছে। শুধুমাত্র কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে লাভ নেই যদি না কর্মসংস্কৃতি সঠিক করা না যায়। মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা মানুষের সুবিধার জন্য ঘরে ঘরে সুশাসন পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিলেও উদ্ধাতন সরকারি কর্মচারীরা এবং অফিসের বাবুদের আরাম-আয়াসি ভাব আর সাধারন মানুষকে ভোগান্তির চিন্তাধারা না কমালে যতই রাজ্য সরকার চেষ্টা করুক না কেন লাভের লাভ কিছুই হবে না। তার ওপর ধর্মনগরের এমন একজন মহাকুয়া ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্বে রয়েছেন যা নির্দেশকে কোন সরকারি কর্মচারী কর্ণপাতই করে না বলে জানা গেছে। সরকারি কর্মচারী মানে সাধারণ মানুষের ফাইলপত্র এক টেবিল থেকে আরেক টেবিল, দিনের পর দিন ঘোরানো ,শেষ সময় অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে কাজ করে দেওয়া, তাই হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমানে সরকারি কর্মচারী নামধারী বাবুদের চরিত্র। যতদিন না রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সরকারি কর্মচারীদের এবং কতিপয় উদ্ধাতন কর্মকর্তাদের চরিত্র না পাল্টাতে পারেন ততদিন যতই সচেতনতা শিবির আর সরকারি কাগজপত্রে নির্দেশ দেওয়া হোক না কেন লাভের লাভ কিছুই হবে না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে তাদেরকে সঠিক পরিষেবা দিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেলেও ধর্মনগরের মতো রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় সরকারি কর্মচারী এবং উদ্ধাতন কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে সাধারণ মানুষ ভালো পরিষেবা পাওয়া তো দূর অন্ত ন্যূনতম যে পরিষেবা মানুষ আশা করে তাও পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। ধর্মনগরের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন দীর্ঘদিন ধর্মনগরের ঝংকার ধরা অফিসগুলির কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে বারংবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ চেষ্টা পর্যবেষিত হয়েছে। এখন তিনিও হাল ছেড়ে দিয়েছেন এইসব অপদার্থ সরকারি কর্মচারীদের কর্মসংস্কৃতি কাকে বলে তার ন্যূনতম শিক্ষার উপর দিতে পর্যন্ত। বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী সেই সরকারি কর্মচারীর বৈশিষ্ট্য ধর্মনগরের অফিস গুলির কর্মসংস্কৃতি দেখে মানুষকে বারংবার মনে করিয়ে দিচ্ছে। সেই দীর্ঘ ২৫ বছর বাম আমল যেই কর্মসংস্কৃতি সরকারি কর্মচারীদের শিখিয়েছিল তার থেকে এখনো মুক্ত হওয়া সম্ভব হয়নি। নিষ্পেষিত শোষিত সাধারণ গরিব মানুষরা কোথায় কার কাছে গিয়ে তাদের ন্যায্যদাবী নিয়ে প্রশ্ন করবে এবং তা আদায় করবে তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়েছে সাধারণ মানুষরা।

You may also like

Leave a Comment