বিশালগড়, ১ ডিসেম্বর।। চড়িলামের সংঘর্ষ কাণ্ডে চারজনকে গ্রেফতার করেছে বিশালগড় থানার পুলিশ। ধৃত চারজনকেই বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এরমধ্যে দু’জনকে ১২ দিনের বাকি দু’জনকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। জেল হেফাজতে থাকাকালীন যে কোন পাঁচ দিন তদন্তকারী অফিসার অভিযোগ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। বুধবার দুপুরে চড়িলামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ যেমন সক্রিয় ছিল ঠিক তেমনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রেও পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত এবং দোষীদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বুধবার চড়িলামে ব্লকে ডেপুটেশন দেওয়ার নাম করে বিভিন্ন এলাকার কর্মী সমর্থকদের জড়ো করে চড়িলামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সিপিএম। সিপিএমের পথসভা থেকে একদল ক্যাডার বিজেপি কার্যালয়ে আক্রমণ করে। এতে ৯ জন বিজেপির কার্যকর্তা রক্তাক্ত হয়েছেন। তারা বর্তমানে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দোকান বিল্ডিং তোলার জন্য রাস্তার উপরে নতুন ইট রেখেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ইট ভেঙে বিজেপির কার্যকর্তাদের উপর ঢিল ছড়তে থাকেন সিপিএমের ক্যাডাররা। বোমাবাজি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আস্ফালনের অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে। পরবর্তী সময়ে বিজেপির সমর্থকরা জড়ো হয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এতে সিপিএমেরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। গোটা ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে খানিকটা বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এমনকি বিশালগড় মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল দাস আহত হয়েছেন। তিনি আহত হয়েও বিভিন্ন দলের কার্যকর্তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। কর্মীদের ফেলে পালিয়ে যায় সিপিএমের নেতারা। পুলিশ সিপিএম সমর্থকদের নিরাপদে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু এর পরেও সিপিএম নেতৃত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এর আগে বিশালগড়েও মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন। এর জেরেই বুধবার পুলিশ অফিসারের উপর আক্রমণ করেছে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা। এমনকি সিপিএম দুষ্কৃতকারীদের তান্ডব ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন এক সাংবাদিক। আত্মরক্ষার্থে একটি ব্যাংকে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন সাংবাদিক। সেখানে গিয়েও তাকে আক্রমণের চেষ্টা করেছে সিপিএমের ক্যাডাররা। এই ঘটনার পর থেকে চড়িলামের পরিস্থিতি থমথমে। বৃহস্পতিবার নিস্তব্ধ ছিল গোটা চড়িলাম। সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তির মরদেহ বৃহস্পতিবার পরিবারের হাতে হস্তান্তর করে পুলিশ। বিকালে কবরস্থ করা হয় তাঁর মরদেহ। বৃহস্পতিবারও পুলিশ সিআরপিএফ বাহিনী মোতায়েন ছিল গোটা চড়িলাম এলাকায়। পুলিশ প্রশাসন সতর্কতা অবলম্বন করে পুনরায় যেন শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্ন না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখছেন। সেই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য জোর তল্লাশি শুরু করেছেন। ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।
125
next post