প্রতিনিধি, উদয়পুর :- গত ৩১ শে অক্টোবর দীপাবলির রাতে উদয়পুর গকুলপুর এলাকায় জাতীয় সড়কের উপর গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের । মৃত্যুর ঘটনা জানতে পেরে রবিবার দুপুরে টেপানিয়া এলাকায় মৃত যুবক পীযূষ দেবনাথের বাড়িতে যান অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। সাথে ছিলেন টেপানিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন ঝর্না রানী দাস সহ গ্রাম প্রধান থেকে শুরু করে উপপ্রধান ও দলীয় বিজেপি নেতৃত্বরা । এদিন অর্থমন্ত্রী পীযুষের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে গিয়ে উপস্থিত হন তার বাড়িতে । মন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তার বাবা পরিমল দেবনাথ থেকে শুরু করে পীযুষের স্ত্রী ও বাড়ির সকল আত্মীয়-স্বজন কান্নায় ভেঙে পড়ে মন্ত্রীর সামনে । মন্ত্রী নিজ হাতে তার সন্তানকে কোলে নেন এবং কথা বলেন গোটা পরিবারের লোকজনের সাথে । পরে মন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে বলেন , মর্মান্তিক একটি অঘটন ঘটে গিয়েছে তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা । বর্তমানে গোটা পরিবারটি কিভাবে জীবন জীবিকা নির্বাহ করবে সে দিকে লক্ষ্য রেখে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ কিভাবে পাওয়া যায় সে বিষয়ে তিনি চেষ্টা করবেন । এদিন মন্ত্রী দীর্ঘসময় পীযুষের বাড়িতে বসে থেকে গোটা ঘটনার খোঁজখবর নেন । পরবর্তী সময় টেপানিয়া ও শালগড়া এলাকায় অজয় দাস এবং দেবজিৎ ভৌমিক এই দুইটি যুবকের প্রাণ হারিয়েছে ক্যান্সারের আক্রান্তের ঘটনায় । তাদের বাড়িতে গিয়েও পরিবার-পরিজনের সাথে কথা বলেন তিনি । খোঁজখবর নেন গোটা পরিবারের । অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়ের এই ধরনের উদ্যোগকে এদিন অনেকেই ধন্যবাদ জানান তার কারণ মন্ত্রী এত ব্যস্ততার পরেও যেভাবে নিজ-বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের জন্য সময় দিয়ে তাদের সুখ-দুঃখের পাশে সব সময় দাঁড়িয়ে থাকেন তা খুবই প্রশংসার। এই ধরনের মৃত্যু যাতে কখনো না ঘটে ঈশ্বরের কাছে কামনা করেন অর্থমন্ত্রী ।
ত্রিপুরা
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-ঐতিহ্যবাহী শিশু নিকেতন হাই স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষের গৌরবময় মুহূর্তকে বর্ণময় করে তুলতে গুচ্ছ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটি।১৯৭৫ সালের ১৪ই নভেম্বর বেসরকারি উদ্যোগে বর্তমান ডাক বাংলোর নিকটস্থ স্থানে শিশু নিকেতন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে।যা ছিল কৈলাসহরের প্রথম ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল।২০০৬ সালে সরকারি অনুদানকৃত বিদ্যালয়ে উন্নীত হয় শিশু নিকেতন হাই স্কুল।শিশু নিকেতন বিদ্যালয় সূচনা লগ্ন থেকেই বহু শিক্ষানুরাগী এবং সমাজ সচেতন নাগরিকদের সহায়তায় একটু একটু করে সমৃদ্ধ হয়েছে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে,তৎকালীন সরকারি উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় বর্তমানে ভগিনী নিবেদিতা উচ্চতর বিদ্যালয় এর প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা যোগমায়া রাহা,সমাজসেবী চুনী লাল ঘোষ,তৎকালীন জেলাশাসক অরবিন্দ পন্ডিত এবং উনার স্ত্রী নেত্রা পন্ডিত উনাদের দরাজ সহযোগিতায় এই বিদ্যালয় তার পথ চলা শুরু করেছিল।পরবর্তী সময়ে ১৯৮৭ সালে স্থান পরিবর্তন করে বর্তমান স্থানে বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল।ছন বাঁশের চালা ঘর তৈরি করে পঠন পাঠনের কাজ শুরু হলেও একসময় প্রবল ঝরে স্কুলটি ভেঙে যায়।সেই সময় সমাজের অন্যতম ব্যক্তিত্ব তথা শিক্ষাব্রতী এডভোকেট গিরিজা ভদ্র,প্রাক্তন শিক্ষক রাখাল মজুমদার,অধ্যাপক সুব্রত সেনগুপ্ত,প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী প্রমূখ ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় বিদ্যালয়টি পুনরায় নির্মাণ হয় এবং অনেক চড়াই উতরাই অতিক্রম করে আজ প্রজন্মের দীর্ঘ তপস্যাপথ পাড়ি দিয়ে পঞ্চাশ বছরের উত্তরাধিকার শিশু নিকেতন হাই স্কুল।এই সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদযাপনকে সামনে রেখে আগামী ১৪ই নভেম্বর থেকে ১৮ই নভেম্বর অব্দি বিবিধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।১৪ই নভেম্বর পাঁচ দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন ত্রিপুরা সরকারের সমাজকল্যাণ এবং সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় সহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এরপর শহরের রাজপথে অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য রেলি।৫০ বছরের এই উদযাপনকে সামনে রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান,ক্রীড়া কর্মসূচি,সামাজিক সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠান সহ বর্ণময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।তার মধ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের উপর সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ,প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, কুইজ এবং দাবা প্রতিযোগিতা,বসে আঁকো প্রতিযোগিতা,প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ,স্বচ্ছ ভারত অভিযান, ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা সহ অনেকগুলো কর্মসূচি রূপায়িত হবে সুবর্ণজয়ন্তীর এই বর্ণময় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।অনুষ্ঠানের সমাপনী সন্ধ্যায় অর্থাৎ ১৮ই নভেম্বর রাজ্য এবং বহিঃ রাজ্যের শিল্পীদের বিশেষ গানের অনুষ্ঠান রয়েছে বলে সামগ্রিক তথ্য সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে ধরেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোজ দাস।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটির প্রাক্তন সভাপতি সমীর ভট্টাচার্য এবং এলামনি এসোসিয়েশনের কনভেনার দীপ্তনয় ঘোষ ও ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান অরূপ দেব চৌধুরী।
প্রতিনিধি মোহনপুর :- রাজ্যের ভিলেজ কাউন্সিল নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে নির্বাচন কমিশনের। এই নির্বাচনে দলের ভালো ফলাফল জন্য মাঠে নেমেছে বিজেপি। রবিবার মোহনপুর বিধানসভার ডাইনমারাতে জনজাতি মোর্চার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রস্তুতি বৈঠক। এতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
সামনেই ভিলেজ কমিটির নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিজেদের ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। রবিবার মোহনপুর বিধানসভা এলাকার নয়টি এডিসি ভিলেজ, বামুটিয়া বিধানসভার দুটি এডিসি ভিলেজ এবং সিমনা বিধানসভার একটি এডিসি ভিলেজের দলীয় নেতৃত্বদের নিয়ে হয়েছে নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠক। আগামী দিনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাংগঠনিক প্রস্তুতি নিতে এই বৈঠক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। পাশাপাশি নির্বাচনে লেফুঙ্গা ব্লক সহযোগী দলদের সাথে নিয়ে দখল করারও ঘোষণা দিয়েছেন মন্ত্রী। এই সভাতে নির্বাচনের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন মন্ত্রী। সভাতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জনজাতি মোর্চার নেতা রঞ্জিত দেববর্মা, প্রদীপ দেববর্মা সহ অন্যান্যরা।
- প্রতিনিধি, বিশালগড়, ৩০ অক্টোবর।। গোলাঘাটিতে অনুষ্ঠিত হয় বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক বৈঠক। বুধবার গোলাঘাটি বিধানসভার গোপিনগর কমিউনিটি হলে আয়োজিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক ভগবান দাস, বিধায়ক তথা যুব মোর্চার প্রদেশ সভাপতি সুশান্ত দেব, জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ ভৌমিক, প্রাক্তন বিধায়ক বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। মন্ডল, শক্তি কেন্দ্র এবং বুথ স্তরের কার্যকর্তা সহ জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব ভাষনে বলেন ত্রিপুরার বিজেপির কার্যকর্তারা রেকর্ড গড়তে জানে। ২০১৮ সালে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বিজেপির কার্যকর্তারা। তিনি বলেন সদস্যতা অভিযানেও এগিয়ে রয়েছে ত্রিপুরা। এবারের সদস্যতা অভিযান পূর্বের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড তৈরি করবে । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিকশিত ভারত গড়ার সংকল্প বাস্তবায়নের অংশীদার হতে চাইছে দেশের সকল অংশের মানুষ। ত্রিপুরা রাজ্য বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষ বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। মানুষকে সংগঠিত করে ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার সংকল্প বাস্তবায়নে সকল কার্যকর্তাদের সদস্যতা অভিযান সফল করার অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান তিনি। শেষে বেশ কয়েকজন প্রবীণ নাগরিকদের নিজ হাতে সদস্যতা প্রদান করেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ভগবান দাস বলেন সংগঠন পর্ব সদস্যতা অভিযান রাজ্যজুড়ে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে চলছে। মুখ্যমন্ত্রী সহ সকল স্তরের কার্যকর্তা এই অভিযানে অংশ নিয়েছে। যুব মোর্চার প্রদেশ সভাপতি তথা বিধায়ক সুশান্ত দেব বলেন রাজ্যের নবপ্রজন্ম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে রয়েছে। বৈভবশালী ভারত গড়ার সংকল্প পূরণে অংশীদার হতে যুব সমাজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ করছে।
প্রতিনিধি মোহনপুর:- মোহনপুর বিধানসভার রাস্তার পাশে কোন প্রতিমা বা দেব দেবীর মূর্তি রাখার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করার নির্দেশ দিলেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। অগত্যা যদি কেউ প্রতীমা নিরঞ্জন করতে না চান তাহলে নির্দিষ্ট একটি স্থান করে দেওয়া হবে। সেই স্থানে রাখতে হবে প্রতিমা গুলোকে।
দিনের পর দিন হিন্দু দেবদেবীদের পূজা শেষে ফেলে রাখা হয় রাস্তার পাশে বা গাছের নিচে। এই বিষয়ে এবার প্রতিবাদের সরব হল মোহনপুরে বিধায়ক তথা মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি মোহনপুর মহকুমা শাসক সুভাষ দত্তকে এই বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন। মন্ত্রী বলেন মোহনপুরের এসডিএম অফিস থেকে তারাপুর চৌমুহনি, বাইপাস রোড, সহ বিভিন্ন প্রধান সরকার পাশে যাতে কেউ মূর্তি না রাখে সে বিষয়ে প্রচার করার জন্য। পাশাপাশি যদি কারোর প্রতীমা নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে কোন ধরনের আপত্তি থাকে সেক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট স্থান ঠিক করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। ওই স্থানেই এলাকার সমস্ত মূর্তি রাখতে হবে। তিনি মহকুমা শাসককে নির্দেশ দিয়েছেন মোহনপুর পুর পরিষদ এবং পঞ্চায়েত এলাকাতে এই বিষয়ে প্রচার করার জন্য। ইতিমধ্যেই মোহনপুর পুর পরিষদ বিভিন্ন রাস্তার পাশে রেখে যাওয়া প্রতীমা গুলো উঠিয়ে বিসর্জন করার উদ্যোগ নিয়েছে। সচেতন মহলের দাবি এই উদ্যোগ মোহনপুর বিধানসভাতে সীমাবদ্ধ না রেখে সিমনা বামুটিয়া বিধানসভা এলাকাতেও বাস্তবায়ন করার জন্য।
- ধর্মনগর প্রতিনিধি।মঙ্গলবার ধর্মনগরের বিবেকানন্দ সার্ধ বার্ষিকী ভবনের ধর্মনগর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের নবীন বরণ অনুষ্ঠান পালিত হয়। উদ্যোক্তা ছিলেন এবিভিপির কর্মীবৃন্দ এবং ধর্মনগর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা বৃন্দ। এই নবীনবরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক যাদব লাল নাথ, ধর্মনগর পুরো পরিষদের চেয়ারপারসন মিতালী দাস সেন, জেলা পরিষদের সভানেত্রী অপর্ণা নাথ, উত্তর জেলা বিজেপি দলের সভাপতি তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী কাজল দাস, ধর্মনগর সরকারি মহাবিদ্যালয় এর প্রিন্সিপাল ডক্টর গৌতম দাস সহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা। সভায় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কথায় উঠে আসে ভারতের লৌহ মানব বল্লভ ভাই প্যাটেল এর কাহিনী। ভারতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র ভাই মোদি শপথ গ্রহণের পর ভারতের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা হচ্ছে। পূর্বে ভারতবাসীকে একটা ভিন্ন সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতি দিয়ে বুঝিয়ে মতিভ্রম করার প্রবণতা হয়েছে। এখন মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর ভারতের বৈদিক সংস্কৃতি ও সংস্কৃতি মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। ভারতের সংস্কৃতি যে কত সমৃদ্ধ এবং কত মহামানব এই দেশে জন্মগ্রহণ করে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন তাদের কাহিনী তুলে ধরা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার জ্ঞান পরিবেশন করা হয়।
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রায়শই বলে থাকেন মহকুমা হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবা সুন্দর এবং স্বচ্ছ থাকলে রোগীরা তার নিজস্ব জেলাতেই সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।কষ্ট করে রেফার নিয়ে জিবি হাসপাতালে আসার প্রয়োজন হয় না।সেই লক্ষ্য নিয়েই জেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্রমোন্নতি হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ পূর্বের থেকে বর্তমানে পরিষেবা অনেকটাই ভালো পাচ্ছেন।আজ জেলা হাসপাতালেই এইচআইভি পজিটিভ রোগীনির সফল অস্ত্রপাচার করে স্বাস্থ্য পরিষেবায় নতুন ফলক যোগ করল জেলা হাসপাতাল।গত কয়েক দশক ধরেই ক্রমাগত বেড়ে চলেছে এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা। আপাতত সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি এবং জনসচেতনার মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের উপর কিছুটা লাগাম দেওয়া সম্ভব হলেও সম্প্রতি কালে সিরিঞ্জের মাধ্যমে নেশা সেবনকারীদের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে এইচআইভি সংক্রমণ। গর্ভবতী এক মহিলা সোমবার প্রসব বেদনা নিয়ে জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা যায় গর্ভবতী মহিলার শরীরে এইচআইভি সংক্রমণ রয়েছে।চিরাচরিতভাবে এই মহিলাকে উন্নত পরিষেবার জন্য অন্যত্র রেফার না করে এই জেলা হাসপাতালে সীমিত পরিষেবার মধ্যেই সিজারিয়ান ডেলিভারির মাধ্যমে প্রসব করানোর সিদ্ধান্ত নেয় জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।আজ দুপুর একটা পাঁচ মিনিটে সিজারিয়ানের মাধ্যমে এক সুস্থ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মহিলা।এই সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুমিত দাস। তার সঙ্গে সহযোগিতায় ছিলেন ডাঃ রূপময় দাস,ওটি সিস্টার সাথী ঘোষ,ওটি নার্স করুনা দেববর্মা,ওটি টেকনিশিয়ান সুরঞ্জিত দাস, ওটি জি ডি এ শুভঙ্কর সাহা প্রমূখ।জেলা হাসপাতালের এই সাফল্যে কৈলাসহরবাসী গর্বিত।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর পূর্বেও একাধিক কঠিন অস্ত্রোপচার এই হাসপাতালে করা হয়েছে।
প্রতিনিধি মোহনপুর :- দীর্ঘ বছর যাবত বসবাস করা জনগণকে ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সরব হলো গ্রামবাসী। ঘটনা বামুঠিয়া বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত বড়লোঙ্গার শিবির গ্রামে। প্রায় ৩ শতাধিক গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে মোহনপুর মহকুমা শাসকের নিকট দিয়েছেন ডেপুটেশন। দাবি করেছেন এসআরপি গ্রুপ নামক প্রতিষ্ঠান গ্রামবাসীর কাছ থেকে জমি কেরে নেওয়ার যে চক্রান্ত করছে তা বন্ধ করতে।
সম্প্রতি বিনোদিনী চা বাগান যেটা বর্তমানে এসআরপি গ্রুপ নামে পরিচিত তারা বড়লোঙ্গার শিবির গ্রামের জনগণের নামে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ করেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মোহনপুর মহকুমা শাসক ২৮টি পরিবারকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। এই গ্রামের সীমানায় যে সমস্ত বাড়ি রয়েছে শুধুমাত্র তাদেরকেই নোটিশ করা হয়েছে।আজ ছিল হিয়ারিং। এই হিয়ারিংকে কেন্দ্র করে গোটা গ্রামের মানুষ হাজির হয়েছে মোহনপুর মহকুমা শাসক কার্যালয়ের সামনে। এই দিন মিছিল করে গ্রামবাসী হাজির হয়েছে মোহনপুর মহকুমা শাসক কার্যালয়ে। বামুটিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণ ধনদাস বলেন বিগত প্রায় ৬০ বছর যাবত এই গ্রামে মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অনেকেই জমি ক্রয় করে নিয়েছেন। অনেকে খাসের জমিতে রয়েছেন। আবার অনেককে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে বড়কাঠালে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তৎকালীন সরকার এই এলাকায় এনে আশ্রয় দিয়েছিলেন। সেই সময় বর্তমান এসআরপি গ্রুপ বিনোদিনী চা বাগান নামে অন্য মালিকের হাতে ছিল। সে সময় মালিকের সাথে আর্থিক লেনদেনেরও তথ্য-প্রমাণ রয়েছে গ্রামবাসীর কাছে। কিন্তু সম্প্রতি এসআরপি গ্রুপ কর্তৃপক্ষ এই জমির তাদের দাবি করে মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ করে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন কৃষ্ণ ধনদাস। এদিন মহাকুমা শাসকের সাথে গ্রামবাসী, জনপ্রতিনিধি এবং অন্যান্য নেতৃত্বরা আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত করেন মহকুমা শাসকের তরফে একটি টিম গঠন করে গ্রাম পরিদর্শন করবে। সেখানে গ্রামবাসীর সাথে আলোচনা করবে এবং সমস্যাগুলো সম্পর্কে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা পরিষদের সদস্য জয় লাল দাস, মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান সঞ্জীব দাস সহ অন্যান্যরা।
মনমুগ্ধকর আলোকসজ্জা ও তাক লাগানো প্যান্ডেল তৈরি করে ধর্মনগর শহরকে টেক্কা দিচ্ছে চুরাইবাড়ির বিভিন্ন ক্লাব ও কালীপূজা উদ্যোক্তারা।
ধর্মনগর২৭ অক্টোবর :—- কালীপুজো মানেই যেনো উত্তর ত্রিপুরা জেলা। চিরন্তন নাহলেও এমনই একটি অঘোষিত প্রবাদ বাক্য রয়েছে। তাই বরাবরই প্রতিবছর ত্রিপুরা রাজ্যের মধ্যে তাক লাগানো আলোকসজ্জা ও প্যান্ডেলের মাধ্যমে শ্যামা পূজার আয়োজন করে থাকে উত্তর ত্রিপুরা জেলার বিভিন্ন বড় বড় ক্লাব ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে জেলা সদর ধর্মনগর শহরে বেশ কয়েকটি বনেদি ক্লাব রয়েছে, কিন্তু সেগুলোকেও টেক্কা দিতে রাজ্যের প্রবেশদ্বার চুরাইবাড়িতে বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের পূজো রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম ইয়ুথ ক্লাব। বিগত প্রায় কুড়ি বছর ধরে তাদের এই শ্যামা মায়ের আরাধনার এবছর একটি কাল্পনিক প্যান্ডেল ও নবদ্বীপের আলোক শিল্পীদের নিয়ে তাক লাগানো আলোকসজ্জা সহ প্রায় ৬ লক্ষ টাকার বাজেট নিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মূলক অনুষ্ঠানসহ তাদের পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। চলবে তিন দিন ব্যাপী।তাছাড়াও রয়েছে চুরাইবাড়ি রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন ইউনাইটেড ক্লাব। তারাও অত্যাধিক মনমুগ্ধকর একটি কাল্পনিক প্যান্ডেল তৈরি করছে যার উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট। তাছাড়াও আলোকসজ্জা সহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে তাদের। এদিকে পিছিয়ে নেই সেবক সংঘ ক্লাবও। তারাও শ্যামা পুজোয় গুটি গুটি পায়ে পঁচিশ বছর পূর্ণ করেছে। এ বছর তাদের প্যান্ডেলের মূল থিম রয়েছে প্রাচীন গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি। যা বিগত দিনে হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হবে। তাছাড়াও বিভিন্ন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে তাদের চার দিনব্যাপী। শ্যামা পূজোর দিনে আরজি কর কান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের বর্ণাট্য শোভাযাত্রা ও রেলি অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া সর্বশেষ ফ্রেন্ডস ক্লাবের বড় বাজেটের পুজো রয়েছে অসম-আগরতলা জাতীয় সড়কের পাশেই। প্রতিবছরই ক্লাব কর্তৃপক্ষ মন মাতানো আলোকসজ্জা, প্যান্ডেল ও স্থানীয় এবং বহিরাগত শিল্পীদের নিয়ে মন মাতানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শনার্থীদের উপহার দিয়ে থাকেন। তাছাড়াও ক্লাব কর্তৃপক্ষ দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ সহ দূরপাল্লার লরি চালকদের মধ্যে জল, মিষ্টি ও ফল বিতরণ করে থাকেন। তারাও ছয় লক্ষাধিক টাকার বাজেট নিয়ে শ্যামা পূজায় ব্রতী হয়েছে এবং চুরাইবাড়ির, কদমতলা সহ বিভিন্ন এলাকার দর্শনার্থীদের প্যান্ডেলে টানতে মরিয়া ক্লাব কর্তৃপক্ষ। সর্বোপরি চুরাইবাড়ি আরক্ষা দপ্তর উত্তর জেলার মধ্যে তাক লাগানো পূজোর আয়োজন করে থাকে। আলোকসজ্জা সহ দু’দিনব্যাপী স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শীতবস্ত্র বিতরণ সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান করে থাকে আরক্ষা দপ্তর। সব মিলিয়ে উত্তর জেলার মধ্যে ধর্মনগর শহরকে টেক্কা দিতে একেবারে প্রস্তুত চুরাইবাড়ির বিভিন্ন ক্লাব ও পূজা উদ্যোক্তারা।
শান্তিরবাজার প্রতিনিধি :আজ শান্তিরবাজার মহকুমায় বীরচন্দ্র নগর বাজারে জনজাতিদের সুরক্ষা সহ ১০ দফা দাবি ভিত্তিতে দক্ষিণ জেলা কাউন্সিল অফ তিপ্রাসা হদার উদ্যোগে প্রতিবাদ মহামিছিলি সংগঠিত করা হয়। এই প্রতিবাদ মহা মিছিলে ১৪টি জনজাতি সম্প্রদায়ের লোকজনরা উপস্থিত ছিলেন।এই মহামিছিল বীরচন্দ্র নগর এডিসি ভিলেজ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে বীরচন্দ্রনগর বাজার এবং ৮ নং জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জনপদ পরিক্রমণ করে অবশেষে বাজার প্রাঙ্গণ এক সভায় মিলিত হয়। আজকের এই প্রতিবাদ মহামিছিল এবং প্রকাশ্য সভায় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিল অফ তিপ্রাসা হদার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি যোগেন্দ্র দেববর্মা,
কেন্দ্রীয় কমিটির কোনবেনার বীরেন্দ্র ত্রিপুরা, সহ-সভাপতি খানা রাম রিয়াং, দক্ষিণ জেলা কনবেনার সুনীল মুড়াসিং, দক্ষিণ জেলা সভাপতি খবা রিয়াং সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন । ১০ দফা দাবি গুলি হল তিপ্রাসার সমস্ত সম্প্রদায়ের হাতে কাস্টমারীল তুলে দিতে হবে।
২. বন অধিকার আইন মোতাবেক তিপ্রাসাদের পাট্টা ভূমি প্রদান করতে হবে।
৩. পূর্বে প্রদত্ত পাট্টা ভূমি গুলিকে অনতি বিলম্বে সীমানা নির্ধারণ করিয়ে দিতে হবে।৪. তপঃশিলী জাতি/উপজাতিদের বিরুদ্ধে ‘অত্যাচার-নৃসংশতা প্রতিরোধ আইন ১৯৮৯’ যথাযথ ভাবে প্রণয়ন করতে হবে।৫. সংবিধানে ১৮৭ নং ধারা মোতাবেক উপজাতিদের জমি পুনরুদ্ধার করে তিপ্রাসাদের হাতে তুলে দিতে হবে।
পুলিসি হেপাজতে তিপ্রাসাদের অমানবিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচার প্রদান করতে হবে।
৭. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর খুন-সন্ত্রাস বন্ধ করতে ডঃ ইউসুফ সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে চাপ দিতে হবে।
৮. ত্রিপুরা রাজ্য সম্পর্কিত তিপ্রাসাদের ভূমি অধিকার আইন যথাযথ ভাবে প্রণয়ন করতে হবে।
৯. দরিদ্র তিপ্রাসাদের দ্বারা গড়ে তোলা বাগান গুলিকে পাট্টা ভূমি প্রদান করিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
ত্রিপুরায় অবৈধ ভাবে বিদেশী অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে; ইত্যাদি। । আজকের এই সভা এবং মিছিল থেকে সরকারের প্রতি বিশেষ বার্তা প্রদান করেন তিপ্রাসা হদার তরফ থেকে ।শত শত জনজাতি নারী পুরুষের উপস্থিতিতে এই মহা মিছিল উপস্থিত লোকজনদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনা লক্ষ্য করা যায়।