কাঞ্চনপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই একাধিক বসত বাড়ি থেকে আসবাবপত্র। রবিবার রাতে উত্তর ত্রিপুরা জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমার সদর এলাকার কাঞ্চনপুর থানা সংলগ্ন বসত বাড়িতে আচমকা বিধ্বংসী অগ্নি কান্ড সংগঠিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে হয়েছে বলে অনুমান। তবে এই অগ্নিকাণ্ড থেকে কাঞ্চনপুর অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের বেহাল চিত্র ধরা পড়েছে।এই দপ্তরের কর্মীরা সারা বছর বসে সবে বেতন গুনছেন। কেবল দুর্যোগের সময় তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু দেখা গেল রবিবার কাঞ্চনপুরের অগ্নি কান্ডে অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের ইঞ্জিন আসার পর দুইটি ইঞ্জিন বিকল । অন্যদিকে দপ্তরের এই অপদার্থতার কারণে অগ্নিকাণ্ডে কাঞ্চনপুর অটো স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা কিছু বাড়ি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে । অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের গাফিলতিতে ধীরে ধীরে আগুন আয়ত্বের বাইরে চলে যেতে থাকে। কাঞ্চনপুর অগ্নিনির্বাপন দপ্তরের নির্ধারিত মোবাইলে ফোন করলেও মোবাইল ধরার কেউ ছিল না। শেষ পর্যন্ত প্রায় চল্লিশ মিনিট পর কাঞ্চনপুর অগ্নিনির্বাপক দপ্তর থেকে দুইটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে । ততক্ষণে আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তারপরও কাঞ্চনপুর অগ্নিনির্বাপণ দপ্তরের অপদার্থতা দেখা গেল । আগুন নেভানোর কাজে আসার পর দেখা গেল কাঞ্চনপুর অগ্নিনির্বাপন দপ্তরের কোন ইঞ্জিন
কাজই করতে পারল না। ফলে আগুনের লেলিশিখা ছড়িয়ে পড়ে কাঞ্চনপুর সদর এলাকার পিএনবি ব্যাংকের কাঞ্চনপুর শাঁখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শশাঙ্ক চাকমা এবং তার বড় ভাই দেবব্রত চাকমার প্রায় দশ বার টি ঘর। অগ্নিনির্বাপক দপ্তর নিরব হয়ে বসে থাকে। আগুনের লেলিশিখা দেখে কিছু যুবক ক্ষুব্ধ হয়ে অগ্নিনির্বাপক কর্মিদের গনধোলাই দেওয়ার চেষ্টা করলেও কিছু মানুষ ক্ষুব্ধ যুবকদের আটকায়। আশপাশের এলাকার মানুষের চিৎকারে আশপাশ এলাকার যুবকরা এবং কাঞ্চনপুর থানার আরক্ষা কর্মিরা আগুন নেভানোর কাজে হাত দেয়। সবচেয়ে নজিরবিহীন ঘটনা হলো আগুন যখন আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছিল এবং অগ্নিনির্বাপক দপ্তরের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায় তখন এলাকার মানুষ টি এস আর ১৩ নম্বর ব্যাটালিয়নে ফোন করে আগুন নেভানোর কাজে তাদের সাহায্য চাইলেও কাঞ্চনপুর সুভাষনগরস্থিত ১৩ নম্বর ব্যাটালিয়ন থেকে কোন সাহায্য করা হয় নি। যদিও কাঞ্চনপুর থানার আরক্ষা কর্মি ও কিছু যুবকের চেষ্টা ও তৎপরতা এবং ঘন্টা খানেক পর কাঞ্চনপুর পুলিশ স্টেশনের পুকুর জল এনে এলাকার যুবকরা এবং আরক্ষা কর্মিরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে । কিন্তু এর আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় দশবারটি বাড়ি ঘর । পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন আয়ত্বে আসে । প্রাথমিক ভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। শশাঙ্ক চাকমার তিন তালা দালান বাড়ির বেশ ক্ষতি হয়েছে । আগুনে দুইটি গ্যাস সিলিন্ডার ফেঁটে আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে । এদিকে আগুন লাগার কারণ হিসাবে বিদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারনে হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত শশাঙ্ক চাকমা দাবি করেন। তবে এলাকার মানুষের অভিমত মোমবাতি ফেক্টরি থেকে আগুন লেগেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে । এদিকে কাঞ্চনপুর অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের কাজ কর্মে এলাকার মানুষ প্রচন্ড ক্ষুব্ধ । কাঞ্চনপুর অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের কাউকে রাতে কোন ডিউটিতে পাওয়া যায় না। । মদ জুয়ায় মজে থাকে কাঞ্চনপুর মহকুমা অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের অফিসটি । আগুন যেখানে লাগে সেখান থেকে অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের দূরত্ব এক কিলোমিটার থেকে কম। আর এই এক কিলোমিটার পথ যেতে অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের সময় লেগেছে এক ঘন্টা। জানা গেছে কাঞ্চনপুর অগ্নি নির্বাপন দপ্তরের এই অপদার্থতার বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ কাঞ্চনপুর মহকুমা শাসকের মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে গনডেপুটেশন দেবে।
কাঞ্চনপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
34