মাতৃ বন্দনার প্রতীক্ষায় রয়েছে মর্তোবাসী।শরতের এই আনন্দমুখর উদযাপনে রাত পোহালেই ঢাকে কাঠি পড়বে সোনালী উৎসবের।আর কয়েক ঘন্টা পরেই পিতৃপক্ষের অবসানে মাতৃপক্ষের শুভ সূচনা হবে।রাজ্যের পাহাড় থেকে সমতল প্রতিটি ক্লাব,সার্বজনীন পূজা কমিটি,বারোয়ারি পূজা কমিটি,প্রত্যেকেই শারদ বরণে চূড়ান্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলছেন।এ রাজ্যের বিশেষ কয়েকটি দুর্গাপূজার মধ্যে গত বছর থেকেই স্থান করে নিয়েছে ঊনকোটি জেলার চন্ডিপুর বিধানসভার শ্রীরামপুর সংহতি সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি।২০১৮ সাল থেকে এই দুর্গাপূজার সূচনা হলেও ২০২৩ সালে চন্ডিপুর বিধানসভা কেন্দ্র বাম মুক্ত করে ভারতীয় জনতা পার্টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিধায়ক তথা রাজ্য সরকারের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়ের আন্তরিক উদ্যোগে গত বছর থেকে এই পূজার উৎকর্ষতা এবং উচ্চতা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।এবছর পূজার থিম ইতালির রাজপ্রাসাদে ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া। এবারকার মাতৃ মন্দিরও এখানকার মাটি ও মানুষের মূল শিল্প ধারার সঙ্গে সাজুজ্য রেখেই পরিকল্পিত হয়েছে।থার্মোকল দ্ধারা নির্মিত এই পূজা প্যান্ডেলে ভারতীয় ঐতিহ্য এবং দেব দেবীর প্রতিকৃতি সহ আমাদের কৃষ্টি এবং পরম্পরার সংমিশ্রণে নির্মিত হবে অনুপম মাতৃ মন্ডপ।সুউচ্চ এই প্যান্ডেল নির্মাণের চূড়ান্ত পর্বের কাজ চলছে।এবারকার দুর্গা পূজার সামগ্রিক বিষয় সম্পর্কে জানতে গিয়ে পূজা কমিটির সম্পাদক বাবলু দেব এবং অফিস সম্পাদক উত্তম করের সাথে কথা বললে তারা জানান,এবছর পূজার বাজেট ৫০ লক্ষ টাকা।এই কারু কল্পনা এবং বিস্ময়-নির্মানে নবদ্বীপের কোমল সাধকের প্রশংসিত ইতিহাস প্রতিফলিত হবে এই অনুপম মাতৃ মন্দিরে এবং মৃৎ শিল্পী সত্যেন পাল নবদ্বীপের চারুকৃতিতে গড়া ওই দশভুজা-মূর্তি-এই জনপ্লাবন, এই আনন্দ উচ্ছ্বাস,এই নন্দিত কাল খন্ডের বুকে দাঁড়িয়ে ঋদ্ধ করবে দর্শনার্থীদের।সমস্ত প্রাঙ্গন জুড়ে আলোকমালার এই অবাক-বিচ্ছুরনে রয়েছে রাজধানীর শিল্পী তপন দাসের ছোঁয়া।পঞ্চমী তিথিতে এই মাতৃ মন্ডপের আনুষ্ঠানিক সূচনা পর্বে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা।ঐ অনুষ্ঠানেই চন্ডিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি গ্রামীণ এলাকা থেকে ৫০টি করে প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি বস্ত্র বিতরণ করা হবে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে শ্রীরামপুরে নবনির্মিত তিনটি বেকার স্টল বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।শ্রীরামপুর সংহতি সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি সপ্তম বর্ষের এই আয়োজন অবিভক্ত উত্তর জেলার মধ্যে সবচাইতে বড় বাজেটের পুজো উপহার দিতে চলেছে তা হলফ করেই বলা যায়।যেখানে শুধুমাত্র সুদৃশ্য মাতৃ মণ্ডপ তৈরির জন্য ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।পূজার প্রতিটি দিন অন্ন ব্যঞ্জনের ব্যবস্থা রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য।এছাড়া প্রতি সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পী এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীদের নিয়ে মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই শুরু হবে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবারকার দুর্গাপূজার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্য বিমল কর এবং কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন চন্ডিপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন শম্পা পাল দাস। এখানে উল্লেখ্য যে,গত বছর শ্রীরামপুর সংহতি সার্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটি ৩৫ লক্ষ টাকা বাজেটের দুর্গাপুজোর আয়োজনে চন্দ্র মহল থিম উপহার দিয়েছিল দর্শনার্থীদের।যা রাজ্যের কয়েকটি পূজার মধ্যে নজরকাড়া ছিল।এবছরও ইতালির রাজপ্রাসাদে ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া শীর্ষক ভাবনায় যে পূজা প্যান্ডেল তৈরি হচ্ছে তা দেখার জন্যে এখন থেকেই উৎসব প্রেমী মানুষদের উৎসাহ শুরু হয়ে গেছে বলে জানান পূজা কমিটির সদস্যরা।
86
previous post