প্রতিনিধি, উদয়পুর :-এক মাসের ব্যবধানে উদয়পুর ধ্বজনগর গ্রামে দুইটি খুন। সোমবার রাত তিনটা নাগাদ নিজ স্বামীর ধারালো দায়ের কোপে মৃত্যু হল স্ত্রীর । মৃত গৃহবধূর নাম নমিতা দে , বয়স ৩৫ বছর । ঘটনা উদয়পুর ধ্বজনগর আর.এফ.টিলা গ্রামে । পরিবার থেকে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জানায় , গত এক মাস ধরে স্বামী আশীষ দে ও গৃহবধূ নমিতা দে-র মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা চলে আসছিল । রবিবার দিনভর মন খারাপ করে অভিযুক্ত স্বামী আশীষ দে নিজ বাড়িতেই ছিল । আশীষের মা জানান , ছেলে মন খারাপের মাঝে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করেনি। কেন এই ধরনের খুনের ঘটনা সংগঠিত করেছে ছেলে ! তা বুঝে উঠতে পারছেনা মা থেকে শুরু করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী । জানা যায় , দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীর উপর সন্দেহ দানা বাদে স্বামীর । সূত্রের খবর , লোকের মুখে নানা কথা স্বামী শুনতে পায় তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এরপর থেকে এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি পরিবারের মধ্যে । একটা সময় বাক-বিতণ্ডা ব্যাপক আকার ধারণ করে। কিন্তু রবিবার রাতে অন্যান্য দিনের মতো রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে নিজের ছেলে মেয়ে দেরকে সাথে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে নমিতা। একই ঘরে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে স্বামী আশীষ দে। কিন্তু রাত তিনটা নাগাদ ছেলেমেয়েদের অগোচরে ধারালো দায়ের কোপে নিজের স্ত্রীকে খুন করে অভিযুক্ত স্বামী আশিষ দে । গোটা বসত ঘর রাতে রক্তাক্ত হয়ে পড়ে । পরবর্তী সময় আশীষ এই ঘটনা সংগঠিত করে তার ছোট ভাই বাসু দে-কে সোমবার ভোরের দিকে ডাকতে শুরু করে। এবং দা হাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে । তখন নিজের আপন ছোট ভাই বাসু দে এলাকা গ্রামবাসীদের ডাকাডাকি শুরু করার পর গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় তাকে আটক করে ফেলে জনতা । এই ঘটনার খবর পেয়ে গোমতী জেলা পুলিশ সুপার নমিত পাঠক থেকে শুরু করে উদয়পুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সহ রাধাকিশোরপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে যান । জানা যায় , মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ি দক্ষিণ জেলার পিআর বাড়ি এলাকায় । মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় দুই ভাই ও ছোট বোন কান্নায় ভেঙে পড়ে । মায়ের ডাক শুনার জন্য চিৎকার শুরু করে ছেলেমেয়েরা । পরে অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে রাধা কিশোরপুর থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। অপরদিকে মৃত গৃহবধূর দেহটি পুলিশ উদ্ধার করে টেপানিয়া জেলা হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় ময়নাতদন্ত করার জন্য । বর্তমানে পুলিশ ফরেন্সিক টিমের সহযোগিতায় সমস্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় করতে শুরু করে । এই ঘটনার সাথে অন্য কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে কিনা ? তার তদন্ত শুরু করে পুলিশ । সাত সকালে এই খুনের ঘটনা গোটা উদয়পুর মহকুমা জুড়ে ছড়িয়ে পড়তেই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
স্বামীর দায়ের কোপে মৃত্যু হল স্ত্রীর , গ্রেপ্তার স্বামী
120