বিজেপির বিকল্প নেই, ভারতের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জি, অমিত সাহ এবং জে পি নাড্ডার মত আর কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ভারতীয় ইতিহাসে স্থান করে নিতে পারবে না। মঙ্গলবার খোয়াইয়ের নিপেন চক্রবর্তী এভিনিউর মোহর মঞ্চে কৃশান মোর্চা খোয়াই মন্ডলের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় এমনটাই অভিমত ব্যক্ত করেন কিষান মোর্চা ত্রিপুরা প্রদেশ কমিটির সভাপতি জহর সাহা। এই দিন সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কিষান মোর্চার প্রদেশ কমিটির সহ-সভাপতি জয়দেব দেববর্মা, প্রদেশ কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বরণ রায়, খোয়াই মন্ডল সভাপতি সুব্রত মজুমদার, বিজেপি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দাস, খোয়াই পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারপারসন তাপস কান্তি দাস এবং খোয়াই পৌর পরিষদের চেয়ারপারসন দেবাশীষ নাথ শর্মা সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা। সমাবেশে প্রধান বক্তার ভাষণে কিষান মোর্চার রাজ্য সভাপতি জহর সাহা বলেন বিজেপি ভালো কিছু করলে বিরোধীদের তা চোখে পরে না। কারণ তাদের চোখে ছানি পড়েছে। ডাক্তারের কাছে যায় না। বাজার থেকে কম দামি চশমা কিনে চোখে লাগায়। তাই তারা রাজ্যের উন্নয়ন দেখতে পায় না। খোয়াই এর মাটিতে দীপঙ্কর নাথ শর্মা, অনাথ বন্ধু মালাকার, নৃপেন্দ্র দেবনাথ, ক্ষিতীন্দ্র গোপের মত আরো অনেককে রাজনৈতিক কারণে সিপিএম হার্মাদ বাহিনীর হাতে খুন হতে হয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছরে রাজ্যে বিজেপির শাসনকালে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কাউকে খুন হতে হয়নি। বিরোধীরা বলে বেড়ায় বিজেপির আমলে রাজ্যে কোন উন্নয়ন হয়নি। অথচ রাজ্যের চারদিকে চলছে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে রাজ্যে। যা তাদের চোখে পড়েনি কিংবা অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র সেজে দেখেও না দেখার অভিনয় করছে। বিজেপি সরকার হচ্ছে জনকল্যাণকামী সরকার। সমাজের অন্তিম মানুষের কাছে তার মৌলিক অধিকারগুলো পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। সিপিএম আমলে কৃষকদের রেগার শ্রমিকে পরিণত করা হয়েছিল। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের অন্নদাতা বলে আখ্যায়িত করেছেন। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। পূর্বতন সরকারের আমলে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টাল ধান ক্রয় করা হতো ১০০০ টাকায়। আর এখন বিজিবি সরকারের আমলে কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কুইন্টাল ধান ক্রয় করা হয় দুই হাজার 20 টাকা দরে। রাজ্যের উৎপাদিত আনারস বহি: বিশ্বে রপ্তানি করা হচ্ছে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করার জন্য কৃষাণ রেল তৈরি হয়েছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে বিজেপি সরকারের আমলেই। তিনি আক্ষেপ করে বলেন রাজ্যের নদীগুলো দিয়ে অনেক রক্ত বয়ে গেছে। দিনের পর দিন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য কখনো টিএনভি, কখনো এটিটিএফ আবার কখনো এনএলএফটির নামে যুবকদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে এই মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দরা। বর্তমানে রাজ্যে শান্তির পরিবেশ কায়েম হয়েছে। এই শান্তি এবং উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ সিপিএম, কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর সহ্য হচ্ছে না। বিগত সরকারের আমলে রাজ্য কোন গণতন্ত্র ছিল না । মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর মানুষ তার স্বাধীনতা, ও গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছে। এখন বিরোধীরা এই সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার এবং বিভিন্ন চক্রান্তে লিপ্ত হচ্ছে। বিরোধীরা এই সরকারের বিরুদ্ধে যতই চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র করুক না কেন দেহে এক বিন্দু রক্ত থাকতে হায়নার দল সিপিএমকে এ রাজ্যে এক ইঞ্চি জায়গা ছাড়া হবে না বলে হুঁশিয়ারী দেন তিনি। এর জন্য কৃষাণ মোর্চার প্রতিটি কার্যকর্তা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি। সবশেষে তিনি বলেন এটা পরিতাপের বিষয় কংগ্রেস এবং সিপিএম এর মধ্যে মিতালী তৈরি হয়েছে। বিগত দিনে যে হার্মাদ বাহিনীর হাতে কংগ্রেস পরিবারের মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠিত হয়েছে, কংগ্রেস ভাই বোনেরা খুন হয়েছে সেই দলের সাথে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। সেটা কি মেনে নেবে প্রকৃত কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা। সেটা কখনোই সম্ভব নয়। আর এর প্রতিফলন ঘটবে ব্যালট বক্সে। মানুষ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে এর যোগ্য জবাব দেবে ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সমাবেশে খোয়াই মন্ডল সভাপতি সুব্রত মজুমদার তার ভাষনে বলেন রাজন্য আমলের পর ৭০ বছর রাজ্য শাসন করেছে কংগ্রেস ও সিপিএম দল। ৭০ বছরে রাজ্যবাসীর জন্য বরাদ্দাকৃত উন্নয়ন মূলক কাজের অর্থ লুটেপুটে খেয়েছে তারা। তাদের শাসনকালে ৬৮ শতাংশ রাজ্যবাসী দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। এখন জনকল্যাণে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে রাজ্যে। বর্তমান সরকারের সময়কালে ৫০ হাজার পিজি রেশন কার্ড প্রদান করা হয়েছে, সামাজিক ভাতা ২ হাজার টাকা করা হয়েছে, কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় করা হচ্ছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে রাজ্যে। তিনি বলেন চার বছর ৮ মাস বিরোধীদের দেখা পাওয়া যায়নি। করোনা পরিস্থিতির কালেও তাদের কোথাও খুঁজে পাইনি রাজ্যবাসী। এখন সামনে নির্বাচন তাই প্রতিদিন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। সাধারণ মানুষ তাদের আবেদনকে মন থেকে প্রত্যাখ্যান করছে। বাম আমলে আধা কেলেঙ্কারি, ঢেউটিন কেলেঙ্কারির কথা রাজ্যবাসী ভুলে যায়নি। কংগ্রেস ,সিপিএম বলছে রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। একটা সময় এই সিপিএম কংগ্রেস দলকে বাটপার, বিশ্বাসঘাতক, বিষধর সাপ, মাথা থেতলে দিতে হবে এই বলে গালিগালাজ করতো। সেই কংগ্রেস আজ সিপিএমের সাথে হাত মিলিয়েছে, জোট গড়েছে বিজেপিকে যেনতেন প্রকারে ক্ষমতা চ্যুত করতে হবে। তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ লুটেপুটে খাওয়া। এটা রাজ্যবাসী ভালো করেই উপলব্ধি করতে পারছে। রাজ্যবাসীকে বোকা বানিয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএমর মধ্যে যে মিতালী ভাব তৈরি হয়েছে তা ক্ষণিকের জন্য। আগামী ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৫৯ টি আসনের পাশাপাশি খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্র পদ্মফুল ময় হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
122