জিরানিয়া সরকারি খাদ্য গুদামে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আজ রাজ্য সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর ও খাদ্য দপ্তর যৌথভাবে কৃষকদের সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় কর্মসূচি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল লাল নাথ বলেন এখন পর্যন্ত রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মাননিধি ২ লাখ ৭৬ হাজার কৃষক পেয়েছেন। ১৮ কিস্তিতে তারা ৭০ কোটি টাকা পেয়েছেন। কৃষকদের আয় বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তার জন্য সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়, কৃষি ঋণ , কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান , কৃষি বাজার, ভর্তুকিতে সার বীজ প্রদান ইত্যাদি বিষয়ে রাজ্য সরকার ও কৃষকদের আত্মনির্ভর করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৭২ হাজার কৃষককে কৃষি ঋণ প্রদান করা হয়েছে। তাতে কৃষকরা পেয়েছেন ২ হাজার ২৫ কোটি টাকা। তিনি বলেন সরকার সব সময় কৃষক বান্ধব সরকার। প্রধানমন্ত্রীর চাইছেন কৃষক, মহিলা ,যুবক যুবতী ও গরী ব মানুষকে আত্মনির্ভর করে তোলার মধ্য দিয়ে এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলা। অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন রাজ্য সরকার জনমুখী সরকার। রাজ্যকে দেশের অন্য রাজ্যের সঙ্গে তুলনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই কেন্দ্র সরকার সব রকম সহযোগিতা করছেন। আগামী দিনে ও খাদ্য দপ্তর ও কৃষক কৃষি কল্যাণ দপ্তর মিলিতভাবে রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে যাবে। অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন জিরানিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপারসন সহ খাদ্য ও কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা। ধান ক্রয় ছাড়াও অনুষ্ঠানে কৃষকদের মধ্যে কৃষি যন্ত্রাংশ বিতরণ করা হয়
ত্রিপুরা
গভীর রাতে ইন্দো-বাংলা সীমান্ত থেকে আটক দুই বাংলাদেশি নাগরিক। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে !
চুরাইবাড়ি প্রতিনিধি ১৮ ডিসেম্বর:– বর্তমান বাংলাদেশে অস্থির পরিবেশের মধ্যেও অবাধে অবৈধ বাংলাদেশীর আনাগোনা চলছে ভারতে। একমাত্র ত্রিপুরা রাজ্যকে করিডোর বানিয়ে বাংলাদেশ থেকে অবাধে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রবেশ করছে এই বাংলাদেশী নাগরিকেরা। তবে বাংলাদেশে নথিপত্র ছাড়াই মোটা অর্থের বিনিময়ে কিছু দালাল চক্র একাজে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ওই সব দালাল চক্র মুখে ভারত প্রেম দেখালেও আদৌ অর্থের কাছে দেশের নিরাপত্তাকে বিক্রি করতে দ্বিধাবোধ করছে না। এতে প্রায় পুলিশ প্রশাসনকে অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে এই চোরা চক্রটি। এদিকে, গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার রাত দুইটা নাগাদ ইন্দো-বাংলা সীমান্তের কদমতলা থানা এলাকার ইচাই টুলগাঁও এলাকায় পুলিশের পেট্রোলিংয়ের টহলধারীর সময় অপরিচিত এক বৃদ্ধা ও নাবালিকাকে ঘুরাঘুরি করতে দেখে, কর্তব্য পুলিশ তাদের আটক করে। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে তারা ওই এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে কোন এক দালাল চক্রের মাধ্যমে। তখন এএসআই ডি,এম চাকমা তাদের আটক করে কদমতলা থানায় নিয়ে যান এবং জোর জিজ্ঞাসাবাদের পর বাংলাদেশী নাগরিক নিশ্চিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ৮১/২৪ নম্বরে ও ১৯২০ সালের ভারতীয় পাসপোর্ট আইনের ০৩ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।ধৃত মহিলার নাম মোছা রুবেয়া (৬০) ও অপরজন পনেরো বছরের এক নাবালিকা। দুজনের বাড়ি বাংলাদেশের নিরা থানাধীন সিন্ডারপারা গ্ৰামে। বুধবার কদমতলা পুলিশ ধৃতদের ধর্মনগর জেলা আদালতে সোপর্দ করেছে বলে জানা যায়। এদিকে এই ঘনঘন বাংলাদেশী অবৈধ নাগরিক ভারতে প্রবেশ করায় জেলা প্রশাসন অনেকটা হুমকির মুখে রয়েছে। বারবার প্রশ্ন উঠছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর উপর ! এত কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কি করে বাংলাদেশী নাগরিক দালাল চক্রের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করছে ? তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশের অস্থির পরিবেশের কারণে সীমান্তো অনেকটা আঁটোসাঁটো রয়েছে, কিন্তু এতেও বাংলাদেশী প্রবেশ কমছে না। বরং চলছে অবাধ বিচরণ। এখন দেখার জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহার হাত ধরে উদয়পুরে সাতটি প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন ফলক উন্মোচন ও বোতাম টিপে
উদয়পুর প্রতিনিধি : রবিবার সকাল ১১:৩০ টায় উদয়পুর রমেশ ইংরেজি বিদ্যালয়ের ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহার হাত ধরে উদয়পুরে সাতটি প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন ফলক উন্মোচন ও বোতাম টিপে । এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন, অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় , ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায় , বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, রামপদ জমাতিয়া,জীতেন্দ্র মজুমদার ও জিলা সভাধিপতি দেবল দেবরায়, পৌর চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে গোমতীর জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার সহ প্রমূখ । উদ্বোধনী মঞ্চে স্বাগত ভাষণ রাখেন গোমতী জেলাশাসক তড়িৎ কান্তি চাকমা। জেলাশাসক বলেন , গোমতী জেলার উদয়পুরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল উদয়পুরে যেন উন্নত মানের সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা জন্য ভালো মানের দালান বাড়ি নির্মাণ করা হয়, যা ইতিমধ্যেই মধ্যেই শুভ সূচনা হয়েছে । গোমতী জেলা শাসকের অফিসে নতুন দালান বাড়ি , নতুন টাউন হল , নেতাজি সুভাষ মহাবিদ্যালয়ের নতুন ভবন , রমেশ স্কুলে নতুন অডিটোরিয়াম এবং সিন্থেটিক ময়দান , রাজার বাগ মোটর স্ট্যান্ড , মহারানী গামারিয়া স্কুলের নতুন বিল্ডিং । সবমিলিয়ে সাতটি প্রকল্পের শুভ সূচনা মুখ্যমন্ত্রী হাত ধরা হয়েছে। উদয়পুর কে আরো সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হবে আগামী দিন। পরে অর্থমন্ত্রী ও ক্রীড়া মন্ত্রী ভাষণ রাখতে গিয়ে বলেন , আগামী দিনে এই উদয়পুর শহরে যেভাবে উন্নয়ন হবে তাতে করে গোমতী জেলা আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে । যা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রী হাত ধরেই এই জেলাকে উন্নয়নের শিকড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । পরে মুখ্যমন্ত্রী ভাষণ রাখতে গিয়ে বলেন , ত্রিপুরার অর্থ বাজেটের ২৭ হাজার কোটি টাকা থেকে সাত হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে উন্নয়নের জন্য। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রতিটা সময় বার্তা দিয়েছেন এই রাজ্যকে কিভাবে উন্নয়ন করা যায় । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , গত ৩৫ বছরে জিন্দাবাদ স্লোগানে এই রাজ্য পিছিয়েছে অনেকটা । তার সাথে অন্যায় স্তব্ধ হয়েছে গোটা রাজ্যজুরে । ত্রিপুরায় ডাবল ইঞ্জিনের সরকার থাকার কারণে বর্তমানে চলছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এক হীরাযোগ । তাই দ্রুত গতিতে চলছে উন্নয়নের কাজ। মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে সকল খেলোয়াড়রা উদয়পুরে মন খারাপ করেছে রমেশ ময়দানকে সিন্থেটিক ময়দান করার ফলে তাদের ক্রিকেট খেলায় অসুবিধা হবে এর ফলে তাদের মন খারাপ এমনটা খবর মুখ্যমন্ত্রী কাছে এসে পৌঁছেছে। তিনি এই মঞ্চ থেকে ঘোষণা দেন ক্রিকেটারদের যাতে কোন ধরনের সমস্যা না হয় তার জন্য নতুন একটি ময়দান খোঁজা হবে আগামী দিনে সেই মাঠে যেন ক্রিকেট খেলাধুলা করতে পারে খেলোয়াড়রা । মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন , উদয়পুর শহরকে আগামী দিনে স্যাটেলাইট শহরে যুক্ত করা হবে। এছাড়া যুক্ত হবে আগরতলা সহ ধর্মনগর শহর। মোট তিনটি শহরকে স্যাটেলাইট শহর হিসেবে চিহ্নিত করা হবে । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , প্রতিটি জেলায় বিধায়কদেরকে সাথে নিয়ে তৈরী হবে বিধানসভা ভিত্তিক একটি পর্যবেক্ষক দল। তার কারণ প্রতিটি জেলার বিধানসভা গুলিতে কাজের উন্নয়নের গতি সেখানে খতিয়ে দেখা হবে এবং বিধানসভা বাজেটের আগে যে সকল কাজ গুলি অসমাপ্ত রয়ে গিয়েছে সে সকল কাজগুলো যাতে বাজেটের মধ্যে নিয়ে আসা হয় তার ওপর নজর রাখবে সে পর্যবেক্ষক দলটি। ইতি মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এদিন মুখ্যমন্ত্রী নাম না উল্লেখ করে বাম এবং কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রী বলেন আগে থেকে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য ছক কষা হয়ে থাকে । পরে ত্রিপুরার নাম বদনাম করার জন্য এই রাজ্যের শান্তি নেই বলে শ্লোগান উঠতে শুরু করে । সমস্ত কিছু বিষয়ের উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , রবিবার উদয়পুরে যে সাতটি প্রকল্পর শুভ সূচনা করা হয়েছে আগামী দিনে এই জেলাকে আরো উন্নত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এদিনের গোটা অনুষ্ঠানে উদয়পুর শহর লাগুয়া বিভিন্ন বিদ্যালয় , কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে বড় মাথাই সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল সারা জাগানো।
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-ত্রিপুরা আর্ট সোসাইটির উদ্যোগে ঊনকোটি জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে বাৎসরিক অঙ্কনমেধা কৃতিদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।আজ কৈলাসহরে এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা। অনুষ্ঠানে শিল্পকলায় অবদানের জন্য ৮৫ জন অঙ্কন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সংবর্ধিত করা হয় এবং ঊনকোটি জেলার সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনদের সম্মান জানানো হয়।অনুষ্ঠানের সূচনা হয় প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে।এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়, চণ্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সম্পা পাল দাস, ত্রিপুরা আর্ট সোসাইটির রাজ্য সভাপতি কপিল কান্তি দাস ও কৈলাসহর শাখা সভাপতি নির্মল সিনহা,কেন্দ্রীয় সম্পাদক অপাংশু দেব,আইনজীবি সুনির্মল দেব সহ আরও অনেকেই।স্বাগত বক্তব্যে কপিল দাস বলেন,সংগঠনের কাজের বিস্তৃতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে শিশুদের অঙ্কন শিক্ষা এবং ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠন।সংগঠনটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ২২ বছর ধরে শিশু ও শিক্ষকদের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজীব সরকার অঙ্কন প্রতিযোগিতার নামে চলমান অনৈতিক ব্যবসার বিরুদ্ধে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।তিনি বলেন, শিশুদের প্রতিভা বিকাশের নামে কেউ যেন প্রতারণা করতে না পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংবর্ধনা ও পুরস্কারের মাধ্যমে শিক্ষকদের অবদানকে সম্মান জানানো হয় যা শিশুদের মধ্যে শিল্পকলার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সহায়ক হবে।
এই উদ্যোগ ত্রিপুরা আর্ট সোসাইটির সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি উদাহরণ। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিল্পী অভিভাবক এবং শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রয়াসের যে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে তা আগামী প্রজন্মের জন্য নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণাদায়ক।এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসো মা বিষয়ের উপর আগমনীকে সামনে রেখে বসো আঁকো প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পুরস্কার সহ অন্যান্য পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে ত্রিপুরা আর্ট সোসাইটির প্রাক্তন সদস্যা মুক্তিরানী চৌধুরী সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করে ৫ হাজার টাকার অর্থরাশি তুলে দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্তদের হাতে।
স্বামী বিবেকানন্দ কলেজে ভোক্তা অধিকার ও নাগরিক সুরক্ষা বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি মোহনপুর :- মোহনপুরের স্বামী বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ে ভোক্তা অধিকার ও নাগরিক সুরক্ষার বিষয়ে এক দিবসীয় রাজ্যস্তরীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হলো শুক্রবার। এই সেমিনারের শিক্ষার্থীদের ভোক্তা আইন সম্পর্কে অবগত করার পাশাপাশি অন্যান্যদের সচেতন করতে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা নিতে দেওয়া হয়েছে পরামর্শ।
মোহনপুরের স্বামী বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের কনজিউমার ক্লাব এবং বাণিজ্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ভোক্তা অধিকার ও নাগরিক সুরক্ষার বিষয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে গ্রাহকদের সার্বিকভাবে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিলেন বিশেষজ্ঞরা। এদিন প্রদীপ প্রজ্বলননের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি সূচনা করলেন বিচারপতি অরিন্দম লোধ। এদিনের অনুষ্ঠানে মোহনপুরের মহকুমা শাসক সুভাষ দত্ত বলেন প্রতিদিন ভোক্তারা কোন না কোন ভাবে ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রতারিত হচ্ছেন। অথচ আমরা প্রত্যেকটি নাগরিকই একজন ক্রেতা। সমস্ত ব্যবসায়ী যখন তার প্রয়োজনে সামগ্রিক কিনতে যান তখন তিনি ক্রেতা। অথচ এই ক্রেতাই যখন আবার ব্যবসায়ী হন তখন ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা তিনি ভুলে যান। এই চিন্তা ভাবনার পরিবর্তন করার আহ্বান করেছেন মহকুমা শাসক।
অন্যদিকে বিচারপতি অরিন্দম লোধ বলেন ভারতবর্ষের সমস্ত আইন দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এক সময় দেশের আইন প্রণেতারা অনুভব করলেন দেশের গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা করার ক্ষেত্রে একটি আইন দরকার। দেশে আনা হল ভোক্তা অধিকার আইন।তখন থেকেই দেশের সমস্ত রাজ্যের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষা করতে এই আইন বাস্তবায়নে কাজ চলছে। তবে এই আইনের সাফল্য আনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সচেতনতা এবং প্রচার। এই দৃষ্টিভঙ্গিতেও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রয়োজন সমস্ত শিক্ষার্থী এবং অন্যান্যরা সমস্ত অংশে মানুষের কাছে ভোক্তা অধিকার সম্পর্কিত বিষয় পৌঁছে দেওয়ার। এইদিন প্রশ্নোত্তর পর্বে শ্রী লোধ বলেন কোন গ্রাহক কোন দোকানে গিয়ে প্রতারিত হলে তার ভিডিও রেকর্ড করে, ছবি তুলে অথবা কোন কিছু ছাড়াই কোনজিমার ফোরামে অভিযোগ করতে পারেন। তার জন্য কোন পয়সা লাগে না। অন্যদিকে অনলাইন শপিং করার ক্ষেত্রেও গ্রাহকরা কোনভাবে প্রতারিত হলে সে বিষয়ে অভিযোগ করার বিধান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যের মানুষকে নিজেদের অধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে আরো বেশি সচেতন এবং দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য আহ্বান করেছেন বিচারক অরিন্দম লোধ। এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল ডক্টর হারাধন সাহা সহ অন্যান্যরা।
প্রতিনিধি, বিশালগড় , ১৩ ডিসেম্বর।। সিপাহীজলা জেলা পুলিশ প্রশাসন এবং বিশালগড় প্রেস ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে মেগা প্রয়াস অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সকাল ১১ টায় বিশালগড় টাউন বালিকা বিদ্যালয় মাঠ থেকে রোড ট্রাফিক ও সাইবার সচেতনতা বিষয়ে এক র্যালি বের হয়। জেলা পুলিশ সুপার বি জে রেড্ডি, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রাজীব সূত্রধর সহ বিশালগড় প্রেস ক্লাবের কর্মকর্তারা র্যালির সূচনা করেন। বিশালগড় শহরের কয়েকটি স্কুলের ছাত্র ছাত্রী সচেতনামূলক প্লে কার্ড হাতে নিয়ে র্যালিতে অংশ নেন। জেলার সকল পুলিশ অফিসার, মহকুমা পুলিশ এবং থানার ওসি সহ পুলিশ কর্মীরা র্যালিতে অংশ নেন। র্যালি চলাকালীন হেলমেট বিহীন বাইক আরোহীদের হাতে নতুন হেলমেট তুলে দেন পুলিশ সুপার বি জে রেড্ডি সহ আধিকারিক এবং সাংবাদিকরা। এছাড়া হেলমেট পরিধান করেছেন এমন বাইক আরোহীদের গোলাপ ফুল দিয়ে ধন্যবাদ জানানো হয়। পথচারী বাইক গাড়ি চালকদের মধ্যে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। র্যালিটি বিশালগড় বাজার এলাকা পরিক্রমা করে অফিসটিলা নতুন টাউন হলে গিয়ে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। রোড ট্রাফিক ও সাইবার সচেতনতা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা শাসক ড: সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, জেলা পুলিশ সুপার বি জে রেড্ডি, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রাজিব সূত্রধর, আইপিএস প্রফেশনাল ভেঙ্কটরাম, বিশালগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি ভবতোষ ঘোষ, সম্পাদক তাজুল ইসলাম, জেলা শিক্ষা আধিকারিক মলয় ভৌমিক। বিশালগড় মহিলা থানার ওসি শিউলি দাস স্বাগত ভাষণ রাখেন। জেলাশাসক ড: সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল বলেন ছাত্র-ছাত্রীদের যেকোনো নেশা থেকে দূরে থাকতে হবে। আজকের ছাত্রছাত্রীরা এদেশের ভবিষ্যৎ। এই ছাত্র যুব সমাজকে সঠিক দিশায় এগিয়ে নিতে পুলিশ প্রশাসন সহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বাল্যবিবাহ এবং বয়সন্ধিকালীন গর্ভবতী হওয়ার বিষয়ে তথ্যনিষ্ঠ বক্তব্য রাখেন। পড়াশোনা খেলাধুলা শরীর চর্চায় নিজেদের যুক্ত থাকার পরামর্শ দেন। জেলা পুলিশ সুপার বি জে রেড্ডি রোড ট্রাফিক বিষয়ে ভিডিও শো পরিবেশন করেন । আইপিএস ভেঙ্কটরাম সাইবার অপরাধ বিষয়ে ভিডিও শো পরিবেশনের মাধ্যমে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করেন। বিশালগড় প্রেসক্লাবের সভাপতি ভবতোষ ঘোষ আজকের আলোচনায় বিষয়বস্তুগুলো ব্যক্তি জীবনে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন । আলোচনা শেষে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সবশেষে বিকালে সিপাহীজলা অভয়ারণ্যের জু মাঠে সাংবাদিক এবং পুলিশের মধ্যে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিনিধি, বিশালগড় , ১৩ ডিসেম্বর।। ত্রিপুরা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন বিশালগড় মহকুমা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় সপ্তম বিজয়া সম্মেলন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাতে বিশালগড় নতুন টাউন হলে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সিপাহীজলা জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুশান্ত দেব। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশালগড় পৌর পরিষদের চেয়ারম্যান অঞ্জন পুরকায়স্থ, জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রাজ্য সভাপতি বিজয় পাল, বিশালগড় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ভবতোষ ঘোষ, সম্পাদক তাজুল ইসলাম ,মহকুমা পুলিশ প্রধান দুলাল দত্ত । সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মহকুমা সভাপতি সমীর ভৌমিক। স্থানীয় শ্রীভূমি ব্যান্ডের শিল্পীরা উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন । স্বাগত ভাষণ রাখেন সংগঠনের মহকুমা সম্পাদক খোকন ঘোষ। অতিথিরা বার্ষিক মুখপত্র “সংবাদদাতা”র আবরণ উন্মোচন করেন । কচিকাঁচাদের পরিবেশিত মনোজ্ঞ নৃত্যানুষ্ঠান সকলের নজর কাড়ে । বিজয়া সম্মেলনে সেরার বিচারে বিশালগড় মহকুমা এবং জম্পুইজলা মহকুমার মোট ১৩টি দুর্গাপূজা উদ্যোক্তা কমিটির হাতে স্মারক সম্মাননা এবং ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। সেরা ক্লাবগুলো হলো প্রগতি সংঘ, রাউৎখলা যুব সংস্থা, বিশ্বপ্রিয় ক্লাব, বিবেকানন্দ ক্লাব, নেতাজী সংঘ, অফিসটিলা যুব সংঘ, একতা সংঘ, যুব সমাজ, ইয়ং ব্লাড ক্লাব, টিএসআর সপ্তম বাহিনী, জনকল্যাণ সংঘ, মধ্য লক্ষীবিল মহিলা সমিতি, গাবর্দী বদ্ধচন্দ্র পাড়া জনজাতি মহিলা পরিচালিত পূজা কমিটি। অ্যাসোসিয়েশনের বিশালগড় মহাকুমা কমিটির পক্ষ থেকে মহকুমায় কর্মরত সাংবাদিকদের স্মারক শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়। জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত এই আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিধায়ক সুশান্ত দেব বলেন সবাই মিলে একটা সুন্দর সমাজ গড়তে হবে। বিশালগড় সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সারাবছর নানা কার্যক্রম হাতে নেয়। সমাজকে সঠিক দিশা দেখানোর কাজ করছে সাংবাদিকরা। সকল সেরা পূজা আয়োজকদের অভিনন্দন জানান তিনি।
প্রতিনিধি মোহনপুর:- রাজ্যের জনজাতিদের যোগ্য সম্মান এবং অধিকার প্রদানে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার গামছা কোবরায় মোহনপুর মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাস্থ্য, প্রশাসনিক শিবির এবং জনজাতি গৌরব দিবস পালনের উদ্বোধনী মঞ্চে বললেন জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে জনযাত্রীদের নিয়মিত সহায়তার প্রদানের আহবান করলেন মন্ত্রী।
লেফুঙ্গা ব্লকের অন্তর্গত গামছাকোবরা এলাকায় এলাকার মানুষকে প্রশাসনিক এবং স্বাস্থ্যপরিসেবা পৌঁছে দিতে মহকুমা প্রশাসনের উদ্যোগে এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহকুমা শাসক সুভাষ দত্ত। এদিনের এই কর্মসূচিতে এলাকার মানুষকে স্বাস্থ্যপরিসেবা প্রদানের পাশাপাশি রেশন কার্ড, পিআরটিসি, আধার পরিষেবা, রেশন কার্ড সহ বিভিন্ন নথিপত্র প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রশাসনিক কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন জনজাতি এলাকাতে বহু মানুষের বৈধ নথিপত্রের অভাব রয়েছে। বছর পর বছর এই মানুষগুলো স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও তাদের হাতে নেই নথিপত্র। প্রশাসনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের নথিপত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুবিধা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন মন্ত্রী। অন্যদিকে রাজ্য সরকার জনজাতি অংশের মানুষদের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। এদিন গোটা শিবির ঘুরে দেখার পাশাপাশি সুবিধাভোগীদের হাতে বিভিন্ন নথিপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে দিলেন মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা এবং ইএম রুনিয়াল দেববর্মা সহ অন্যান্যরা।
প্রতিনিধি, উদয়পুর :- অবশেষে মহারাণী প্রাথমিক হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযানের অধীন পরিষেবা শুরু হল। গর্ভবতী মা ও গর্ভস্থ শিশুদের নিরাপদ ও সুরক্ষার জন্য প্রতি মাসের নবম ও ২৩তম কাজের দিনে গুনগত মানের প্রাক প্রসব করার জন্য এই অভিযান চলে।
২০১৫ সাল থেকে এই অভিযান চালু হলেও মহারাণী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এই পরিষেবার যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ডাঃ তমাল দেববর্মা মহারানী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসকের নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিষেবা দেওয়ার উদ্যোগে গ্রহণ করেন। ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসকের বার্তা পেয়ে আশা’রাও উতসাহিত হন এবং গর্ভবতী মায়েদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেন।
মহারানী প্রাথমিক হাসপাতাল থেকে জানা যায়, আজ ৫০ জন গর্ভবতী মা এক দিনেই প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযানের অধীন প্রাক প্রসব পরীক্ষা করাতে আসেন। এই প্রথম এত বড় সংখ্যায় গর্ভবতী মায়েরা এই পরিষেবা নিতে আসেন। মহারানীর এলাকার বিভিন্ন উপজাতি এলাকা থেকে মায়েরা আসেন। বিশেষ করে লাভ স্টোরি এডিসি গ্রামের দুক্সিন, মালসাধুপাড়া, কৃষ্ণ ভক্ত পাড়া, আজলাবাড়ী, নাজিলা, কোয়াইমুড়া ভিলেজ, ব্রহ্মছড়া, গামারিয়ার ওয়ারেং বাড়ী এসব এলাকা থেকে মহিলারা পরিষেবা নিতে আসেন।
ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ তমাল দেববর্মা জানান, ৮ জন গর্ভবতী মহিলাদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা চিহ্নিত হয়েছে। হাসপাতালের উদ্যোগে ৩ জন মায়ের আলট্রা সনগ্রাফির ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযানের অধীনে বেশী সংখ্যক মায়েরা পরিষেবা নিতে আসায় হাসপাতালের স্টাফরাও আপ্লুত হন। এবং তারা জানান হাসপাতালের পক্ষ থেকে মায়েদেরকে ফল ও খাওয়ার বিতরণ করা হয়। পরিষেবা পেয়ে গর্ভবতী মায়েরা উৎসাহিত বোধ করেন। হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানান এবার থেকে এই পরিষেবা গুনগত মানের উপর জোড় দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে অন্য আরও একজন চিকিৎসক ডাঃ শুভ্রজিত বনিক গর্ভবতী মায়েদেরকে চেক আপ করেন।