নিয়োগ-মামলায় কড়া পদক্ষেপ থেকে অব্যাহতি পেতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছেন, সে দিনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে চাপ বাড়াল তৃণমূল কংগ্রেস। শাসক দলের তরফে সোমবার প্রশ্ন তোলা হয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্বেও সারদা ও নারদ মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা শুভেন্দুকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করছে না? শুভেন্দুর আবার পাল্টা প্রশ্ন, তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চাইলে তৃণমূল আদালতে যাচ্ছে না কেন?
দুর্নীতির অভিযোগে অভিষেককে নিশানা করছেন শুভেন্দু-সহ বিরোধীরা। নিয়োগ-মামলায় কুন্তল ঘোষের চিঠির সূত্রে শনিবার সিবিআই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সেই সূত্রেই সারদা ও নারদ মামলার পুরনো অভিযোগে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়াচ্ছে তৃণমূল। কাঁথি পুরসভার একটি প্রকল্পের জন্য সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের দেওয়া ৫০ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক ড্রাফটের নথি দেখিয়ে এ দিন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, ‘‘এই লেনদেন হয়েছিল কি না, শুভেন্দু বলুন। যদি এই তথ্য ঠিক হয়, তা হলে তাঁর অন্য অভিযোগ নিয়েও তদন্ত দরকার। আর যদি মিথ্যা হয়, তা হলে সবটাই মিথ্যা।’’ সেই সময়ে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী।
একই ভাবে এ দিন নারদ প্রসঙ্গ তুলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করেছেন তৃণমূলের আর এক নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া এই নেতার অভিযোগ, ওই তদন্ত থেকে ছাড় পাওয়ার শর্তে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন শুভেন্দু। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম টেনে জয়প্রকাশের দাবি, ‘‘ক্ষমতার লোভ আর জেল এড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের ইচ্ছায়।’’ তিনি দাবি করেছেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে একটি বৈঠকে গিয়ে শুভেন্দু জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়গুলির কী হবে? বিজেপির তৎকালীন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় সে দিন শাহের নাম করে তাঁকে আশ্বস্ত করেন। শুভেন্দু ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে থাকাকালীন সাংবাদিক বৈঠকে নারদের যে ভিডিয়ো তিনি প্রকাশ করেন, তাতে শুভেন্দুকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।