নিজস্ব প্রতিনিধি।। উদয়পুর, ১১ জানুয়ারি-
কর্মসংস্থানের দাবিতে, আইনের শাসন ফিরিয়ে আনতে এবং নেশার বিরুদ্ধে যুব পদযাত্রা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করলো গোটা বাগমা এলাকায়। যুবদের হার না মানা লড়াই। ছয় কিলোমিটার পথ জুড়ে পদযাত্রায় অসংখ্য সাধারন মানুষের তরফে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা। তিন ইস্যুতে ডিওয়াইএফআই রাজপথে থেকেই আগামীর লড়াইকে তীব্র ও চেতনাদৃপ্ত করার দৃপ্ত ঘোষনা। স্বৈরাচারী, যুব বিরোধী, জনগণের বিরোধী নীতি গ্রহণকারী বিজেপি জোট সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান জানালো ডিওয়াইএফআই।শনিবার বাগমা থেকে খুপিলং পর্যন্ত বিস্তির্ন এলাকার জনগণ দেখলো যুবকদের দৃপ্ত পদচারনা। ভয়, ভীতি, হুমকিকে মাড়িয়ে দৃঢ় সংকল্প নিয়ে এগিয়ে গেছে পদযাত্রা। সাদা, লাল পতাকা হাতে যুবকরা ঘোষনা করলো রাজপথে লড়াই করেই হকের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার। পদযাত্রা যত এগিয়ে গেছে, বেড়েছে মিছিলের লাইন। রাস্তায় রাস্তায় উদ্বীপ্ত যুব পদযাত্রা দেখে অনেকেই এতে অংশ নিয়েছেন। বাগমা ব্যাঙ্ক চৌমুহনী থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রা বাগমা বাজার, বারভাইয়া, নলঢেপা হয়ে খুপিলং বাজারে গিয়ে শেষ হয়। দীর্ঘ ছয় কিলোমিটারের পদযাত্রায় কখনো মূল সড়ক, কখনো সব্জি ক্ষেতের আল বেয়ে ঘন জনবসতিপূর্ন এলাকা ধরে এগিয়ে গেছে। আর পদযাত্রাকে দেখতে ও উষ্ণ অভিবাদন জানাতে রাস্তায় রাস্তায় সাধারন মহিলা-পুরুষদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া।
ডিওয়াইএফআই বাগমা অঞ্চল কমিটির উদ্যোগে এদিনের পদযাত্রা যখন খুপিলং বাজারে গিয়ে পৌঁছে তখন হাট বাজারে সাধারন মানুষের থিক থিক ভিড়। এই পদযাত্রা সমাপ্তি হয় খুপিলং বাজারে সভার মধ্য দিয়ে। এখানে যুবনেতা বিক্রম ঘোষের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক নবারুন দেব, উদয়পুর বিভাগীয় সম্পাদক শুভ চক্রবর্ত্তী। দীর্ঘ পদযাত্রায় এই নেতৃত্বরা ছাড়াও অংশ নিয়েছেন প্রাক্তন যুবনেতা দিলীপ দত্ত, নিখিল দাস, প্রদীপ সাহা, আশিষ ঘোষ, যুবনেতা ফারুক আহমেদ, পূর্নিমা সরকার, মির হোসেন চৌধুরী, নকুল মজুমদার, সোমরাজ চৌধুরী বাদল মালাকার, প্রীতম শীল, সুরজিৎ মজুমদার প্রমুখরা।
এখানে আলোচনা করতে গিয়ে নবারুন দেব বলেন, জরুরী যুবজীবন ও জনগণের তিন দফা দাবিতে রাজ্যের ধর্মনগর থেকে সাব্রুমের রাজপথ থেকে গলিপথের লড়াইয়ে সামিল যুবক-সহ সাধারন মানুষ। রাজ্যের জনগণ গত সাত বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারছেন প্রতারক ও লুটেরা সরকার চলছে রাজ্যে। বিজেপি ত্রিপুরাকে ধ্বসের কিনারায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। যুবকের কাজ নেই, সরকারী দপ্তরে হাজার হাজার শূন্যপদ কিন্তু নিয়োগ নেই। পুলিশ থেকে চিকিৎসক, সাধারন জনগণ থেকে শিক্ষক কারোর জীবনের নিরাপত্তা নেই স্বৈরাচারদের শাসনে। ছাত্রী, যুবতী থেকে নারী সুরক্ষিত নেই কেউ। গোটা রাজ্যকে বানানো হয়েছে নেশার ডিপো। রাজ্য প্রশাসনকে না জানিয়ে ইডি এখন রেড মারছে, যাদের বাড়িতে করা হচ্ছে শাসকের তল্পিবাহক মাতব্বর তারা। এরকম রাজ্য হোক ত্রিপুরা- এটাই কি চেয়েছিলেন?
তিনি বলেন, ডিওয়াইএফআই-টিওয়াইএফ যে দাবি নিয়ে রাজপথে এতে যারা বিজেপি করেন তাদের ঘরের সন্তানদের কর্মসংস্থানের কথাও রয়েছে। বিরোধী যারা করছে তাদের বাড়ি ভাঙ্গা, দৈহিক আক্রমন, দোকান ভাঙ্গার কাজ করছেন তাদের ঘরে কি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে? হয় নি। আপনাদের ব্যবহার করে লুট বানিজ্য চালাচ্ছে মুষ্টিমেয় বিজেপি নেতারা। রেগায় কাজ নেই, সরকারী চাকরি নেই, জীবনের নিরাপত্তা নেই, পুলিশকে খুন করা ঘাতকদের গ্রেপ্তার নেই, ধর্ষনকারীর বিচার নেই- চূড়ান্ত অরাজকতা রাজ্য জুড়ে। এভাবে চলতে দেবেন কি? বিজেপির শাসনে আপনার সন্তান নেশাগ্রস্থ হচ্ছে, এলাকা এলাকা নেশার ডিপো তৈরী হচ্ছে- চুপ করে বসে থাকবেন? লড়াই নামুন। রাজপথ দখল করুন। যুবদের লড়াইকে সাহস জোগান। স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরীর ক্ষেত্রে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান রাখেন নবারুন দেব।