দশ বছর আগে ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনের সময় মনমোহন সিংহ সরকারের অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম জানিয়েছিলেন, তিনি লোকসভা ভোটে লড়তে চান না। তথ্য-সম্প্রচারমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারি আবার ভোটে লড়ার অনিচ্ছা জানিয়ে শারীরিক অসুস্থতা বলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে আবার কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল কেরল থেকে ভোটে লড়তে চাননি।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এবার রাহুল গান্ধী চাইছেন, দলের সমস্ত তথাকথিত ‘হেভিওয়েট’ নেতারা লোকসভা ভোটের ময়দানে নামুক। কংগ্রেস সদ্য তিনটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে হেরেছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সেই তিন রাজ্যের মধ্যে রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেসের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও ভূপেশ বঘেলকে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন রাহুল। তিনি চাইছেন, মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা কমল নাথ থেকে রাজ্যের দিগ্বিজয় সিংহের মতো প্রবীণ নেতারাও ভোটে লড়ুন। এমনকি, তাঁর ঘনিষ্ঠ কে সি বেণুগোপাল, জয়রাম রমেশের মতো সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতাদেরও ভোটে লড়াতে চান তিনি। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ে যে সব গুরুত্বপূর্ণ বিধায়করা ভোটে লড়ে হেরে গিয়েছেন, তাঁদেরও প্রার্থী করতে চাইছে কংগ্রেস। আবার রাজস্থানে সচিন পাইলট নিজের আসনে জিতলেও কংগ্রেস হাই কমান্ড চাইছে, তিনিও ভোটে লড়ুন। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা, তাঁর ছেলে দীপেন্দ্র হুডা, রণদীপ সিংহ সুরজেয়ালা ও কুমারী শৈলজা—চারজন প্রধান নেতানেত্রীকেই ভোটে প্রার্থী করাতে চাইছে কংগ্রেস।কংগ্রেসের অনেক নেতা একে ‘বিজেপির মডেল’-এর পথে হাঁটা হিসেবে দেখছেন। কারণ, বিজেপি সম্প্রতি তিন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি দিয়ে নামতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদদের প্রার্থী করেছিল। এখন রাজ্যসভা থেকে সংসদে নির্বাচিত হয়ে এসে যাঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন, বিজেপি তাঁদের অনেককে লোকসভা ভোটে প্রার্থী করতে চাইছে। এতে তাঁদের নিজেদের নাম ও পদের ওজনে বাড়তি ভোট মেলার সুবিধা রয়েছে। কংগ্রেসও সেই পথে হাঁটতে চাইছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, অন্তত ২০০ আসনে কংগ্রেসের ‘হেভিওয়েট’ নেতাদের প্রার্থী করা হবে। তাঁদের নামের জোরে এমনিতেই জেতার সম্ভাবনা বাড়বে। দলের কর্মীদের মনোবল বাড়বে। বাস্তবের জমিতে কার কত ক্ষমতা, তারও পরীক্ষা হবে।