প্রতিনিধি, উদয়পুর :-
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে নয় বছর পূর্তি উপলক্ষে পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের সমস্ত বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় রবিবার বিকেল তিনটায় উদয়পুর রাজর্ষি কলা কেন্দ্রে । প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে বুদ্ধিজীবী সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা । এছাড়া উপস্থিত ছিলেন , ভারত সরকারের ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। বুদ্ধিজীবী সম্মেলনে স্বাগত ভাষণ রাখেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় থেকে শুরু করে ত্রিপুরা বিজেপি রাজ্য সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী । পরে উদ্বোধক তথা মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা ভাষন রাখতে গিয়ে বলেন , ১৯৭৫ সালের ২৫ শে জুন ভারতবর্ষে জারি হয়েছিল জরুরি অবস্থা । যা গোটা ভারতবর্ষকে লজ্জিত করেছে সে সময় গোটা বিশ্বের কাছে । সেই জরুরি অবস্থার প্রভাব এবং অভাব এই রাজ্য পড়েছিল তৎকালীন সময় । তৎকালীন সময়ের মুখ্যমন্ত্রী সুখুময় সেনগুপ্ত । উনার সাথে যারা ছিল সে সময় তারাও আতঙ্কে আতঙ্কিত ছিল । এই জরুরি অবস্থা চলাকালীন সময় বহু নেতা-নেত্রীকে জেলে পাঠানো হয়েছিল । তৎকালীন সময় সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ পর্যন্ত করা হয়েছিল । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , ১৯৮৮ সালে রাজ্যে জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । সরকারে আসার পর থেকে গোটা রাজ্যে পাঁচ বছরে গোন্ডা রাজ তৈরি করেছিল তৎকালীন সরকার । নাম না করে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র লুঠ হয়েছে ,সেই সাথে কেরলে একই কায়দায় গণতন্ত্র সেখানো লুট হয়েছে । ১৯৭৫ সালের পর থেকে বিভিন্নভাবে গণতন্ত্রকে কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে রাজ্যের বুকে । ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে রাজ্য জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেই গণতন্ত্রের কন্ঠরোধ থেকে মুক্তি দেয় রাজ্যবাসীকে । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , ত্রিপুরায় কৃষি ক্ষেত্রে পিএম কৃষাণ যোজনায় ২ লক্ষ ৪৭ হাজারেরও বেশি কৃষককে ৬০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে । তাতে ব্যয় হয়েছে ৫৫৩ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা । প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় প্রায় ১০ দশমিক ০৮ লক্ষ কৃষককে বীমার আওতায় আনা হয়েছে । রাজ্যের বাজেট থেকে প্রিমিয়াম দেওয়া হচ্ছে তাতে খরচ হচ্ছে কুড়ি কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে । এছাড়া কৃষান ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তিন লক্ষ ৭ হাজার কৃষককে কৃষি ঋণ দেওয়া হয়েছে । যার আর্থিক খরচ ১হাজার৫৩০ কোটি টাকা । অপরদিকে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এসেছে আমূল পরিবর্তন । ২০১৮ সাল থেকে রাজ্যের বুকে ১৩ লক্ষ আয়ুষ্মান কার্ড বিলি করা হয়েছে । এরমধ্যে ২ লক্ষ সেটেল করা হয়েছে । তাতে ১৩০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে । এছাড়া এদিন মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় নিয়েও তুলে ধরেন বুদ্ধিজীবীদের সামনে । রবিবারে বিকেলে পশ্চিম ত্রিপুরা লোকসভা আসনের বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক থেকে শুরু করে নেতৃত্বরা এই বুদ্ধিজীবী সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন । উদয়পুর রাজর্ষি কলা কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল আঁটো সাঁটো।