100
- আগরতলা: ভাবগম্ভীর এবং নান্দনিক একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গতকাল ১৮ মে অনুষ্ঠিত হলো বঙ্গীয় সঙ্গীত পরিষদের ত্রিপুরা রাজ্যভিত্তিক বার্ষিক সমাবর্তন ২০২৫। রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের দুই নম্বর হলে সকাল থেকেই শুরু হয় সমাবর্তনের প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান। এতে বিশেষ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. দেবব্রত দেবরায় এবং বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রীতা চক্রবর্তী। দুজন বক্তাই শিশুদের মানসিক এবং শারীরিক বিকাশের ক্ষেত্রে সংগীতের অসামান্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। স্বাগত সম্ভাষণ রাখেন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্যামল গাঙ্গুলি। এই পর্বে খোয়াই, গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা, ঊনকোটি, ধলাই এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলার পঞ্চম ও সপ্তম বর্ষে উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের অভিজ্ঞান পত্র তুলে দেওয়া হয়।
সমাবর্তনের দ্বিতীয় পর্বটি ছিল অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক। এই পর্বের উদ্বোধন করেন ভবনস ত্রিপুরা বিদ্যামন্দিরের প্রধান অধ্যক্ষ স্বপ্না সোম। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন
লংতরাই গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর রতন দেবনাথ এবং বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী তপতী ভৌমিক মজুমদার। বঙ্গীয় সঙ্গীত পরিষদের রীতি অনুযায়ী এই পর্বে রাজ্যের বিশিষ্ট উদ্যোগপতি এবং লংতরাই গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর রতন দেবনাথ কে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। অভূতপূর্ব আয়োজনের মধ্য দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “এসো আমার ঘরে এসো” গান এবং নৃত্য সহযোগে তাঁকে মঞ্চে বরণ করে নেওয়া হয় বিভিন্ন উপাচারে। পরবর্তী সময়ে ত্রিপুরার বাণিজ্যক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানকে স্মরণ করা হয় মানপত্র এবং বিশেষ ক্রেস্ট প্রদানের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও শিল্প সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় রতন দেবনাথের অবদানের কথা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বার বার উল্লেখ করা হয়। এখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রতন দেবনাথ আয়োজকদের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করে বলেন, একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হলে শিশুদেরকে ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতির আঙিনায় যুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, এখানে এসে এ’কথা তিনি আরো গভীরভাবে উপলব্ধি করছেন। তিনি বলেন, পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। আজকের এই অর্জনকে তিনি তাঁর সতীর্থ এবং ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্বপ্না সোম এবং তপতী ভৌমিক মজুমদার শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের স্ব-স্ব অভিজ্ঞতার কথা ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গীয় সঙ্গীত পরিষদের বিশিষ্ট কেন্দ্রাধ্যক্ষ অনুপম চৌধুরী এবং বন্দনা নন্দীকে বিশেষ সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। এই পর্বে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী নির্মল দেব। তিনিও তাঁর বক্তব্যে সংগীতের ক্ষেত্রে ড্রপ আউটের সমস্যাকে অভিভাবকদের নতুন করে ভেবে দেখতে বলেন। এই পর্বে পশ্চিম ত্রিপুরার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অভিজ্ঞান পত্র বিতরণ করা হয়। দুটি পর্ব মিলিয়ে প্রায় ৮০০ ছাত্রছাত্রী অভিজ্ঞান পত্র গ্রহণ করেন। এই উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নতুন কুঁড়ি এবং ভবন্স কলা কেন্দ্রের শিল্পীরা অংশগ্রহণ করে।