Home » জম্পুইজলায় ২৩০ জওয়ানের পাসিং আউট

জম্পুইজলায় ২৩০ জওয়ানের পাসিং আউট

by admin

প্রতিনিধি, বিশালগড় , ৯ নভেম্বর।। ভারতের অখণ্ডতা এবং সংবিধান রক্ষায় প্রয়োজনে প্রাণাহুতি দেওয়ার শপথ নিলেন নবনিযুক্ত ২৩০ জন টিএসআর জওয়ান। বৃহস্পতিবার জম্পুইজলায় সপ্তম বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জওয়ানদের পাসিং আউট কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। ৬৬ সপ্তাহ ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন নবনিযুক্ত জওয়ানরা। বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠার পর দু’টি নতুন ব্যাটালিয়ন করে টিএসআর জওয়ান নিয়োগ করা হয়। এমনকি মহিলা টিএসআর নিয়োগ করে নজির সৃষ্টি করে সরকার। মোট চারটি সেন্টারে নবনিযুক্ত ১৪১২ জন জওয়ান প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এর মধ্যে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৩৩১ জন। এরমধ্যে মহিলা জওয়ান রয়েছে ১৩৭ জন। কচুছড়া সি টি আই সেন্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৩৭৫ জন । দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ানের হেডকোয়ার্টারে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ৪৭৬ জন। জম্পুইজলার সপ্তম বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ২৩০ জন। প্রশিক্ষণ শেষে পাসিং আউট পর্ব শুরু হয়েছে। আগরতলা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে পাসিং আউট অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় পাসিং আউট অনুষ্ঠানটি হয় জম্পুইজলার সপ্তম বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে। বৃহস্পতিবার জওয়ানদের দিক্ষান্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ডাইরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ আইপিএস অমিতাভ রঞ্জন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সপ্তম বাহিনীর কমান্ডেন্ট অনির্বাণ ধর চৌধুরী। নব নিযুক্ত জওয়ানদের সুসজ্জিত প্যারেড এবং বিভিন্ন শারীরিক কলাকৌশল সকল দর্শক এবং অতিথিদের নজর কাড়ে। পাসিং আউট অনুষ্ঠান উপভোগ করতে জওয়ানদের পরিবার পরিজনদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। জম্পুইজলায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ২৩০ জন জওয়ানের মধ্যে স্নাতকোত্তর ২ জন। স্নাতক ১২২ জন। প্রকৌশলী ১ জন। দ্বাদশ উর্তীণ ৮৩ জন। মাধ্যমিক পাশ ১৯ জন এবং অষ্টম পাশ ৩ জন রয়েছে। ২০২২ সালের ৫ মে থেকে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ পর্ব সম্পন্ন করার দায়িত্বে ছিলেন বাহিনীর কমান্ডেন্ট অনির্বান ধর চৌধুরী। ডেপুটি কমান্ডেন্ট রাজদীপ দেব, এসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট হেমন্ত দেববর্মা, মেজর মনোজ পান্ডে, ট্রেনিং বি এইস এম বিপুল দেব প্রমুখ। প্রধান অতিথি ডিজিপি অমিতাভ রঞ্জন বলেন টিএসআর বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। সারা দেশে বিভিন্ন নির্বাচন এবং ইভেন্টে নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলিয়ে সুনাম অর্জন করেছে। দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মহোদয় আমাদের টিএসআর বাহিনীর প্রশংসা করেছেন। আপনারা আজ কঠিন দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। টিএসআর বাহিনীর সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার দায়িত্ব আপনাদের পালন করতে হবে। দেশের অখন্ডতা রক্ষার কর্তব্য পালন করতে গিয়ে আত্মবলিদানের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। রাজ্যে জঙ্গি মোকাবিলায় এই টিএসআর জওয়ানদের বড়ো ভূমিকা ছিল। এই সপ্তম বাহিনীর একুশ জন জওয়ান এক সঙ্গে আত্মবলিদান দিতে হয়েছে। জঙ্গি মোকাবিলা ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সদা নিয়োজিত টিএসআর জওয়ানরা। এছাড়া রক্তদান, স্বাস্থ্য শিবির, স্বচ্ছতা অভিযান সহ নানা মানব সেবামূলক কাজ করেছে টিএসআর। ডিজিপি অমিতাভ রঞ্জন বলেন অপরাধ মুক্ত, নেশা মুক্ত রাজ্য গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ত্রিপুরা পুলিশ। তিনি বলেন রাজ্যে অপরাধের মাত্রা হ্রাস পেয়েছে। নবনিযুক্ত ১৪১২ জন জওয়ান ১৪ এবং ১৫ নম্বর ব্যাটালিয়নে নিযুক্ত থাকবেন। দুই বাহিনীর জন্য জমি নির্ধারণ হয়েছে। শীঘ্রই নিজস্ব ঠিকানা পাবে দুটি বাহিনী। দুটি বাহিনীতে একটি করে মহিলা প্লাটুন থাকবে। পাসিং আউট শেষে নবনিযুক্ত জওয়ানদের আনন্দ উচ্ছ্বাস ছিল যথেষ্ট। জওয়ানদের বাড়ি থেকে আসা প্রিয়জনরা আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ প্রশিক্ষণ শেষে প্রিয় মা বাবা পরিজনদের কাছে পেয়ে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে জওয়ানরা। সরকারের স্বচ্ছ নিয়োগ নীতির কারণে অনেক গরিব পরিবারের ছেলেরা টিএসআর বাহিনীতে যোগ দেওয়ার সুযোগ পায়। এরমধ্যে ধলাই জেলার নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা এমন জনজাতি পরিবারের ছেলে রয়েছে। আদরের সন্তানের পাসিং আউট দেখতে তারা-ও হাজির হয় অনুষ্ঠানে।

You may also like

Leave a Comment