৬ই সেপ্টেম্বর গুচ্ছ কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঝটিকা সফরে কৈলাসহরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসার ডা: মানিক সাহা।প্রথমেই চন্ডিপুর বিধানসভার অন্তর্গত মনুভ্যালী চা বাগান এলাকায় মনুভ্যালী ভৈরব থলি কমিউনিটি হলের ফিতে কেটে এবং ফলক উন্মোচন করে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ও পূজা দেন।আজ মুখ্যমন্ত্রীর সফর সঙ্গী ছিলেন টিআইডিসি চেয়ারম্যান টিংকু রায়।সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি চলে যান চন্ডিপুর এলাকায় অবস্থিত কৃষক জ্ঞান কেন্দ্রে।সেখানে নবনির্মিত কৃষক জ্ঞান কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি চলে যান চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ছনতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে।প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সেখানে তিনি সুশাসন মেলার উদ্বোধন করেন।সুশাসন মেলায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টিআইবিসি চেয়ারম্যান টিংকু রায়,জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস,সহকারি সভাধিপতি শ্যামল দাস, বিশিষ্ট সমাজসেবী পবিত্র দেবনাথ,জেলাশাসক ডা: বিশাল কুমার ও পুলিশ সুপার কান্তা জাঙ্গীর সহ অন্যান্যরা। সুশাসন মেলায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলাশাসক ডা: বিশাল কুমার।টি আই ডি সি চেয়ারম্যান টিংকু রায় তার বক্তব্যে বলেন এই সরকারের আমলে অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে।পূর্বে আগরতলা রওনা দিলে মানুষ যেতে পারবেন কিনা নিশ্চিত ছিল না।যদিও পৌঁছতেন সাত থেকে আট ঘন্টা লেগে যেত।বর্তমানে দু থেকে আড়াই ঘণ্টায় আগরতলা যাওয়া যায়। চন্ডিপুর বিধানসভা প্রায় ১০টির ও বেশি চা বাগান রয়েছে।যেখানে অনেক শ্রমিকদের বসবাস।বর্তমানে অনেক শ্রমিক পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে আগে যা কেউ ভাবতেই পারেনি।আগে বাইরের লোকরা চা শ্রমিকদের নেতৃত্ব দিত।এখন চা শ্রমিকরাই নেতৃত্ব দিচ্ছে। সুশাসন মেলায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডা : মানিক সাহা বলেন এখন প্রশাসনের কাছে মানুষকে যেতে হয় না, প্রশাসন মানুষের দরজায় এসে কড়া নাড়ছে।এই সুশাসন মেলার মাধ্যমে একই ছাদের তলায় ত্রিপুরা সরকারের প্রায় কুড়িটি সরকারি দপ্তরের ষ্টল রয়েছে। এই মেলা শুরু হয়েছিল ১৭ ই সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন কে উপলক্ষ করে। তিন মাস মেলা চলার কথা ছিল।কিন্তু আমরা তা ২৫শে ডিসেম্বর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনে শেষ করব।তিনি বলেন এই সুশাসন মেলার মাধ্যমে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ জনগন সরাসরি সরকারের সুবিধা নিতে পারছেন।কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।আজকের এই মেলার মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি টাকার ও বেশী যন্ত্রপাতি এবং আর্থিক সাহায্য তুলে দেয়া হয়েছে।যার ফলে সরাসরি রাজ্যের জনগণরা লাভবান হচ্ছেন।এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জেলা শিল্প দপ্তরের পক্ষ থেকে স্বাবলম্বন লোন প্রকল্পে শম্ভু লাল দেবের হাতে ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় এবং অসিত ঘোষকে তিন লক্ষ আশি হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছে।পাশাপাশি জেলা শিল্প দপ্তরের তরফে একজন সুবিধাভোগীকে টমটম তুলে দেওয়া হয় এবং দুজন সুবিধাভোগীকে সেংশন লেটার তুলে দেওয়া হয়।কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের পক্ষ থেকে শিবশক্তি স্ব সহায়ক দলকে ৯ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার কৃষি সরঞ্জাম ও পাঁচ জন পাট্টা প্রাপককে কৃষি সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়।সুশাসন মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের হাতে এক কোটি টাকার বেশি সামগ্রি ও লোন তুলে দেওয়া হয়েছে। ছনতৈল এর অনুষ্টান শেষে সেখান থেকে চিড়াকুটিতে নবনির্মিত শ্রীল ভূবনেশ্বর সাধু ঠাকুর সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্রের উদ্বোধন করে সার্কিট হাউসে চলে যান মধ্যাহ্নভোজন করতে। মধ্যাহ্নভোজন সেরে মুখ্যমন্ত্রী চলে আসেন আইটিআই প্রাঙ্গণে।সেখানে তিনি লোন, জব ও স্কিল মেলার উদ্বোধন করেন।আইটিআই প্রাঙ্গণে মেলাতে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রানী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী ভগবান দাস,বিধায়ক মবস্বর আলী, বিধায়ক সুধাংশু দাস সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।লোন জব ও স্কিল মেলায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন কেন্দ্র ও রাজ্য আমাদের সরকার চায় ছেলেমেয়েদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা। তার জন্য সরকারের তরফ থেকে ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। সরকার কোন পার্টির না সরকার সবার।তিনি বলেন প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে তিনি মানুষের মধ্যে উপচে পড়া ভিড় দেখছেন।এই সরকার সবকা সাথ সবকা বিকাশের মন্ত্রে কাজ করছে।তিনি মেলার সার্থকতা কামনা করে অনুষ্ঠান মঞ্চ ত্যাগ করেন। বিকাল চারটার পর তিনি হেলিকপ্টারে আগরতলার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।আজ মুখ্যমন্ত্রীর ঝটিকা সফরে খুশী প্রকাশ করেছেন মহকুমার নাগরিকরা।
116
previous post
গোলাঘাটিতে বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠক
next post