Home » যুব পদযাত্রা ও সভায় আন্দোলিত উদয়পুর মহকুমার মির্জা।

যুব পদযাত্রা ও সভায় আন্দোলিত উদয়পুর মহকুমার মির্জা।

by admin

নিজস্ব প্রতিনিধি।।উদয়পুর, ৫ জানুয়ারি-
যুব পদযাত্রা ও সভায় আন্দোলিত উদয়পুর মহকুমার মির্জা। হকের দাবিতে যুবকরা হুমকি, হুলিয়া, ভয় উপেক্ষা করে সামিল মিছিলে। আওয়াজ তুললো কাজের, কর্মসংস্থানের। শপথ নিলো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের। নেশার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করে বিজেপি’র পরিকল্পিত ছকের বিরুদ্ধে সব অংশের জনগণকে সামিল হওয়ার আহ্বান জানালো যুবকরা।

ডিওয়াইএফআই-টিওয়াইএফ মির্জা ও পূর্ব মির্জা অঞ্চল কমিটির উদ্যোগে রবিবার মির্জাতে অনুষ্ঠিত হয় যুব পদযাত্রা ও মিছিল। সাদা, সবুজ পতাকা হাতে যুবকদের গর্জমান পদযাত্রা ব্যাপক সাড়া ফলে গোটা মির্জাতে। যুবদের পদযাত্রায় সামিল হয়েছেন অন্যান্য গণতান্ত্রিক অংশের জনগণও। সিপিআই(এম) মির্জা অফিসের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে গোটা বাজার পরিক্রমা করে মির্জা আরপিএস, শনিতলা হয়ে মির্জা স্কুলের পাশ দিয়ে মোটর ষ্ট্যান্ড ঘুরে পুনরায় বাজার হয়ে পার্টি অফিসের সামনে এসে মিলিত হয় সভায়। শ্লোগান সোচ্চার পদযাত্রা যে পথ দিয়ে গিয়েছে তাতে সাধারন মানুষ থেকে বাড়ি-ঘরের লোকজন ছুটে এসে প্রত্যক্ষ করেছে। আর বহুদিন পর যুবকদের উচ্ছ্বাসপূর্ন পদযাত্রা দেখে উদ্বেলিত হয়েছেন তারা।

গোটা রাজ্যেই এই সময়ে ডিওয়াইএফআই-টিওয়াইএফ কর্মসংস্থানের দাবিতে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে এবং নেশার বিরুদ্ধে ৩ দফা দাবিতে কর্মসূচীর আহ্বান জানিয়েছিল। তারই অঙ্গ হিসাবে উদয়পুর মহকুমার নানান অঞ্চলে এই কর্মসূচী সংগঠিত হচ্ছে। রবিবার শীতের বিকেলে মির্জাতে যুব পদযাত্রা উত্তাপ ছড়ায়। পদযাত্রা শেষে সভায় যুব নেতৃত্বরা কর্মসংস্থান, আইনশৃঙ্খলা ও নেশা তিন ইস্যুতে তীর্যক ভাষায় শাসক বিজেপি’র বিরুদ্ধে আক্রমন শানায়। তাতে বিজেপি’র ব্যাপক গায়ে লাগে এবং যুবদের পদযাত্রা-সভার পর মির্জা বাজারে বিজেপি তীব্র উস্কানি ও কুরুচিপূর্ন শ্লোগান দিয়ে মিছিল সংগঠিত করে। আর এতে বাজারে থাকা সাধারন ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়।

এদিন পদযাত্রা শেষে সিপিআই(এম) মির্জা অঞ্চল অফিসের সামনে আয়োজিত পথসভায় যুবনেতা পার্থ লোধ ও অমল দেববর্মার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক, উদয়পুর বিভাগীয় সভাপতি ফারুক আহমেদ, টিওয়াইএফ উদয়পুর বিভাগীয় সম্পাদক রাজেন্দ্র জমাতিয়া। এই নেতৃত্বরা এছাড়াও পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন প্রাক্তন যুবনেতা নিখিল দাস, বিজয় চক্রবর্ত্তী, বিপ্লব দাস, গৌতম আইচ, ডিওয়াইএফআই বিভাগীয় সম্পাদক শুভ চক্রবর্ত্তী প্রমুখরা।

ডিওয়াইএফআই রাজ্য সভাপতি পলাশ ভৌমিক আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, বিজেপি দেশ, রাজ্যের জনগণের সাথে প্রতারনা করে চলছে। ত্রিপুরার জনগণ গত সাত বছরে বিজেপি’র কাছ থেকে কি পেয়েছেন? সন্ত্রাস, লুটতরাজ, আক্রমন ছাড়া আর কিছু জুটে নি। অথচ এরাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বছরে পঞ্চাশ হাজার যুবকের চাকরি, ঘরে ঘরে রোজগারের ব্যবস্থা করবে। অভিজ্ঞতা হচ্ছে হাজার হাজার শূন্যপদ অবলুপ্ত করা হচ্ছে, চাকরির দরজা প্রতিদিন সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। যুবকরা যাতে কাজের দাবিতে একত্রিত না হতে পারে তারজন্য পরিকল্পিত পন্থায় যুবকদের নেশায় ডুবিয়ে রাখা হচ্ছে, ধর্মীয় উন্মাদনায় বেঁধে রাখার চেষ্টা করছে। গোটা রাজ্যকে নেশার ডিপোতে পরিনত করছে এই বিজেপি সরকার। এর প্রতিবাদ না হলে যিনি বিজেপি করছেন তার ঘরের সন্তানদেরও কর্মসংস্থান হবে না, নেশায় বুঁদ হওয়ার রাস্তা প্রশ্বস্থ হবে। তাই সব অংশের জনগণকে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, বিজেপির শাসনে ত্রিপুরার আইনশৃঙ্খলা তলানিতে ঠেকেছে। বেওয়ারিশ লাশ প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে, নারীর সম্ভ্রম নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষক খুন হচ্ছে, কর্মক্ষেত্রে ডাক্তার থেকে কর্মচারী আক্রান্ত হচ্ছেন। পুলিশকে নেশা কারবারিরা পিষে মারছে। কথা বলার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আতীতে কি এরকম ছিল ত্রিপুরা? ত্রিপুরাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি? ডিওয়াইএফআই-টিওয়াইএফ যে দাবিতে আন্দোলন করছে এটা শুধু তাদের দাবি না, সমাজের সব অংশের দাবি। তাই দলমত নির্বিশেষে বিজেপির স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামুন। রাস্তায় নেমে হকের দাবি সোচ্চার হোন। সমাজকে সুস্থ রাখতে কথা বলুন। যারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করেনা তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান রাখেন পলাশ ভৌমিক।

You may also like

Leave a Comment