প্রতিনিধি কৈলাসহর:-দীর্ঘ ২৫ বছর রাজ্যে বাম সরকার থাকলেও কৈলাসহর বিমানবন্দর চালুর ক্ষেত্রে কখনোই আন্তরিক ছিল না।যখন ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন দপ্তর কৈলাসহর বিমানবন্দরকে অপরিত্যক্ত ঘোষণা করতে চলছিল সেই সময় কৈলাসহরের একাংশ বুদ্ধিজীবী নাগরিকরা কৈলাসহর এয়ারপোর্টকে পুনরায় চালু করতে আন্দোলনে নামে।কৈলাসহর উন্নয়ন মঞ্চ সেসময় ব্যাপক আন্দোলন সংগঠিত করে। কিন্তু ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তনের পর বিমানবন্দর কে পুনরায় চালু করার জন্য তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বারংবার কেন্দ্রীয় বিমানবন্দরের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। পাশাপাশি বর্তমানেও রাজ্যসভার সংসদ হিসাবে বিপ্লব কুমার দেব সংসদ ভবনে বারবার কৈলাসহর বিমানবন্দর চালুর কথা উত্থাপন করেন।গত তিনমাস পূর্বে কৈলাসহর বিজেপি জেলা কার্যালয়ে জেলার সমস্ত মন্ত্রী বিধায়ক থেকে শুরু করে অভিভক্ত উত্তর জেলার সমস্ত মন্ত্রী বিধায়ক এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ সহ সাংসদ রেবতী কুমার ত্রিপুরা সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে পুনরায় কৈলাশহর এয়ারপোর্ট চালুর কথা উল্লেখ করেন।কিছুদিন পূর্বেও ত্রিপুরা সরকারের পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে এবং শহরের বিধায়ক বিরজিৎ সিনহাকে সাথে নিয়ে এয়ারপোর্ট পরিদর্শন করেন।আজ সকাল সাড়ে এগারটায় কৈলাসহর এয়ারপোর্ট পরিদর্শনে আসেন এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন অপারেশন এক্সপার্ট ও টেকনিক্যাল টিমের আধিকারিকরা।জানা গেছে দুটি ফেজে এয়ারপোর্টের কাজ হবে।প্রথম পর্যায়ে যে রানওয়েটি রয়েছে তার সংস্কার করে ছোট বিমান চালানোর ব্যবস্থা করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বড় বিমান নামার ক্ষেত্রে বিমানবন্দর সম্প্রসারণ করে বড় ধরনের এয়ারপোর্ট তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।বর্তমান এয়ারপোর্টটি সংস্কার করে পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে আরো কয়েকবার বিমানবন্দর পরিদর্শন করতে এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা কৈলাসহরে আসবেন বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার ফলে এয়ারপোর্টটির অবস্থা বর্তমানে করুন।অনেক জায়গায় রানওয়ের উপর ঘাস উঠে রানওয়ের অস্তিত্ব মুছে গেছে।আজকের প্রতিনিধি দলে দিল্লি থেকে তিনজন,গুয়াহাটি থেকে তিনজন ও আগরতলা থেকে পাঁচজন প্রতিনিধি মিলে মোট ১১ জন প্রতিনিধি ছিলেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন নর্থইস্ট রিজিওনের জয়েন্ট জেনারেল ম্যানেজার দেবদুলাল চৌধুরী,জয়েন্ট জেনারেল ম্যানেজার সিভিল তাপস কুমার দে,এজিএম সেভেন সিভিল হেডকোয়ার্টার মনোজ ভরদোয়াজ,সিনিয়র ম্যানেজার সিএনএস দিব্যজ্যোতি পাল,চিফ সিকিউরিটি অফিসার ও ল্যান্ড ইনচার্জ আগরতলা এস কে রয় প্রমূখ।জানা যায় স্পাইস জেট ও অ্যালায়েন্স কৈলাসহর থেকে বিমান পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছে।তবে স্পাইস জেটের ছোট বিমান না থাকার ফলে জানা গেছে অ্যালায়েন্সের ছোট বিমান এই রুটে তাদের বিমান পরিষেবা চালু করতে পারে।আজ এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার আধিকারিকরা প্রথমে এয়ারপোর্টে এসে মহকুমা শাসক অফিসের কর্মী ও তহশীলদারদের নিয়ে এয়ারপোর্টের জায়গাটি পরিমাপ করেন।প্রায় তিন ঘণ্টা এয়ারপোর্টে থেকে তারা সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখেন। মধ্যাহ্ন ভোজন শেষে বিকাল সাড়ে তিনটা নাগাদ তারা জেলা শাসকের সাথে জেলাশাসকের অফিসে বৈঠকে বসেন।উল্লেখ্য ২০১৮ সালে রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে কৈলাসহর এয়ারপোর্ট চালু করার জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।এছাড়াও জানা গেছে বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ভারত সরকারের অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী ও দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে কৈলাসহর এয়ারপোর্ট চালুর জন্য যোগাযোগ রেখে চলেছেন।কৈলাসহর বিমান পরিষেবা পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে আন্তরিক রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা।তিনিও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কৈলাসহরে এসে বিমানবন্দর পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সদর্থক ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।আগামী দিনে তার সফল বাস্তবায়নের প্রতীক্ষায় রয়েছে গোটা কৈলাসহর। তবে কৈলাসহর বিমানবন্দর পুনরায় চালু হলে অনেকটাই লাভবান হবে ভারতের বিমান পরিষেবা দপ্তর।কেননা বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলা ও আসামের করিমগঞ্জ জেলা সহ অবিভক্ত ত্রিপুরার বিভিন্ন মহকুমা থেকে যাত্রীরা প্রতিদিন যাওয়া আসা করবে কৈলাসহর বিমান পরিষেবা চালু হলে।
120