
শেষ লগ্নে প্রচার আরও তেজি করেছে বিজেপি। শনিবার জোড়া সমাবেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা। দু’টি সভাতেই কার্যত জনঢল পরিলক্ষিত হয়। জাতি জনজাতি হিন্দু মুসলমান সকল অংশের মানুষ ভেঙে পড়ে জনসভা স্থলে। এদিন প্রথম নির্বাচনী সমাবেশ হয় ধনপুরের কাঁঠালিয়ায়। বিজেপি প্রার্থী বিন্দু দেবনাথের সমর্থনে আয়োজিত জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, কৃষি মন্ত্রী রতনলাল নাথ, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, মৎস্য মন্ত্রী সুধাংশু দাস প্রমুখ। মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা কংগ্রেস এবং সিপিএমকে এক হাত নেন। তিনি বলেন বিরোধী দলের কেউ বিধানসভায় গেলে কোন লাভ হবে না। কারণ ওরা বিধানসভায় উন্নয়ন নিয়ে কথা বলবেনা। গত অধিবেশনে সবাই দেখেছে তাদের কান্ড। কেউ নিজের এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেনি। বরং টেবিল উপরে ফেলে দিতে চেয়েছে। টেবিলের ওপর হেঁটেছে। উপনির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী বিধানসভায় গেলে তা-ই করবে। তারজন্য বলছি শুধু উন্নয়ন করতে হলে বিজেপিকে ভোট দিতে হবে। বিজেপি উন্নয়ন ছাড়া কিছু বুঝে-না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে কাজ করছে সরকার। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার। সিপিএম পঁচিশ বছর মানুষের সমস্যা জিইয়ে রেখে, বিভাজনের রাজনীতি করে, সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে শাসন করেছে। আর বিজেপি চায় দ্রুত মানুষের সমস্যা সমাধান। করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে কেউ ছিল না। একমাত্র বিজেপির কার্যকর্তারা মানুষের পাশে ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিনামূল্যে রেশন ভ্যাকসিন চিকিৎসা দিয়ে আমাদের বাঁচিয়েছে। গত পাঁচ বছরের কাজের নিরিখে ভোট দিয়ে আপনারা দ্বিতীয় বারের মতো বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। রাজ্যে অবাধ শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কোন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নেই। রাজনৈতিক খুন নেই। অথচ বামফ্রন্টের জামানায় শুধু সোনামুড়া মহকুমায় ১৬ জন খুন হয়েছে। মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না। আজ মানুষ মুক্তির স্বাদ পেয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কারণে। বামের অপশাসন থেকে রক্ষা করেছে প্রধানমন্ত্রী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর দ্বিতীয় জনসভা অনুষ্ঠিত হয় বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে। বক্সনগর বাজারে আয়োজিত জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির প্রদেশ প্রভারী মহেশ শর্মা, প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, বিধায়ক কিশোর বর্মন, মুখ্যসচেতক কল্যানী রায়, জেলা সভাপতি দেবব্রত ভট্টাচার্য, মন্ডল সভাপতি সুভাষ সাহা প্রমূখ। প্রার্থী তফাজ্জল হোসেনকে নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস ছিল লক্ষনীয়। যুব থেকে নারী সকল বয়সের মানুষের বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস পরিলক্ষিত হয়। মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা বলেন আজকের জনজোয়ার আর মানুষের উচ্ছ্বাস স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে বক্সনগরের মানুষ কী চাইছে। গত দু’টি নির্বাচনে ভোটারদের বিভ্রান্ত করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট আদায় করেছিলো। কিন্তু ধীরে ধীরে সবাই বুঝতে পারছে কারা উন্নয়ন করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কোন নির্দিষ্ঠ ধর্মের জন্য কাজ করেনি। সকল দেশবাসীর কল্যাণে কাজ করছে। জোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন শুনেছি ওরা মিটিং করে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। আর এখন বলছে সিপিএম আমাদের প্রচারে ডাকে না। সিপিএম যে কী জিনিস ওরা এখনো বুঝতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বক্সনগরে নতুন ইতিহাস তৈরির সুযোগ পেয়েছেন। তা হাতছাড়া করবেন না। বক্সনগরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তফাজ্জল হোসেনকে জয়ী করার আহবান জানান তিনি। এদিনের জনসভায় ২৯৩ জন সিপিএম সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন।