Home » অসহায় বাবা কাজল দাসের কাতর আবেদন — “মুখ্যমন্ত্রীই পারেন আমার মেয়েকে বাঁচাতে”

অসহায় বাবা কাজল দাসের কাতর আবেদন — “মুখ্যমন্ত্রীই পারেন আমার মেয়েকে বাঁচাতে”

by admin

প্রতিনিধি,উদয়পুর :- গোমতী জেলার অমরপুর মহকুমার পূর্ব মৈলাক গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাসিন্দা কাজল দাসের মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দাস জন্মসূত্রে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। এই মারাত্মক জেনেটিক রোগের কারণে প্রিয়াঙ্কার শরীরে প্রতি মাসে অন্তত দু’বার করে রক্ত দিতে হয়। যদিও গোমতী জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক থেকে কখনো কখনো বিনামূল্যে রক্ত মেলে, তবুও বহু সময় রক্তের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয় পরিবারটিকে। তখন রক্তদাতার খোঁজে কাজল দাসকে ছুটতে হয় রাজ্যের নানা প্রান্তে। রক্তদাতা পেলেও তাকে নিয়ে আসতে গাড়িভাড়া, খাওয়া-দাওয়া এবং অন্যান্য খরচ বহন করতে হয় এই দরিদ্র পরিবারকে।
দিনমজুর পেশায় নিয়োজিত কাজল দাস গত আট বছর ধরে মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রাণপণ লড়াই করে চলেছেন। তিনি জানান, তার পরিবারে ছয়জন সদস্য—তার বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং তিনি নিজে। বাবা স্ট্রোকের রোগী, মা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। একমাত্র উপার্জনকারী হিসেবে তার সামান্য আয়ে পরিবারের চিকিৎসা ও দৈনন্দিন খরচ চালানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
তিনি কাঁদতে কাঁদতে জানান, আজ থেকে ১৪ বছর আগে তার বড় মেয়েও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র এক বছর বয়সে মারা যায়। সেই সময়ও চোখের সামনে মেয়েকে হারাতে হয়েছে চিকিৎসার অভাবে। এখন ছোট মেয়ের জীবনও একই বিপদের মুখে পড়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রিয়াঙ্কার দ্রুত একটি অপারেশন দরকার, যা আগরতলার জিবি হাসপাতালে করা সম্ভব হলেও খরচ প্রায় লক্ষাধিক টাকা। এই বিপুল খরচ জোগাড় করা তার পক্ষে সম্পূর্ণ অসম্ভব।
কাজল জানান, তার পরিবার ইতিমধ্যেই মেয়ের চিকিৎসার জন্য ঘরের কাঠ, ফার্নিচার, রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার, স্ত্রীর সমস্ত স্বর্ণালংকার বিক্রি করে দিয়েছেন। বর্তমানে তারা একেবারেই নিঃস্ব। দিনের পর দিন শুধু চোখের জলে দিন কাটছে। এ অবস্থায় তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহার কাছে কাতর আবেদন জানিয়ে বলেন, “আপনি একজন ভালো মানুষ, গরিবের পাশে সবসময় দাঁড়ান। দয়া করে আমার মেয়েটাকে বাঁচান।” তিনি আর ঘরবাড়ি চান না, শুধু চান মেয়ের চিকিৎসার সুযোগ।
কাজল দাস অভিযোগ করেন, প্রিয়াঙ্কার হাতে ৮০ শতাংশ প্রতিবন্ধী শংসাপত্র থাকা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিবন্ধী ভাতা বা কন্যা সন্তানের ভাতা পাচ্ছেন না। একাধিকবার মহকুমা সিডিপিও অফিস এবং জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে গিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এর মধ্যেও প্রিয়াঙ্কা তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে মৈলাক হাই স্কুল থেকে ভালো নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে।
তিনি চান, মেয়ে সুস্থ হয়ে যেন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, তার জন্য শিক্ষা দপ্তর থেকে সকল রকম সহায়তা দেওয়া হোক। আজ এলাকাবাসী তাকিয়ে রয়েছেন, দেখার পর মুখ্যমন্ত্রী কবে এগিয়ে আসেন এই অসহায় পরিবারের পাশে। তারা বিশ্বাস করেন, মুখ্যমন্ত্রীর সহানুভূতির একটুকরো ছোঁয়ায় প্রিয়াঙ্কার জীবন নতুন আশায় ভরে উঠতে পারে।

You may also like

Leave a Comment