
প্রতিনিধি, গন্ডাছড়া ১৭ জানুয়ারি:- গন্ডাছড়া লক্ষ্মীপুর ৩৬ কার্ড এলাকার বাসিন্দা তথা এসপিও কর্মী ঊষারঞ্জন কপালি দীর্ঘ রোগভোগের পর গত ৪ জানুয়ারি ধলাই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এদিন সকালে নিজ বাড়িতে ঊষারঞ্জন কপালি শারিরিকভাবে অসুস্থতা বোধ করলে পরিবারের লোকজনেরা তাকে প্রথমে গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে কুলাই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। এদিনই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। আগামী শুক্রবার হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি মেনে ওনার শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান করা হবে। বুধবার এসপিও হিরামোহন দেবনাথ এর নেতৃত্বে এসপিও ভাইরা ৩৬ কার্ড এলাকায় সহকর্মী ঊষারঞ্জন কপালির বাড়িতে ছুটে যায়। সেখানে এসপিও কর্মীরা উনার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং এই দুঃসময়ে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পরে ঊষারঞ্জনের স্ত্রী নিহারানি কপালির হাতে এসপিওদের পক্ষ থেকে তাদের সাধ্যমত কিছু আর্থিক সাহায্য তুলে দেন। যাতে করে এই টাকা দিয়ে সহকর্মী ভাইয়ের শ্রাদ্ধ শান্তি করতে কিছুটা হলেও সহায়তা হয়। এদিন এসপিও ভাইরা শ্মশান ঘাটে গিয়ে ফুল, মালা দিয়ে উষারঞ্জনের আত্মার সাতগতি কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। স্ত্রী নিহারানি কপালি এসপিও ভাইদের কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে। তিনি বলেন টাকা পয়সার অভাবে স্বামীর সঠিক চিকিৎসা করতে পারেননি। লিভার জনিত রোগে তিনি দীর্ঘদিন ভোগছিলেন। যদিও ধার দেনা করে একবার কুলাই হাসপাতালে চিকিৎসা করান। তখন চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন তার উন্নত চিকিৎসা করার জন্য। কিন্তু অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। তিনি আরো জানান কিছুদিন আগে তার পেটেও পাথর ধরা পড়ে। তারও কোন চিকিৎসা করতে পারছেন না। ধার দেনা করে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন এখনো তার ঋণ শোধ করতে পারছেন না। এই বলে বলে বারবার তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে এসপিও হিরামোহন দেবনাথ জানান ত্রিপুরা সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের অধীরে গন্ডাছড়া থানায় ঊষারঞ্জন কাপালি দীর্ঘ ১৯ বছর কর্মরত ছিলেন। সততার সঙ্গে নিষ্ঠার সাথে উনি তার দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে গেছেন। সামান্য বেতনের চাকরি হলেও কোনদিন তার ডিউটি অবহেলা করেনি। তিনি জানান ৭০০০ টাকার বেতন দিয়ে এসপিওরা বর্তমান সময়ে পরিবার প্রতিপালন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। এরপর যদি কোন এসপিও কর্মী মারা যায় তখন তার পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়ে। পরিবারটিকে দেখার মতো কেউ থাকে না। তিনি সরকার বাহাদুরের কাছে দাবি জানান আগামী দিন যাতে এসপিওদের পরিবারগুলো এভাবে আর রাস্তায় না আসতে হয় তার সুনিশ্চিত করার। এই এসপিও কর্মীর মতে সরকার চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে এবং তারা আশাবাদী সরকার বাহাদুর এদিকটা বিবেচনা করবেন। এখন দেখার রাজ্য সরকার এসপিওদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তার দিকে তাকিয়ে আছেন এসপিও কর্মী পরিবার পরিজনেরা।