প্রতিনিধি কৈলাসহর:-হাঁস,মোরগ ছাগল প্রতিপালনের পাশাপাশি নতুনভাবে খরগোশ প্রতিপালনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের মাধ্যমে ঊনকোটি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকদের পাঁচটি প্রজাতির খরগোশের বাচ্চা তুলে দেওয়া হয়েছে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে।কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র কৈলাসহরের উদ্যোগে কৈলাসহর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় নিজের বসত ভূমিতে জৈব পদ্ধতিতে খরগোশ প্রতিপালনের উপর প্রশিক্ষণ শিবির ও খরগোশ বিতরণ অনুষ্ঠান।জানা গেছে রাজ্যের মধ্যে প্রথম কৈলাসহর স্থিত কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের উদ্যোগে এই ধরনের খরগোষ প্রতিপালনের উপর কর্মশালা ও খরগোশ বিতরণের অনুষ্ঠান।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চন্ডিপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান বিনয় সিনহা,এ আর ডি ডি দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর রাহুল ধর পুরকায়স্থ,সিনিয়র সায়েন্টিস্ট বিশ্বজিৎ বল, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক ডঃ চন্দ্রা দেববর্মা প্রমূখ।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সিনিয়র সাইন্টিস্ট বিশ্বজিৎ বল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন আজকের অনুষ্ঠানে উন্নত প্রজাতির খরগোশ বিতরণ করা হবে। যা মাংস হিসেবে বিক্রি করা যাবে। প্রত্যেকের গৃহপালিত পশু রয়েছে। এই গৃহপালিত পশু গুলির পাশাপাশি তিনটি করে খরগোশ দেওয়া হবে। তাছাড়া দশ রকমের উন্নত প্রজাতির সবজির বীজ দেওয়া হবে। যা বেনিফিশিয়ারিরা তাদের বাড়ির উঠানে কিংবা ঘরের পিছনে রোপন করে সবজি উৎপাদন করবেন। সেই সবজি তাদের প্রয়োজন মতো তারা ব্যবহার করতে পারবেন। তার মধ্যে যে উদ্বৃত্ত সবজি রয়ে যাবে তা খরগোশকে দেওয়া যাবে বলে তিনি বলেন। এক একটি খরগোশ চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন হয়ে যায় যদি বৈজ্ঞানিকভাবে চাষ করা যায়। খরগোশ গুলি বাচ্চা দেওয়ার পর সেই বাচ্চা গুলি তিন মাস প্রতিপালন করার পর সেই বাচ্চা গুলি দুই থেকে তিন কেজি ওজন হয়ে গেলে বাজারে বিক্রি করা যেতে পারে। তিন মাস অন্তর অন্তর খরগোশগুলি বাজারজাত করা যাবে। তিনি খরগোশ গুলিকে খুব যত্ন করে প্রতিপালন করার জন্য বলেন। প্রত্যেক বেনিফিশিয়ারিকে দুটি করে মেয়ে খরগোশ ও একটি পুরুষ খরগোশ দেওয়া হবে। তিনি খরগোশ গুলির সাথে ট্রাক দিয়ে যে দুইজন বৈজ্ঞানিক রাজস্থান থেকে ছয় দিনের যাত্রা করে তিন হাজার কিলোমিটার পার হয়ে কৈলাসহর এসেছেন তাদের উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন ভারতবর্ষের আর কোথাও মনে হয় না কোন বৈজ্ঞানিক ট্রাকে করে ছয় দিনের যাত্রা করে কোথাও গিয়ে এ ধরনের কাজ করেছেন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য রাজ্য সরকারের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাসের উচ্চ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন দুধ, মাছ ও মাংসের রাজ্যকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার জন্য মন্ত্রী দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন কাল আমবাসায় মন্ত্রীর সুধাংশু দাস রিভিউ মিটিং করেছেন। আজ ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে রিভিউ মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন তিনি যখন চাকুরী করতেন তখন সেই সুবাদে একদিন খরগোসের মাংস খেয়েছিলেন। খরগোশের মাংস যে সুস্বাদু তিনি তখন জানতেন না। পরবর্তী সময় চাকুরী থেকে অবসর পাওয়ার পর তিনি নিজেও বাড়িতে খরগোশ প্রতিপালন করেছেন। অনুষ্ঠানে সুদূর রাজস্থান থেকে আগত বৈজ্ঞানিকরা তাদের বক্তব্যে বলেন রাজ্যের মধ্যে এই জেলাতেই প্রথম খরগোশ প্রতিপালনের উপর কর্মশালা ও খরগোশ বিতরণ করা হয়েছে।কৃষি ক্ষেত্রে উর্বর এই জেলায় খরগোশ প্রতিপালনের পাশাপাশি কৃষিজীবীদের আয়ের উৎস বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের সার বীজ প্রদান করা হয় এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। সামগ্রিক অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষি বিজ্ঞানী ডঃ রতন দাস।
24