প্রতিনিধি কৈলাসহর:-আগামী ২৬শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে পূর্ব ত্রিপুরা সংরক্ষিত আসনের লোকসভা নির্বাচন।এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলগুলো এখনও শীতঘুমে থাকলেও শাসক দল বিজেপি প্রচার প্রসার এবং কৌশলগত দিক দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা।পূর্ব ত্রিপুরা সংরক্ষিত আসনের ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থী কৃতি সিং দেববর্মার সমর্থনে আজ কৈলাসহর ঊনকোটি কলাক্ষেত্রে পৃষ্ঠা প্রমুখ সম্মেলন ও নির্বাচনী সংগঠনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি পবিত্র দেবনাথ,রাজ্য কমিটির সদস্য নিতিশ দে এবং রাজ্য কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য তথা ত্রিপুরা ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবস্বর আলী,মহিলা মোর্চার মণ্ডল সহ-সভানেত্রী চপলা দেবরায়,রাজ্য সরকারের যুব বিষয়ক ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়,সমবায় দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া,পৃষ্ঠা প্রমুখ স্টেট ইনচার্জ সুবল ভৌমিক এবং স্টেট কো-ইনচার্জ সুভাষ সরকার ও জেলা পৃষ্ঠা প্রমুখ ইনচার্জ সুকান্ত পাল এবং সভাপতিত্ব করেন মন্ডল সভাপতি সিদ্ধার্থ দত্ত।অতিথিদের হাত ধরে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয় এবং ভারতমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনী সভার কাজ শুরু হয়।বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সহ-সভাপতি তথা পৃষ্ঠা প্রমুখ স্টেট ইনচার্জ সুবল ভৌমিক বলেন,ভারতীয় জনতা পার্টিতে সারা রাজ্যে বর্তমানে ৬৬ হাজার ৯৮০ জন পৃষ্ঠা প্রমুখ রয়েছেন।যারা হচ্ছে দলের মূল ভিত্তি।এই পৃষ্ঠা প্রমুখদের কাজের অগ্রগতিতেই ২০১৮ সালে সরকার পরিবর্তন করা সম্ভব হয়।যা সিপিএম দল টেরই পায়নি।এনিয়ে ৩১তম পৃষ্ঠা প্রমুখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে কৈলাসহরে।তিনি বলেন পৃষ্ঠা প্রমুখ যারা রয়েছেন তাদের বাড়িতে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ না পেলেও বিনা নিমন্ত্রণে পৃষ্টা প্রমুখদের ছুটে যাবার জন্য।পৃষ্ঠা প্রমুখদের পরিবারের কেউ মারা গেলে তাকে সাহায্যের জন্য শ্মশানযাত্রী হতে হবে।কোন পৃষ্ঠা প্রমুখ জমিতে ধান রোপন করেছেন তা কাটার জন্য অন্য পৃষ্ঠা প্রমুখদের এগিয়ে যেতে হবে কিংবা তার যদি ঘর ভেঙ্গে যায় তাহলে অন্য পৃষ্ঠা প্রমুখদের তার পাশে দাঁড়াতে হবে।পৃষ্ঠা প্রমুখরাই যে দলের মূল স্তম্ভ এবং সম্পদ সেকথা বারবার উল্লেখ করেছেন সুবল বাবু।সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া বলেন নির্বাচনে বিভিন্ন দায়িত্ব কিভাবে পালন করা হবে তা নিয়ে আজকের আলোচনা। রাজ পরিবারের সদস্যা কৃতি সিং দেববর্মনের সমর্থনে আজকের বৈঠক। এবারের নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী করার নির্বাচন। প্রত্যেকটি বুথকে জয়ী করতে হবে।সেক্ষেত্রে বুথ সভাপতির দায়িত্ব থাকবে।বিজেপি, আইপিএফটি ও তিপ্রা মথা দল এখন একসাথে।তাই উনিশের নির্বাচনের চেয়ে এ বছরের নির্বাচনে আরো বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতে হবে।এক দলের লোক অন্য দলের লোককে খুন করেছে।এখন তারা একসাথে হয়েছে।আমাদের বিশ্বাস প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার কংগ্রেসকে ভোট দেবেন না।তিনি পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেবকে ভোট দেবেন। আজকের বৈঠকের প্রধান বক্তা সমাজ শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন আমাদের লড়াই ন্যায়ের জন্য।অনেকের জীবন যৌবন শেষ করেছে এই সিপিআইএম ও কংগ্রেস দল। কৈলাসহরের রাজপথ রক্তে লাল করেছে।আজ নিজেদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে যাওয়ায় বীরজিৎ,বদরুজ্জামান, বিশ্বরূপ বাবুরা এক মঞ্চে হয়ে এসেছেন।২৫ বছরে আর কে এস পি স্কুলের বিল্ডিং মেরামতি করার জন্য তারা কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। দেওয়ালের পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ে ছাত্রদের মাথা ফাটছে। বীরজিৎ বাবু কুড়ি বছর বিধায়ক ছিলেন বিধানসভায় এই বিষয়ে একটি কথাও বলেননি।জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের অফিস ভেঙ্গে যাচ্ছে সেই বিষয়ে একটি কথা বলেননি। কৈলাসহরের যুব আবাস নেই।উদয়পুরের মাতাবাড়ির পরেই পুণ্য স্থান হচ্ছে ঊনকোটি।ঊনকোটিকে নিয়ে তিনি কোনদিন কোন কথা বলেননি।কমিউনিস্ট দলের নেতারা আর কে আই মাঠে সভা করার জন্য চা শ্রমিকদের নিয়ে এসে মাঠ ভরতেন।অথচ শ্রমিকদের জন্য কিছুই করেননি। শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা টুকু পূরণ করেননি। কমিউনিস্টরা শ্রমিকদের একটি বাড়ি একটি জমি দেয়নি।আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর তিন হাজার শ্রমিক পরিবারকে জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। কমিউনিস্টরা কৃষক সভার নাম করে চাঁদা তুলেছে।অথচ কৃষকদের স্বার্থে কিছু করেনি। সবশেষে রাজনীতিগত দিক দিয়ে কৈলাসহর অভিশাপ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এই লোকসভা নির্বাচনে গণদেবতারা বিপুল ভোটে প্রার্থী কৃতি সিং কে জয়যুক্ত করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেছেন সকলেই।২০১৯ সালের পাঁচ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।এই পাঁচ বছরে ভারতীয় জনতা পার্টির সাংগঠনিক ভিত্তি অনেকটাই সমৃদ্ধ হয়েছে।এক্ষেত্রে বিগত লোকসভা এবং সদ্য সমাপ্ত হওয়া বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় উন্নয়নের নিরিখে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে সিংহভাগ সমর্থন থাকবে বলে আশা করছে দলের শীর্ষ নেতারা।
111