প্রতিনিধি, উদয়পুর :-দীর্ঘদিন পর মদ বিরোধী অভিযানে সাফল্য পেল রাধা কিশোরপুর থানা । মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে গোপন খবরের ভিত্তিতে , উদয়পুর খিলপাড়া বাজারে এক সব্জি দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। এদিন সব্জি দোকানের মালিক রাজু চন্দ্র শুক্ল দাসের দোকান করে প্রবেশ করে পুলিশ দেখতে পায় মদের কার্টুন একের পর এক । সাথে সাথেই দোকান মালিক সহ সমস্ত মদ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। এদিন পুলিশ অফিসার বিপ্লব দাস জানান , বাজেয়াপ্ত মদের বাজার মূল্য প্রায় ১৫,০০০ হাজার টাকা । আগামী দিনেও এই ধরনের অভিযান জারি থাকবে উদয়পুরে । যেভাবে এদিন পুলিশ মদ বিরোধী অভিযানে নেমেছে । তাতে করে উদয়পুরের শিক্ষিত মহল বলতে শুরু করেছে কেন গত কয়েক মাস ধরে মদ বিরোধী অভিযান বন্ধ ছিল উদয়পুরে। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ওসির দায়িত্বে রয়েছে সমর দাস। সমর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শুরু হয়েছে এই ধরনের ধরপাকর। সব মিলিয়ে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার যে ডাক দিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী । সে ডাকে সাড়া দিয়ে এবার উদয়পুরে শুরু হয়েছে নেশা বিরোধী অভিযান ।
ত্রিপুরা
প্রতিনিধি, গন্ডাছড়া ৪ মার্চ:- ত্রিপুরার চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ সাংস্কৃতিক উৎসব বিজু উৎসব। প্রতিবছরের মতো এ বছরও মহকুমা ভিত্তিক বিজু আবা উদযাপনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার গন্ডাছড়া মহকুমা শাসক অফিসের কনফারেন্স হলে বিজু আবা আয়োজন নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন মহকুমা শাসক, রাইমাভ্যালী বিধায়িকা, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, বিডিও, ব্লক চেয়ারম্যান, বিজু আবা কমিটির সভাপতি জয়মনি চাকমা, সম্পাদক সুমন্ত সেন চাকমা, অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যান বিকাশ চাকমা, এবং বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা। সভায় সফল ও সুন্দর আয়োজনের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
রাজ্যভিত্তিক বিজু মেলা ত্রিপুরার চাকমা জনজাতির ঐতিহ্যের প্রতীক। এবার ৫১তম রাজ্যভিত্তিক বিজু মেলা ধলাই জেলার ছামনুতে অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে মহকুমা ভিত্তিক বিজু আবা আয়োজন করা হচ্ছে, যা আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ নারিকেল কুঞ্জ সংলগ্ন চিত্ত পাড়া এসবি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
বিজু উৎসব মূলত চাকমাদের নববর্ষ উদযাপন, যা আনন্দ, সৌহার্দ্য ও সংস্কৃতির মিলনক্ষেত্র। এটি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য উন্মুক্ত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এবারের মহকুমা ভিত্তিক বিজু আবাতে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও নানা আকর্ষণীয় আয়োজন থাকবে।
বিজু আবা কমিটির সভাপতি জয়মনি চাকমা জানিয়েছেন, বৈঠকে বিজু আবাকে সফল ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি সকল সাংস্কৃতিকপ্রেমী ও সমাজসেবীদের সহযোগিতা কামনা করেছেন, যাতে বিজু আবা সর্বাঙ্গীণভাবে সুন্দর ও উপভোগ্য হয়ে ওঠে।
বিজু উৎসব শুধু আনন্দ নয়, এটি চাকমা সমাজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অনন্য বহিঃপ্রকাশ। মহকুমা ভিত্তিক বিজু আবা এই সংস্কৃতিকে ধরে রাখার পাশাপাশি সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রতিনিধি ধর্মনগর,,
ছোট গাড়ির গোপন কেবিনে করে গাঁজা পাচার করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়লো গাঁজা সমেত দুই পাচারকারী যুবক।
নতুন পন্থা অবলম্বন করে গাঁজা পাচার করতে গিয়ে বহু দিন পর পুলিশের জালে ধরা পড়লো প্রায় দেড়শো কেজি শুঁকনো গাঁজা সহ দুই পাচারকারী যুবক। ধৃতরা পুলিশকে শীতঘুমে রেখে বহুদিন ধরে ছোট মালবাহী গাড়িতে করে বিভিন্ন গলিপথ ব্যবহার করে গাঁজা পাচার অব্যাহত রেখেছে। তবে সোমবার শেষ রক্ষা হয়নি। বিবরণে জানা যায়, আগরতলা থেকে অসমে পাচারের উদ্দেশ্যে TR02L-1845 নম্বরের সুজুকি কোম্পানির সুপার ক্যারি চার চাকার খালি গাড়ি নিয়ে উত্তর জেলার বিভিন্ন গলি পথ দিয়ে চুরাইবাড়ি থানা এলাকার গোবিন্দপুর এলাকায় আসে। এমনসময় পুলিশের নিকট গোপন খবর আসে যে ঐ এলাকায় গাঁজা বোঝাই একটি গাড়ি ঘুরাঘুরি করছে বলে। সঙ্গে সঙ্গে চুরাইবাড়ি থানার ওসি খোকন সাহা দলবল নিয়ে উক্ত এলাকায় ছুটে যান এবং গাড়িটিকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে ছোট এই মালবাহী গাড়িটিতে সম্পূর্ণ তল্লাশি করে কোথাও গাঁজা পাওয়া যায় নি। পরে ওই গাড়ির বডির নিচের গোপন কেবিনে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ঐ বিপুল গাঁজা গুলো জব্দ করা হয়। এতে বিভিন্ন আকারের আটাশ পেকেটে মোট একশো সাতচল্লিশ কেজি শুকনো গাঁজা জব্দ করা হয়,যার কালোবাজারি মূল্য প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা বলে জানান ওসি। সঙ্গে আটক করা হয় আগরতলার মূল গাঁজা ব্যবসায়ী অভিজিৎ সরকার বয়স ২৮,পিতা বিপুল কান্তি সরকার,বাড়ি রাজধানী আগরতলার এডিনগর চার পাড়া এলাকায়।অপর যুবক বিহারের সনু কুমার বয়স ২৩,পিতা সিয়ারাম রায়,বাড়ি বিহারের বৈশালী জেলার ফতেপুর থানাধীন নগরগাওয়া গ্ৰামে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আগরতলা থেকে গাঁজা গুলো প্রথমে অসমের পাথারকান্দি নিয়ে যাবে ধৃত যুবকদ্বয়। পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে অন্য গাড়ি করে গাঁজা গুলো বিহারের উদ্যেশ্যে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানায় ধৃতরা।
এতে ধারণা করা হচ্ছে জাতীয় সড়কে পুলিশি ব্যাপক ধরপাকড়ের ফলে বহু দিন ধরে এভাবে ছোট পন্যবাহী গাড়ি করে ত্রিপুরা -অসম সীমান্তের বিভিন্ন ছোট গলি পথ ব্যবহার করে গাঁজা পাচার অব্যাহত রেখেছে পাচারকারীরা। পুরাই বাড়ি থানার পুলিশ একটি সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলার রুজু করে আগামীকাল ধর্মনগর জেলা ও দায়রা আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ডে চেয় আদালতে সোপর্দ করবে বলে জানালেন ওসি।
প্রতিনিধি ধর্মনগর,, সোমবার দুপুরেআনুমানিক একটা নাগাদ সোনার ও বাসা ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুরজিৎ নাথ এর বাড়ি ফাঁকা পেয়ে চোরের দলন হানা দিয়ে নগদ টাকা সহ কিছু সোনা রুপার অলংকার চুরি করে নিয়ে যায়। সুরজিৎ নাথ কর্মসূত্রে ছিলেন বাড়ির বাইরে ছিলেন আর উনার স্ত্রী ছিলেন বাড়ির বাইরে । সেই সুযোগে চোরের দল হানা দেয় বাড়িতে। সুরজিৎ নাথ ধর্মনগর থানায় চুরির ঘটনা নিয়ে অভিযোগ জানান। তৎক্ষণাৎ ধর্মনগর থানার পুলিশ সুরজিৎ এর বাড়িতে ছুটে যায় এবং তদন্ত শুরু করে এর পরিপেক্ষিতে দুপুর দুইটা নাগাদ ধর্মনগর রেল স্টেশন থেকে দুইজন চোরকে আটক করে। মধ্যে একজন হল জমির উদ্দিন বয়স 18 অপর জনের নাম হলো আব্দুল বাঁচিত বয়স ৩৪ উভয়রি বাড়ি আসামের বারিগ্রাম এলাকায়। পুলিশ তাদেরকে আটক করার পর চোরের কাছ থেকে জানতে পারে যে তারা তিন জন মিলে চুরি করেছে অপরজনের নাম হল রাজু দাস তার বাড়িও আসামে।
আটক করার পর তাদের কাছ থেকে পুলিশ নগদ ছয় হাজার টাকা সহ কিছু সোনা রুপার অলংকার উদ্ধার করেছে।
যে সমস্ত জিনিস পুলিশ উদ্ধার করেছে চোরের কাছ থেকে তার সবকিছুই সুরজিৎ নাথের বলে স্বীকার করেছে সুরজিৎ নাথ। কিন্তু গলার চেইন উদ্ধার হয়নি। ১৫০০০ টাকার মধ্যে মাত্র ৬ হাজার টাকা পুলিশ উদ্ধার করেতে পেরেছে। ধর্মনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে বাকি জিনিসগুলি রাজু দাস নিয়ে পালিয়ে গেছে যদিও তাকে ধরার জন্য পুলিশ জাল বিছিয়েছে রাজু দাস কে আটক করতে পারলেই বাকি জিনিসগুলো উদ্ধার হয়ে যাবে।এখন বর্তমানে পুলিশতদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিনিধি, বিশালগড় , ১ মার্চ।। রাজ্যের উন্নয়নের মুকুটে যুক্ত হল নয়া পালক। উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম কৃত্রিম অঙ্গনির্মাণ কেন্দ্র স্থাপন হচ্ছে বিশালগড়ের পূর্ব লক্ষীবিল গ্রামে। প্রায় ৫ একর জমিতে ৪৫ কোটি টাকা ব্যায়ে এই কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে জাতীয় কৃত্রিম অঙ্গনির্মাণ নিগম । ভারতবর্ষে এমন সাতটি অঙ্গ নির্মাণ কারখানা রয়েছে। এবার অষ্টম কারখানাটি হচ্ছে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরায়। শনিবার সকালে এই কারখানার ভূমি পূজন এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা । উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বি এল ভর্মা, সংসদ বিপ্লব কুমার দেব, ত্রিপুরার সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়, বিধায়ক সুশান্ত দেব, জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি এ কে পান্ডে, এলিমকোর সি এম ডি প্রবীণ কুমার, সমাজকল্যাণ দপ্তরের সচিব টি কে দাস, জেলাশাসক সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল, ভারপ্রাপ্ত জেলা পুলিশ সুপার নমিত পাঠক প্রমুখ। প্রথমে মাঙ্গলিক কার্যক্রমের মাধ্যমে ভূমি পূজন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিরা। এরপর ভিত্তি প্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের হিরা মডেল দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আজ সত্যিকার অর্থে হীরা মডেলের সেজে উঠেছে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরা। তিনি বলেন এই ফ্যাক্টরি হলে পূর্ব লক্ষীবিল গ্রামের আমূল পরিবর্তন ঘটবে। এখানকার মানুষের জীবনমান উন্নত হবে। ফ্যাক্টরিতে কাঁচামাল আনা নেওয়া এবং উৎপাদিত সামগ্রী রপ্তানির জন্য এই গ্রামের রাস্তাটি উন্নত মানের করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী আর বলেন সরকার স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। ২০১৭ সালে মাত্র ৪ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী ছিল। আজ ৫৬ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রায় পাঁচ লক্ষ মহিলা যুক্ত হয়েছে। মহিলাদের স্বাবলম্বনের ক্ষেত্রে তাই ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন শান্তি সম্প্রীতি থাকলে উন্নয়ন সম্ভব। ত্রিপুরায় শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। তাই বিভিন্ন কোম্পানি ত্রিপুরায় লগ্নী করতে আসছে। কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বিএল ভার্মা বলেন ২০১৪ সালের ভারত সারা দুনিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকতো। আজ সারা দুনিয়া ভারতবর্ষের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। অর্থনীতিতে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে ভারত। আমাদের লক্ষ্য তৃতীয় স্থান। ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত সমৃদ্ধ ভারত গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে কাজ করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকার। আমরা দিব্যাঙ্গদের শুধু সহায়তা করতে চাই না। আমরা চাই তাদের স্বনির্ভর করতে। সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব বলেন এই প্রকল্প ত্রিপুরায় প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকের অবদান রয়েছে। যদিও পরবর্তী সময়ে কাজটি আটকে যায়। এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরেন সিং এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহার প্রচেষ্টায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নের রূপ পেতে চলেছে। তিনি বলেন লক্ষীবিল ফুলের গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এই গ্রামে এবার লক্ষ্মী আসবে। সারা দুনিয়া জানবে এই লক্ষীবিলের নাম। ত্রিপুরা সমাজকল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠার পর দিব্যাঙ্গদের জন্য চাকুরী ক্ষেত্রে চার শতাংশ সংরক্ষণ চালু করেছে। যার ফলস্বরূপ জে আর বি টি নিয়োগে যার শতাংশ দিব্যাঙ্গ ভাই বোন সুযোগ পেয়েছে। তিনি বলেন ত্রিপুরা একমাত্র রাজ্য যেখানে ষাট শতাংশ দিব্যাঙ্গদের সামাজিক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। শেষে উপস্থিত দিব্যাঙ্গদের মধ্যে সহায়ক সামগ্রী বিতরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।
হ্যাম রেডিও সেন্টারে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ, ঘরে তালা ঝুলালো মহকুমা শাসক
প্রতিনিধি মোহনপুর :- হ্যাম রেডিও সেন্টারের নামে পাচারকারীদের এবং নেশাখোরদের আস্তানায় অভিযান চালালো মহকুমা শাসক। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বামুটিয়ার কাছারিটিলা এলাকায় হ্যাম রেডিও সেন্টারের কক্ষে। বৃহস্পতিবার মহকুমা শাসক সুভাষ দত্তের নেতৃত্বে সরকারী দুটি ঘর পুনরায় মহকুমা প্রশাসনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বামুটিয়ার তহশীল কাছারির জমির উপর সরকারি গৃহে একটি হ্যাম রেডিও সেন্টার খোলা হয়েছিল। যার দায়িত্বে ছিল অরুপ ধর নামে এক ব্যক্তি। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত এই সেন্টারে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল। পাশাপাশি এই সেন্টারের সামনে নোপার্কিং সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। বৃহস্পতিবার মোহনপুর মহকুমা শাসক এবং অন্যান্য আধিকারিকরা তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করেছে সেন্টারের ভেতর। পাশাপাশি অরূপ ধরের লাগানো নো পার্কিং সাইনবোর্ড খুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে হ্যাম রেডিও সেন্টারের জন্য দেওয়া দুটি কক্ষ পুনরায় মহকুমা প্রশাসনের হেফাজতে নিয়ে নিয়েছে মহাকুমা শাসক। মহকুমা শাসকের এই ধরনের ভূমিকায় অত্যন্ত খুশি স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-স্বাস্থ পরিষেবা প্রদানের সাথে সাথে সামাজিক কর্মকাণ্ডেও অবদান রেখে চলেছে নার্সিং কেয়ার।আবারও প্রমাণ করল যে জীবন রক্ষার জন্য শুধু বড় হাসপাতালের প্রয়োজন হয় না,দরকার হয় নিষ্ঠা,দক্ষতা এবং মানবিকতার।সম্প্রতি এই নার্সিং হোমের নিরলস প্রচেষ্টায় বেঁচে গেল দুটি নবজাতক শিশু ও তাদের মা।গত ১৬ই ফেব্রুয়ারি এক গর্ভবতী মা প্রসব বেদনা নিয়ে ছুটে আসেন ডিকে রোড স্থিত স্বস্তি হেলথ কেয়ারে।কিন্তু ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেন প্রসবের নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই মাস আগেই ব্যথা শুরু হয়েছে।অবস্থা সংকটজনক হলেও,কোনো দ্বিধা না করে ডাক্তাররা দ্রুত গর্ভবতীকে ভর্তি করেন এবং সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখেন।অবশেষে সেদিন রাতেই অর্থাৎ ১৬ই ফেব্রয়ারী মা জন্ম দেন দুই পুত্র সন্তানের।কিন্তু জন্মের পর দেখা যায়,শিশু দুটির মধ্যে রয়েছে নানান রোগের উপসর্গ।নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়ার কারণে নবজাতক দুটি অনেকটাই দুর্বল,ওজনও ছিল প্রয়োজনের তুলনায় কম। তাদের বাঁচিয়ে রাখা ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ।তবে, অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় এই চ্যালেঞ্জকেও জয় করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে নবজাতকদের রাখা হয় এনআইসিইউ-তে এবং কৈলাসহরে প্রথমবারের মতো ইন্টাট্রাকিয়াল সার্ফেকটেন্ট প্রয়োগ করা হয়,যা নব জাতকদের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।অবশেষে চিকিৎসক দের নিরলস প্রচেষ্টা ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার মাধ্যমে মা ও দুই সন্তান পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।এই সুখবরের মধ্য দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা ও দুই শিশুকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এই বিষয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে হাসপাতালের ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সুব্রত দাস জানান, কৈলাসহর একটি ছোট শহর হলেও এখানকার মানুষের জন্য কম খরচে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে স্বস্তি হেলথ কেয়ার প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের যেন শহরের বাইরে গিয়ে চিকিৎসার জন্য দ্বারস্থ হতে না হয়,তার জন্য দক্ষ চিকিৎসক ও আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে শুরু হল প্রথম রাজ্যভিত্তিক রিয়াং সম্প্রদায়ের লংদ্রাই পূজা এবং মেলা।
শান্তিরবাজার প্রতিনিধি :পুজো অর্চনার মধ্যে দিয়ে শান্তির বাজার মহকুমায় বীরচন্দ্র মনু ৮ নং জাতীয় সড়ক সংলগ্নে লংদ্রাই মন্দিরে পুজো এবং মেলা অনুষ্ঠিত হয় ব্রু সংগ্রংমা মথহ্ সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে। প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যে দিয়ে এই রাজ্যভিত্তিক প্রথম লংদ্রাই পূজোর এবং মেলার অনুষ্ঠানিক শুভ সূচনা করেন জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্রু সংগ্রংমা মথহ্ সামাজিক সংস্থার সমাজপতি খবারাম রিয়াং,ব্রু সংগ্রংমা মথহ্ সামাজিক সংস্থার জেনারেল সেক্রেটারি খনারাম রিয়াং, দক্ষিণ জোনাল জয়েন চেয়ারম্যান হরেন্দ্র রিয়াং, জোনাল চেয়ারম্যান ডেবিট মুড়াসিং ,পাড়া চৌধুরী, হাপায় চৌধুরী সহ অন্যান্যরা। মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা রাজ্যের সমস্ত অংশের মানুষের সুখ শান্তি সমৃদ্ধ কামনা করে বীরচন্দ্র মনু লংদ্রাই মন্দিরে পূজো অর্চনা করেন। ব্রু সংগ্রংমা মথহ্ সামাজিক সংস্থার দখলকৃত লংদ্রাই মন্দিরে পাট্টা প্রদানের পাশাপাশি ব্রু সংগ্রংমা পূজায় ছুটি ঘোষণা নিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিকট আলোচনা করা হবে বলে জানান মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা। অপরদিকে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা দর্শনার্থীদের জন্য হরির নাম সংকীর্তন এর পাশাপাশি রাতব্যাপী মঞ্চস্থ হয়েছে বিভিন্ন সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। এই মেলা সার্বিক এবং সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেন দক্ষিণ জোনাল জয়েন চেয়ারম্যান হরেন্দ্র রিয়াং। রাজ্যভিত্তিক প্রথম লংদ্রাই মন্দির প্রাঙ্গনে এই পূজো অর্চনা এবং মেলাকে কেন্দ্র করে রিয়াং সম্প্রদায়ের লোকজনদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেল।
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-গুচ্ছ প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং উন্নয়নের মুকুটে গুচ্ছ পালক সংযোজিত করতে ত্রিপুরা সরকার কর্তৃক অসংখ্য উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।যার ভিত্তি প্রস্তর এবং শিলান্যাস আগামী ৪ঠা মার্চ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহার হাত ধরে সংঘটিত হবে।কৈলাসহর মহকুমা শাসকের নতুন ভবন নির্মাণ,জেলা পরিবহন দপ্তরের কার্যালয়,অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ নির্মাণ ভদ্র পল্লী হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুলে, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন রামকমল হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুলের,ছনতৈল এলাকায় টেনিস কোর্ট স্থাপন, গৌরনগর এলাকায় ডিজিজ ইনভেস্টিগেশন ল্যাব এবং ভেটেনারি হসপিটাল, কৈলাসহরে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ড্রাগ ডি-এডিকশন সেন্টার, রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ে ৮ শতাধিক আসন বিশিষ্ট অডিটরিয়াম,দেওড়াছড়া অঞ্চলে মাল্টিপারপাস কমিউনিটি হল স্থাপন, চন্ডিপুর এলাকায় সমাজ কল্যাণ দপ্তরের নতুন অফিস নির্মাণ,বীরচন্দ্রনগর এবং টিলাগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নতুন তহশীল কাছারী ভবন নির্মাণ,সিঙ্গির বিল এলাকায় কমিউনিটি হল,কৈলাসহর পুর পুরিষদ এলাকার মাছ বাজারে ১৫টি মার্কেট স্টল নির্মাণ এবং চিনি বাগান এলাকায় ফুটবল খেলাকে আরো আধুনিক ফরমেটে নিয়ে যেতে সিন্থেটিক ফুটবল গ্রাউন্ড নির্মাণ সহ আরো অসংখ্য উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের শিলান্যাস এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন একই দিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে অনুষ্ঠিত হবে।কৈলাসহর তথা ঊনকোটি জেলাকে উন্নয়নের মোড়কে সাজিয়ে তোলতে বহুমুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার।চন্ডীপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী টিঙ্কু রায়ের উন্নয়নের আন্তরিক প্রয়াস সমৃদ্ধ করে চলেছে জেলা বাসীকে।আগামী ৪ঠা মার্চ কৈলাসহরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস ও ভূমি পূজন অনুষ্ঠিত হবে।তার-ই প্রেক্ষাপটে ২৫শে ফেব্রুয়ারী ঊনকোটি জেলা শাসকের কনফারেন্স হলে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন সমাজ শিক্ষা ও সমাজ কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়,জেলা শাসক দিলীপ কুমার চাকমা,অতিরিক্ত জেলা শাসক অর্ঘ্য সাহা, জেলা শিক্ষাধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
এই সভায় মূলত মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের শিলান্যাসের রূপরেখা তৈরি করা হয়।মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে প্রশাসনিক উদ্যোগ এবং তার সুশৃঙ্খল বাস্তবায়ন নিয়ে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে আজ দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।আলোচনা শেষে মন্ত্রী টিংকু রায় উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন করেন।এই জেলার শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আধুনিক শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে ইতিমধ্যে ৯টি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে ৫৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়েছে সরকারের তরফে।এর মধ্যে কিছু বিদ্যালয়ের কাজ সম্পন্ন হলেও,কিছু বিদ্যালয়ে কাজ এখনও অর্ধসমাপ্ত রয়েছে এবং কিছু নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হতে চলেছে।এছাড়াও,সতেরো মিয়ার হাওরের মাছ চাষের প্রকল্প সহ একাধিক নতুন বিদ্যালয় ভবনের শিলান্যাস করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে এলাকার শিক্ষা ও উন্নয়ন খাতে বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।কয়েকশো কোটি টাকার বরাদ্দকৃত এই সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর কৈলাসহর তথা ঊনকোটি জেলার চেহারা বদলে যাবে বলে আশাবাদী উন্নয়নকামী নাগরিকরা।
প্রতিনিধি, উদয়পুর :- একদিকে যখন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিটি সময় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরকারের নামে শ্লোগান দিয়ে বেড়াচ্ছে অন্যদিকে শাসক দল বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে বিরোধী ভোটাররা । একসময়ের সিপিএমের দুর্গ খুপিলং বাজার এলাকায় এবার ভাঙ্গন দাঁড়ালো শাসক দল । ৩০ বাগমা মন্ডলের ১৫ নং বুথে এক সভার মধ্য দিয়ে সাত পরিবারের ২৫ জন ভোটার বাম দল ত্যাগ করে যোগ দেয় বিজেপিতে। এদিনের যোগদান সভায় ভাষণ রাখতে গিয়ে বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া বলেন , বর্তমান রাজ্য সরকার এর রাজ্যে বিভিন্ন জাতি উপজাতি বিধানসভা কেন্দ্র গুলিতে কাজ করে চলেছে । কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দল এই রাজ্যে এক অস্থির পরিবেশ সবসময় গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি সময় সচেষ্ট ভূমিকা পালন করছে। শুধুমাত্র সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য কাজ করে চলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল। রাজ্য সরকার গ্রামীণ পঞ্চায়েতের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের নানা প্রকল্পের কাজগুলি দ্রুত সাধারণ মানুষের কাছে কিভাবে পৌঁছে দেওয়া যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ শুরু করেছে। এই উন্নয়নের ধারাকে দেখতে পেয়ে বিরোধী ভোটাররা বর্তমান সরকারের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য সামনে থেকে এগিয়ে আসছে । তাই খুপিলং বাজারে এলাকায় এই রাজনৈতিক সভায় যোগ দিয়েছে সাত বাম পরিবারের ২৫ জন ভোটার। বললেন বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া। দলত্যাগীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে দলে বরণ করে নেন বিধায়ক।