- ধর্মনগর প্রতিনিধি,, সমস্ত রাজ্যের পাশাপাশি উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা ব্লক এলাকায় চুরি,ডাকাতির ঘটনা কিছুতেই যেন হ্রাস পাচ্ছে না। প্রতিরাতেই কোন না কোন গৃহস্থের বাড়িতে হানা দিচ্ছে চোর কিংবা ডাকাত দল। এতে করে বিভিন্ন এলাকার জনগণ এখন নিজেরাই রাত্রিকালীন প্রহরার ব্যবস্থা করলেও অধিকাংশ স্থানে এখনও ভয়ঙ্কর চুরি ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করছে চোর কিংবা ডাকাত দল। একই ভাবে গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে উত্তর জেলার চুরাইবাড়ি থানাধীন পূর্ব ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪নং ওয়ার্ডের রেল গুদাম সংলগ্ন মিনতি দেবীর বাড়িতে হানা দেয় পাঁচ ছয়জনের এক ডাকাত দল। ডাকাত দলের সদস্যরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে ও হাতে ধারালো দা নিয়ে বাড়ির টিনের বাউন্ডারি ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। প্রথমে বাড়ির সদর দরজায় লাথি মেরে পাশের ঘরের তালা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। যদিও ঘরে কোন লোকজন ছিল না। পরে ঘরে থাকা নগদ ত্রিশ হাজার টাকা, দুটি সোনার কানের দুল, পায়ের নপুর, স্বর্ণের চেইন সহ রুপার অলংকার ও দামি ব্ল্যাঙ্কেট, কাপড় ও বিছানা পত্র নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দলটি। তখন পাশের ঘরে থাকা মিনতি দেবী ও উনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাইরে ডাকাত দলের তান্ডব লীলা আঁচ করতে পেরে প্রাণের ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করেননি বলে জানান। তিনি আরো জানান, ঘরে মেয়ের বিয়ের জন্য দামি জিনিসপত্র রাখা ছিল সেগুলোও নিয়ে যায় ডাকাত দলটি। তখন উনারা পেছনের দরজা খুলে চিৎকার-চেঁচামচি করতেই পালিয়ে যায় ডাকাত দলের সদস্যরা। রাতেই তিনি চুরাইবাড়ি থানায় ফোন করলে রাত্রিকালীন পেট্রোলিং এ থাকা পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পরে অবশ্য সকালে লিখিত আকারে জানানো হয় থানায়। সব মিলে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মিনতি দেবী। তবে এই ডাকাত দলের উৎপাতে নাজেহাল উত্তর জেলার চুরাইবাড়ী ও কদমতলা থানা এলাকার জনগন।
ত্রিপুরা
প্রতিনিধি। তেলিয়ামুড়া। ১৭ই জুন। তেলিয়ামুড়া মহকুমা ক্রিকেট এসোসিয়েশন আয়োজিত সিনিয়র ডিভিশন ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো নেতাজি স্মৃতি সংঘ। আজ তেলিয়ামুড়া দশমী ঘাট স্থিত ভগৎ সিং মিনি স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে সপ্তসিন্ধু দশ দিগন্ত কে ৯৭ রানে হারিয়ে পরপর দু’বছর চ্যাম্পিয়নের শিরোপা ছিনিয়ে নিল নেতাজির স্মৃতি সংঘ। রাজ্যের স্বনামধন্য একাধিক ক্রিকেটারে সমৃদ্ধ নেতাজি স্মৃতি সংঘ প্রথমে খেলতে নেমে ১৫ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৯২ রান তুলে। অধিনায়ক শুভম ঘোষ ৫২, দুর্লভ রায় ৩২ এবং মিন্টু দেবনাথ এর ৩০ রান ছিল উল্লেখযোগ্য. সপ্তসিন্ধু দশ দিগন্তের বিশু দেববর্মা তিনটি উইকেট লাভ করে। পাল্টা খেলতে নেমে সপ্তসিন্ধু দশ দিগন্ত তেরো অবাক তিন বলে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান তুলে। নেতাজি স্মৃতি সংঘের শুভম ঘোষ দুইটি উইকেট এবং দলের এক নম্বর বোলার পৃতিসগোপ দুইটি উইকেট তুলে নেয়। নেতাজি স্মৃতি সংঘ এবার পরপর দু’বছর তেলিয়ামুড়া মহকুমা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সিনিয়র ক্রিকেট টুর্নামেন্টে চেম্পিয়ান হলো। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন নেতাজি স্মৃতি সংঘের হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক তথা তেলিয়ামুড়ার বিধায়িকা কল্যাণী সাহা রানার্স পুরস্কার তুলে দেন তেলিয়ামুড়া পৌর পরিষদের চেয়ারম্যান রূপক সরকার। অন্যান্য ক্যাটাগরিতে পুরস্কার তুলে দেন মহাকুমা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের সভাপতি বিমল রক্ষিত,সম্পাদক নন্দন রায়, তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রেস ক্লাব সম্পাদক পার্থ সারথী রায় প্রমূখ। এখানে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আজকের ফাইনাল ম্যাচটি ৫০ ওভারের পরিবর্তে ১৫ ওভারে করা হয়. এবছর তেলিয়ামুড়া মহকুমা ক্রিকেট এসোসিয়েশন আয়োজিত টুর্নামেন্টে ১৮ টি দল অংশ নেয়.
- প্রতিনিধি ধর্মনগর,,
- উত্তর ত্রিপুরায় বেআইনি বার্মিজ সিগাবরেট চোরাচালান রুখতে তৎপর ত্রিপুরা পুলিশ। ধর্মনগর থানার অধীনস্থ আনন্দবাজার এসপিও ক্যাম্পের নাকা চেকিং পয়েন্টে পুলিশের এক সফল অভিযানে ফের আটক হলো বিপুল পরিমাণ চোরাচালানি সিগারেট। গতকাল গভীর রাতে এই ঘটনাটি ঘটে যখন একটি বিলাসবহুল গাড়ি (নম্বর: TR05G0597) সন্দেহভাজনভাবে চেকপোস্ট অতিক্রম করার চেষ্টা করে।
- তৎক্ষণাৎ কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা গাড়িটিকে থামিয়ে তল্লাশি চালান। সেই সময় গাড়ির ভেতর থেকে সাতটি কার্টুনে গুছিয়ে রাখা অবস্থায় মোট ৭০,০০০ বার্মিজ সিগারেট উদ্ধার হয়। পুলিশের অনুমান অনুযায়ী, এই বিপুল পরিমাণ সিগারেটের বাজারমূল্য আনুমানিক প্রায় কয়েক লক্ষ্য টাকা টাকা।
ধর্মনগর থানার রাতের ডিউটিতে থাকা পুলিশ অফিসার সোলেমান রিয়াং তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্তদের আটক করেন। ধৃত তিন যুবক হলেন দামছড়া এলাকার সৌরভ সিনহা, পানিসাগরের জামটিলা এলাকার প্রকাশ দেবনাথ ও বিশ্বজিৎ দেবনাথ। তাদের বিরুদ্ধে চোরাচালান সংক্রান্ত আইনের অধীনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে ধর্মনগর থানার পুলিশ। - পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া প্রতিটি কার্টুনে ১০,০০০টি করে বার্মিজ সিগারেট ছিল। সিগারেটগুলির কোনও বৈধ কাগজপত্র কিংবা কর সংক্রান্ত তথ্য ওই যুবকেরা দেখাতে পারেনি।
- এই ঘটনাটি উত্তর ত্রিপুরা জেলায় বার্মিজ সিগারেট চোরাচালান রোধে পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের অংশ। উল্লেখযোগ্য যে, গত মার্চ মাসে রাজনগর এলাকায় একটি গাড়ি দুর্ঘটনার পর ৪০ কার্টুন বার্মিজ সিগারেট উদ্ধার হয়েছিল। তবে সেই ঘটনায় তৎক্ষণাৎ কেউ গ্রেফতার না হলেও পরে তদন্তের ভিত্তিতে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়, যাদের বিরুদ্ধেও চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে।
- ধর্মনগর থানার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এ ধরনের বেআইনি ব্যবসা সীমান্তবর্তী এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়। তবে পুলিশ এখন আরও সক্রিয়ভাবে নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে। সোলেমান রিয়াং জানান, “চোরাচালান চক্র যতই সক্রিয় হোক, আমরা পিছু হটছি না। এ ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলতেই থাকবে।”
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হল কৈলাসহর ঊনকোটি কলাক্ষেত্রে।কৈলাসহর ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে জুড়ে ছিল সম্মাননা প্রদান, সেমিনার,রক্তদান শিবির এবং নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি।অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বিশ্বখ্যাত রক্তের গ্রুপ আবিষ্কারক কার্ল ল্যান্ডস্টেইনারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং একটি চারা গাছে জল সিঞ্চনের মধ্য দিয়ে।এরপর আমেদাবাদে সদ্য ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো ২৪১ জন যাত্রীর প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।অনুষ্ঠানের সূচনা সঙ্গীত পরিবেশন করেন নির্ঘোষ নিক্বণ এর শিল্পীবৃন্দ।স্বাগত ভাষণ দেন ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের সম্পাদক শুভাশিস চৌধুরী।অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন এসোসিয়েশনের সভাপতি অনুপম পাল।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপারসন চপলা দেবরায়,ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক ডঃ তমাল মজুমদার,মহকুমা শাসক প্রদীপ সরকার,জেলা শিক্ষা আধিকারিক প্রশান্ত কিলিকদার,মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি কার্যালয়ের আধিকারিক সুকান্ত মলসই, ডঃ শঙ্খশুভ্র দেবনাথ,ভাইস চেয়ারপার্সন নিতিশ দে, বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রীতম ঘোষ সহ জেলার একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।রক্তদানের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন ডঃ শঙ্খশুভ্র দেবনাথ। পাশাপাশি,ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় এক তথ্যবহুল সেমিনার, যেখানে “চাইল্ড ম্যারেজ” ও “টিনেজ প্রেগন্যান্সি” বিষয়ে আলোচনা করেন ডঃ অয়ন রায়।এছাড়াও ছাত্রদের মধ্যে একটি কুইজ প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়।এই দিনে ধারাবাহিকভাবে রক্তদান করে সমাজে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় পাঁচজন মহিলা রক্তদাতাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।সম্মান প্রাপ্তরা হলেন শাশ্বতী চক্রবর্তী,পৌষালী ভট্টাচার্য, মহামায়া দাস,সংঘমিত্রা দে এবং সুপর্ণা চক্রবর্তী। এছাড়াও জেলার তেরোটি ক্লাবকে রক্তদানের ক্ষেত্রে তাদের সক্রিয় ভূমিকার জন্য সংবর্ধনা জানানো হয়।রক্তদান শিবিরে মোট ২২ জন রক্তদাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন,যা অনুষ্ঠানটির মূল সার্থকতাকে প্রমাণ করে।অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন বাচিক শিল্পী সুকান্ত চক্রবর্তী।পুরো অনুষ্ঠানের সফল বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ঊনকোটি জেলার বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর এবং তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর।সার্বিকভাবে, কৈলাসহর ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের এই বর্ণাঢ্য আয়োজন রক্তদানের প্রতি জনসচেতনতা গড়ে তোলার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল এমনটাই মত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের।এর পূর্বেও কৈলাসহর ব্লাড ডোনার্স এসোসিয়েশনের রক্তদানের প্রয়াস সফলতার শীর্ষে রয়েছে।
প্রতিনিধি, গন্ডাছড়া 13 জুন:- গন্ডাছড়ার বাসিন্দা মায়ারানি দেবনাথের ৬৯ তম জন্মদিনটি এবারে এক ভিন্ন রকম উজ্জ্বলতা পেল তাঁর পুত্র, পেশায় সাংবাদিক, রামু দেবনাথের মাধ্যমে। মায়ের জন্মদিন উপলক্ষে তিনি যে মানবিক ও সমাজসেবামূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা সকলের মন ছুঁয়ে গেছে।
তাঁর মায়ের জন্মদিন’টিকে অর্থবহ করে তুলতে অমরপুরের পূর্ব মৈলাক গ্রামের এক নিরীহ পরিবারের অসুস্থ শিশুর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। কাজল দাসের ৮ বছর বয়সী কন্যা প্রিয়াঙ্কা দাস দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া নামক কঠিন রোগে আক্রান্ত। পরিবারটি আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল হওয়ায় প্রিয়াঙ্কার চিকিৎসা ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অবস্থায় সাংবাদিক বাবু তাঁর মায়ের জন্মদিন উপলক্ষে প্রিয়াঙ্কার হাতে তুলে দেন জামা, স্কুল ব্যাগ, ছাতা, জুতো, আমলদুধ, টিফিন বক্স, পেন্সিল বক্স, জলের বোতল, বিস্কিট, ব্যাস, কলকেট, সাবান, তেল, পাউডার, মুখের স্কীম, সেম্পু, পুতুল, ড্রয়িং খাতা, রং পেন্সিল এবং পাঁচ জাতের ফল। শিশু প্রিয়াঙ্কার চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক ছিল স্পষ্ট। সাংবাদিক বাবুর এহেন উদ্যোগে খুশি কাজল দাসের গোটা পরিবার। পাশাপাশি কাজল দাস সাংবাদিকের মায়ের দীর্ঘ আয়ু কামনা করেন।
সাংবাদিক বাবু বলেন, “প্রতিবার মায়ের জন্মদিনে কেক কাটা, খাবার খাওয়া তো হতোই। কিন্তু এবার মনে হলো এমন কিছু করি যাতে একজন মানুষের মুখে হাসি ফোটে। মা সবসময় আমাদের শেখাতেন দুঃখীদের পাশে দাঁড়াতে। তাঁর শিক্ষাই আজ আমাকে এই উদ্যোগ নিতে অনুপ্রাণিত করেছে।”
এই অভিনব ও মানবিক উদ্যোগে খুশি এলাকার সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ বলেন, “এ ধরণের উদ্যোগ সমাজে একটা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে। একজন সাংবাদিক শুধু খবর পরিবেশনেই নয়, সমাজ গঠনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন— সাংবাদিক বাবু সেটাই করে দেখালেন।”
একজন সন্তানের পক্ষ থেকে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবার এমন মানবিক দৃষ্টান্ত নিঃসন্দেহে সমাজের কাছে এক অনুকরণীয় উদাহরণ। সাংবাদিক বাবুর মতো আরো অনেকেই যদি বিশেষ দিনগুলোতে অসহায়দের পাশে দাঁড়ান, তাহলে সমাজ হবে আরও মানবিক ও সুন্দর।
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে গত ২৯শে মে থেকে শুরু হয়েছিল বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান।যা শেষ হবে ১২ই জুন।তার-ই অঙ্গ হিসেবে আজ ঊনকোটি জেলা ভিত্তিক বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে কুমারঘাট এর গীতাঞ্জলি অডিটোরিয়ামে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ,বিধায়ক ভগবান চন্দ্র দাস,সভাধিপতি অমলেন্দু দাস,সহকারি সভাধিপতি সন্তোষ ধর, কুমারঘাট পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন সুমতি দাস,কৃষি দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার স্বপন দাস,উদ্যান দপ্তরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাস,কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সিনিয়র সাইন্টিস্ট বিশ্বজিৎ বল এবং আই সি এ আর এর সিনিয়র সেন্টিস্ট প্রাণনাথ বর্মন,মৎস্য দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর তারেন্দ্র দেববর্মা ও প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর তপন রায়। এছাড়াও মঞ্চে বিশেষ অতিথির আসন গ্রহণ করেন প্রগ্ৰেসিভ কাল্টিভেটর হীরালাল চৌধুরী।সমৃদ্ধি, সচ্ছলতা এবং আত্ম নির্ভরতার অঙ্গীকারে অঙ্গীকারবদ্ধ ত্রিপুরা সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণে অভিনব এই উদ্যোগ গোটা রাজ্য ব্যাপী বাস্তবায়িত হয়েছে।বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন কৃষকদের কল্যাণে এবং কৃষি দপ্তরকে আরো জনমুখী ও কৃষক মুখী করতে প্রতিদিন এ রাজ্যের ৭২ টি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।২০১৮ সালের পূর্বে আই সি এ আর এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র রাজ্যের আটটি জেলায় থাকলেও তার সম্পর্কে কৃষকদের স্পষ্ট কোন ধারণা ছিল না। সরকার পরিবর্তনের পর কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের কাজের প্রতি উৎসাহ বাড়ানো হয়েছে এবং তাদের সৃজনশক্তি বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে কৃষকের আয় কিভাবে দ্বিগুণ করা যায় এবং তার রূপায়ণ ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে আলোকিত হয়।তিনি বলেন বিজ্ঞানীদের কাজ হচ্ছে মাঠে গিয়ে কৃষকের জমিতে মাটির গুণমান পরীক্ষা করা এবং সহজ পদ্ধতিতে অল্প পরিশ্রমে এবং কম খরচে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কিভাবে চাষ করা যায় সে সম্পর্কে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয় কৃষি বিজ্ঞানীদের।আজ তাদের কল্যাণে সারা ত্রিপুরা রাজ্যে কৃষি বিপ্লব শুরু হয়েছে। তাদের গবেষণায় গতি এসেছে।একটি পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন সারা রাজ্যে মোট ৬৫ লক্ষ কানি রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ লক্ষ কানিতে ফসল চাষ হয় এবং তার মধ্যে ১৫ লক্ষ কাণী জমিতে ধান চাষ হয় গোটা রাজ্যে। মাটি ছাড়াও কৃষিকাজ কিভাবে করা যায় তার ওপর রাজ্যের রিসার্চ সেন্টার নাগি ছড়ায় কৃষকদের গবেষণা শুরু হয়েছে।এছাড়াও সরকার পেঁয়াজ চাষের জন্য ২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান ভর্তুকি হিসেবে দেখছেন।আজকের এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কৃষকদের ভুয়ষি প্রশংসা করেন মন্ত্রী শ্রীনাথ।অনুষ্ঠানের শেষে ঊনকোটি জেলার আট জন বিশেষ কৃষকদের সম্মাননা জ্ঞাপন করেন অতিথিরা।
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-নাবালিকা বধূকে গোপন খবরের ভিত্তিতে কৈলাসহর চন্ডিপুর ৫ নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে তুলে আনলো চাইল্ড হেল্পলাইন এবং জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের কর্মীরা।শনিবার চাইল্ড হেল্প লাইনের কাছে গোপন সূত্রে খবর আসে যে, শ্রীরামপুর এলাকার এক নাবালিকার সাথে চন্ডিপুর ৫ নং ওয়ার্ডের এক যুবকের সাথে বিবাহ হয়েছে।এরপর চাইল্ড হেল্পলাইন এবং জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিট এবং কৈলাসহর মহিলা থানার পুলিশ মিলে ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে হানা দেয় এবং ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায়। ওরা পরবর্তী সময় ওই নাবালিকা যুবক সহ উভয় পক্ষের অভিভাবকদের নিয়ে আসে কৈলাসহর জেলা শিশু কল্যাণ সমিতির অফিস গৃহে। উনারা দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করেন উভয় পক্ষকে এবং ওরা জানায় ওই যুবকের সাথে ওই নাবালিকার প্রণয় সম্পর্ক রয়েছে।চলতি মাসের দুই তারিখ ওই নাবালিকা ওই যুবকের বাড়িতে চলে যায়। পরবর্তী সময় ওই নাবালিকার পরিবারের লোকেরা ওই যুবকের বিরুদ্ধে কৈলাসহর মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে যুবকের পরিবারের লোকেরা অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দেয় এবং তা মীমাংসা করার জন্য চাপ দেয়।এরপর উভয়পক্ষ বসে মীমাংসা করে এবং ডুলগাঁও এলাকার একটি মন্দিরে গতকাল ওই নাবালিকা ও যুবকের বিবাহ করানো হয়। আজ ওই নাবালিকাকে কুমারঘাট সখি ওয়ান স্টপ কেন্দ্রে পাঠানো হবে এবং সোমবার ওই নাবালিকাকে উত্তর জেলার ধর্মনগর হোমে প্রেরণ করা হবে।পাশাপাশি ওই যুবকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজকের এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন চাইল্ড হেল্প লাইন সুপারভাইজার বিনয় দেব, এলসিপিও সাগরদ্বীপ মালাকার,প্রোডাকশন অফিসার দেবব্রত দেবনাথ সহ কৈলাসহর মহিলা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
প্রতিনিধি, বিশালগড়, ৩ জুন।। বিশালগড় মহিলা থানার ওসি শিউলি দাসের ব্যাক্তিগত গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনাটি ঘটে সোমবার সন্ধ্যে পৌনে ছয়টায়। ওসি কে থানায় নামিয়ে দিয়ে চালক একাই গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিল। তখন বিশালগড় উত্তর বাজারে কয়েকজন দুষ্কৃতি চালককে মারধোর করে গাড়িটি নিয়ে চম্পট দেয়। কুখ্যাত সমাজদ্রোহী জুয়েল মিয়া ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এ কান্ড সংগঠিত করেছে। মূহুর্তের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। দ্রুত ময়দানে নেমে পড়ে পুলিশ। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রাজীব সূত্রধর, এসডিপিও দুলাল দত্ত, বিশালগড় থানার ওসি সঞ্জিত সেন দ্রুত অভিযান শুরু করে। থানায় ছুটে যান আইজি আইনশৃঙ্খলা মঞ্চাক ইপ্পার। আইজি আইনশৃঙ্খলা জানিয়েছেন কোন অপরাধী রেহাই পাবে না। তিনি আরো জানান রাজ্যে অপরাধের মাত্রা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এখনো যারা সমাজবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে প্রশাসন । রাত একটায় থানায় ছুটে যান বিধায়ক সুশান্ত দেব। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে গাড়ি উদ্ধার এবং দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতারের সময়সীমা বেঁধে দেন বিধায়ক সুশান্ত দেব। যথারীতি পুলিশের অভিযান তীব্র হয়। নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়েছে পুলিশ। অবশেষে মঙ্গলবার বিকেলে গাড়িটি উদ্ধার হয়। বক্সনগরের ভেলুয়ারচরে গাড়িটা লুকিয়ে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে গাড়িটি উদ্ধার করতে পারলেও দুষ্কৃতকারীদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সিপাহীজলা জেলা পুলিশ সুপার বিজয় দেববর্মা। তিনি জানান অতি শীঘ্রই দুষ্কৃতকারীদের মূল পান্ডা জুয়েল হোসেনকে গ্রেফতার করা হবে। তাকে গ্রেফতার করার পর তা সহযোগী দুষ্কৃতকারীদের নামধাম জানা যাবে। ঘটনা সঙ্গে যারাই যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার। জেলা পুলিশ সুপার জানান ছিনতাই হওয়া গাড়ি পুলিশের নয়। এটি থানার ওসির ব্যক্তিগত গাড়ি। গত কয়েকদিন আগে এই গাড়িটি তিনি ক্রয় করেছিলেন। গাড়িটির মালিক সুরজিৎ রায় পানিসাগরের বাসিন্দা । পরবর্তীকালে তিনি গাড়িটি বিশালগড়ের জুয়েল হোসেন এর কাছে বিক্রি করে দেন। কিন্তু জুয়েল হোসেন সময় মতো কিস্তি পরিশোধ না করায় ফাইন্যান্স কোম্পানি গাড়িটি তুলে নেয়। এভাবে দুই তিন হাত বদল হয়ে শেষে গাড়িটি ক্রয় করেন মহিলা থানার ওসির পরিবার। এদিকে দুষ্কৃতকারী জুয়েল হোসেনকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। জুয়েল বিরোধী দলের ছত্রছায়ায় লালিত। সে নানান অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। শান্তির শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে বিশালগড়ের বদনাম করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে জুয়েল হোসেন এর মত দুষ্কৃতকারীরা। এদিকে গতকাল কমলাসাগর বিধানসভার ভূঁইয়ার মাথা এলাকায় ১১ লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে । ধারালো অস্ত্রের মুখে পিতা পুত্রকে রক্তাক্ত করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানান জেলা পুলিশ সুপার বিজয় দেববর্মা।
সাংবাদিকতার পাশে মানবতা, অসুস্থ রবি সিং-এর পাশে দাঁড়ালেন আরেক সাংবাদিকের মা
- প্রতিনিধি,গন্ডাছড়া ৩ জুন:-
জীবনের চার দশকেরও বেশি সময় সাংবাদিকতা করে বহু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন গন্ডাছড়া মহকুমা এলাকার সিনিয়র সাংবাদিক রবি সিং। কিন্তু আজ তিনি নিজেই এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ এক বছর ধরে কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত এই সিনিয়র সাংবাদিক বর্তমানে শারীরিক এবং আর্থিক—দুই দিক থেকেই বিপর্যস্ত। চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে ইতিমধ্যে তার সঞ্চিত দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং বহিরাজ্যে চিকিৎসা করাতে গিয়ে তিনি কার্যত নিঃস্ব।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রবি সিং সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে রাজ্যবাসীর কাছে উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানান। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর আবেদনে সাড়া মেলেনি। কেউ এগিয়ে আসেননি তাঁর দুঃসময়ে।
তবে এই নীরবতা ভেঙে এক মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন গন্ডাছড়া মহকুমা এলাকার আরেক সাংবাদিক রামু দেবনাথের মা, মায়ারানী দেবনাথ। মঙ্গলবার সকালে ৭৫ বছরের এই সমাজসেবিকা, ছেলে রামু দেবনাথকে সঙ্গে নিয়ে ডুম্বুরনগর ব্লক সংলগ্ন রবি সিং-এর বাড়িতে উপস্থিত হন।
তিনি অসুস্থ সাংবাদিকের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাঁর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাতে তুলে দেন ৫০০০ টাকা। এই অনাকাঙ্ক্ষিত গভীর মানবিক মুহূর্তে রবি সিং আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কান্না চেপে রাখতে না পেরে বলেন, “জীবনে বহু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, অনেকের দুঃখ-কষ্ট তুলে ধরেছি সংবাদপত্রের মাধ্যমে। কিন্তু আজ যখন নিজে অসহায়, তখন কাউকে পাশে পাচ্ছি না। এমন সময় এই মা যেভাবে আমার পাশে দাঁড়ালেন, তা কখনও ভুলবো না।”
উল্লেখ্য, মায়ারানী দেবনাথ শুধু একজন মা নন, বরং একজন নিঃস্বার্থ সমাজসেবিকা। তিনি একজন পেনশনার হলেও তার পেনশনের টাকাতেই বছরের পর বছর ধরে নানা অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আসছেন। কারও শিক্ষার খরচ, কারও চিকিৎসার ব্যয়—সব ক্ষেত্রেই তিনি চুপিসারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কখনও প্রচারের আলোতে আসেননি, নীরবে নিজের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
মায়ারানী দেবনাথ আগেও বহুবার অসহায় মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনি নিজেকে কখনই ‘সমাজসেবী’ বলে দাবি করেন না। তাঁর মতে, “যা করছি, সেটা দায়িত্ব। সমাজের জন্য কিছু করা আমাদের সবার কর্তব্য।”
এই ঘটনার পর গোটা এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন তিনি। একজন সাংবাদিকের মা হয়ে আরেক সাংবাদিকের জন্য যে সহানুভূতি ও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন, তা শুধু মানবিকতার নিদর্শন নয়, সমাজের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এই ঘটনা প্রমাণ করে দিল—মানবতা এখনও বেঁচে আছে, শুধু দরকার সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। রবি সিং-এর সুস্থতা কামনায় এখন অনেকেই এগিয়ে আসছেন, যা এই ছোট অথচ শক্তিশালী ঘটনার ইতিবাচক প্রভাব বলেই মনে করা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে একটাই প্রার্থনা—রবি সিং যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আবারও কলম হাতে ফিরতে পারেন সেই পথচলায়, যা দিয়ে তিনি সমাজকে সারা জীবন আলোকিত করে এসেছেন।
প্যাকেজিং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে আচমকাই অভিযান চালায় উওর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক
প্রতিনিধি ধর্মনগর : আজ দুপুরে পানিসাগর থানাধীন পশ্চিম পানিসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চার নং ওয়ার্ডে অবস্থিত ক্লিয়ার স্ট্রিম ওয়াটার নামক একটি প্যাকেজিং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে আচমকাই অভিযান চালায় উওর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ও পানিসাগর মহকুমা খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের যৌথ অভিযানকারী একটি প্রতিনিধি দল।এতে উপস্থিত ছিলেন নর্থ ডিস্ট্রিক্ট ফুড সেইপ্টি অফিসার ড:কিঙ্কর দেব্বর্মা,নর্থ ডিস্ট্রিক্ট হেল্থ অফিসার ড:রাহুল পুরকায়স্থ,পানিসাগর মহকুমা প্রশাসনের খাদ্য দপ্তরের ফুড ইন্সপেক্টর গৌতম ভট্টাচার্যী,পানিসাগর মহকুমা প্রশাসনের রেভিনিউ ইন্সপেক্টর অজয় দেব নাথ সহ পানিসাগর আরক্ষা প্রশাসনের কর্মী সহ টি,এস,আর জোয়ানেরা।খাদ্য নিরাপওা ও মান আইন ২০০৬ অনুসারে ফেসাই এক্ট নির্ধারিত নিতী নির্ধেশিখা না মেনে উওর জেলরা বিভিন্ন স্থানে গজিয়ে ওঠা প্যাকেজিং মিনালের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট গুলোকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রটোকল কে মান্যতা দিয়ে সঠিক এবং স্বাস্থ্য সম্মত প্যাকেজিং ওয়াটার সরবরাহ করতে উওর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে এই ধরনের ঝটিকা অভিযান চালানো হচ্ছে উওর জেলার ধর্মনগর,পানিসাগর সহ প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতে।উক্ত অভিযান কালে অভিযান কারি দল টি পশ্চিম পানিসাগর স্থিত ক্লিয়ার স্ট্রিম ওয়াটার প্যাকেজিং ওয়াটার প্যান্ট টির বৈধ নতিপএ সহ পারিপার্শ্বিক বিষয় গুলো ক্ষতিয়ে দেখেন।অভিযান শেষে অভিযান কারি দলটি জানান ক্লিয়ার স্ট্রিম ওয়াটার প্ল্যান্ট টির কিছু বৈধ নতিপএ পাওয়া গেলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রটোকল অনুযায়ী টেস্টিং ল্যাব সহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিকুল প্রতিবন্ধকতা থাকায় প্ল্যান্ট মালিক অশোক দাস,পিতা শীতেশ দাস কে প্রথম বারের মতো সতর্ক করা সহ উৎপাদন কৃত প্যাকেজিং জলের জার গুলোকে আপাতত বাজারজাত করার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।পাশাপাশি অতি শ্রীগ্রই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের স্মরনাপন্ন হয়ে প্যাকেজিং ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট পরিচালনার ক্ষেএে নির্ধারিত নতিপএ তৈরি করতে পরামর্শ প্রদান করেন অভিযান কারি দলটি।পরবর্তীতে অভিযান কারি দলটি পানিসাগর বাজারে এসে বেশ কয়েকটি প্যাকেজিং ওয়াটার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে আমদানি কৃত প্যাকেজিং জলের জার গুলোর নির্ধারিত উৎপাদন তারিখ,মেয়াদ উওীর্ণ তারিখ,সঠিক ব্যাচ নম্বর সহ জলের প্লাস্টিকের জার গুলোর গুনগত মান খতিয়ে দেখেন।পাশাপাশি সকল জল সরবরাহ কারি খুচরো বিক্রেতাগন কে উওর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্যালয়ে গিয়ে খাদ্য সুরক্ষা দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে অনতিবিলম্বে প্রত্যেক কে ফেসাই লাইসেন্স সহ রেজিষ্ট্রেশন করিয়ে নাম নতিভুক্ত করতে নির্ধেশিকা জারি করা সহ নির্ধারিত বৈধ নতিপএ সংগ্রহের পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেজিং ওয়াটার বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অভিযান কারি দলটি।অভিযান কালে প্রতিটি প্যাকেজিং জল বিক্রয়কারি খুচরো বিক্রেতাগনের ক্ষেএে প্যাকেজিং জল বিক্রয়ের ক্ষেএে বিভিন্ন ধরনের গাফিলতির চিএ পরিলক্ষিত হয়।তার দরুন প্রতিজন খুচরো বিক্রেতাগনের বিরুদ্ধে নির্ধারিত মেয়াদ সম্পন্ন জল বিক্রি সহ জলে প্লাস্টিকের জার গুলোর গুনগত মান যাচাই করে জল বিক্রির নির্ধেশ জারি করা হয়।অন্যতার পরবর্তী সময়ে পুনরায় এই ধরনের গাফিলতির কারনে জরিমানা সহ প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়।অভিযানকারী দলটি জানান এখন থেকে গতানুগতিক ভাবে এই ধরনের অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে,যাতে করে অসাধু জল কারবারিরা প্যাকেজিং মিনারেল ওয়াটার বিক্রির নামে সাধারণ জনগনকে ঠকাতে না পারে।