নাম শুনে চমকে ছিলেন সবাই। প্রচার-ঝলক সেরকমই ছিল। প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটি নিয়ে টলিউড উত্তেজিত বরাবরই। তার চেয়েও উত্তেজনা বেশি বাণিজ্যিক বাংলা ছবির দর্শকের। এক সময় মরা গাঙে জোয়ার এনেছিলেন এই জুটি। টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন, হলের মধ্যে মুহুর্মুহু সিটি, বুম্বা-ঋতুর ফ্যান ক্লাব, প্রযোজক ও হল-মালিকদের চওড়া হাসি— সব দিয়েছিলেন এই জুটি। মনে রাখা দরকার তখন সিংগল স্ক্রিনের যুগ। আর ছবির ঘোষণা থেকে প্রেস ডেকে প্রচার হত না। সময় পাল্টেছে কিন্তু মানুষ দুটি এবং তাদের নামের জাদু এক থেকে গেছে। তাই নির্মাতারা সেই জাদুকাঠির ব্যবসায়িক ব্যবহার করবেন এ আর নতুন কি! আর এইখানেই সেই চিরকালীন ফর্মুলা সামনে এসে দাঁড়ায়। প্রোডাক্ট ভাল হলে আসুন, দেখুন, পাশে দাঁড়ান বলে বিরাট হইচই না করলেও লক্ষ্মীলাভ হয়। বড় নাম থাকলেই হয় না, তাদের কীভাবে ব্যবহার করা হবে সেটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। স্বস্তিক প্রোডাকশনস ও এনইআইডিয়া প্রোডাকশনস প্রাইভেট লিমিটেড-এর কর্তাব্যক্তিরা সেই ব্যবহারটিই বুদ্ধিদীপ্ত ও যথাযথভাবে করেছেন। সুপারস্টারদের উপস্থিতি তো পরে, নামই যে যথেষ্ট তা প্রমাণ করে বানিয়েছেন, ‘প্রসেনজিৎ ওয়েডস ঋতুপর্ণা’ (Prosenjit Weds Rituparna)।
যে ‘ফ্যান ক্লাব’-এর কথা বলছিলাম, বাস্তবে যে তার কতটা ব্যাপ্তি ও কতটা সুদূরপ্রসারী তার প্রভাব, আদতে সেই নিয়েই এই ছবির গল্প। মোটের ওপর প্রেমের গল্প কিন্তু কল্পনা ও বাস্তবের মায়াময় মিশেল, তা থেকে উদ্ভূত অদ্ভুত সব পরিস্থিতি যা কখনও হাসায়, কখনও কাঁদায় আবার কখনও মেলায়। সব উপাদানে কাহিনি জম্পেশ বুনেছেন সম্রাট। শুধু তো পরিচালক নয়, সম্রাট এ ছবির গল্পকারও। ঋতুপর্ণা নামের একটি মেয়ে সুপারস্টার প্রসেনজিতের অন্ধ ভক্ত। এতটাই যে বাড়িতে বাবা-মাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, বিয়ে যদি করতেই হয়, তবে সে তার স্বপ্নের নায়ক প্রসেনজিৎ-কেই করবে। নিজের নাম ঋতুপর্ণা হওয়ায় তার স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। উল্টোদিকে প্রসেনজিৎ নামের একটি ছেলে, আদতে যে ব্যাঙ্ক-কর্মী তার জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ ভারই যেন এই নাম। সে যা-ই হোক সু্পারস্টার প্রসেনজিতের বদলে এই ব্যাঙ্ক-কর্মী প্রসেনজিতের সঙ্গেই ঋতুপর্ণার (Prosenjit Weds Rituparna) বিয়ে ঠিক হয় আর চুরচুর হয়ে যায় তার এতদিনের লালন করা স্বপ্ন। আর এইখান থেকেই শুরু আসল গল্প।