প্রতিনিধি কৈলাসহর:-ত্রিপুরা রাজ্যের কর্মচারী সংঘ ঊনকোটি জেলা কমিটির উদ্যোগে আজ কৈলাসহর ঊনকোটি কলাক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত হয় ৩য় ত্রিবার্ষিক জেলা সম্মেলন। ভারত মায়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ প্রদান এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও শ্রমিক গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলন পর্ব।উদ্বোধনী মঞ্চে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের যুব বিষয়ক ক্রীড়া দপ্তর ও শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়।বিশেষ অতিথি ছিলেন ত্রিপুরা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী সান্তনা চাকমা।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান মবস্বর আলী,জেলা পরিষদের সদস্য তথা ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা সভাপতি বিমল কর,পুর পরিষদের চেয়ারম্যান চপলা দেবরায়,ত্রিপুরা রাজ্য কর্মচারী সংঘের প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বিশ্বাস,কোষাধ্যক্ষ রঞ্জন পাল,প্রদেশ সহ-সভাপতি দিলীপ ভৌমিক এবং ভারতীয় মজদুর সংঘের ঊনকোটি জেলা সভাপতি অসীম চাকমা।অনুষ্ঠান মঞ্চে সভাপতিত্ব করেন কর্মচারী নেতা প্রহ্লাদ দেবনাথ।স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক তথা নেতাজি বিদ্যাপীঠের শিক্ষক পার্থ সারথি দত্ত।বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, ২০১৮ সাল থেকে ২৫ সাল অব্দি বিকশিত ভারত নির্মাণের অঙ্গীকারে ত্রিপুরার গ্রামীণ স্তরে যোজনা এবং প্রতি ঘরে সুশাসনের বার্তা পৌঁছে দিতে সরকারি কর্মচারীরাই বড় দায়িত্ব পালন করেছেন।এই সময় অব্দি ৭০ হাজারের মধ্যে ৪০ হাজার দিব্যাঙ্গ ভাইবোনদের ইউআইডি কার্ড প্রদান করা হয়েছে।বাম আমলে কোন সরকারি ফাইল মহকুমা থেকে মন্ত্রী হয়ে ঘুরে আসতে প্রায় ছয় মাস লাগতো।আজ এক ঘণ্টার মধ্যে ডিরেক্টরেট থেকে ফাইল আসে এবং মানুষের সমস্যার সমাধান করা হয়।২০১৪ সালের পূর্বে অর্থাৎ ৬৮ বছরে সারা ভারতবর্ষে ৫৮ হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়ক তৈরি করা হয়।।আর ২০১৪ সালের পর থেকে সারা ভারতবর্ষে দেড় লক্ষ কিঃমিঃ জাতীয় সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।একটা সময় আর কে এই মাঠে জনসভার মাঠ ভর্তি করার জন্য বাগান শ্রমিকদের আনা হতো।অথচ তাদের মাথার উপরে ছাদ রয়েছে কিনা অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান রয়েছে কিনা সেদিকে বাম সরকার কখনোই চিন্তা করেনি।কারণ তাদের শোষণের মানসিকতা ছিল। আজ ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার এই সময়ের মধ্যে তিন হাজার জমির পাট্টা দিয়েছে।যার ফলে বাগিচা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পেয়েছে এবং শৌচালয় পেয়েছে।ওরাও আত্মনির্ভর ভারতের সমান অংশীদার হয়েছে।তিনি বলেন ২০১৪ সালের পূর্বে ভারতবর্ষে পাঁচটি রাজ্যে মেট্রোরেল ছিল।আজ এই দশ বছরে ২২টি রাজ্যে মেট্রোরেলের কাজ চলছে। এই মেট্রো রেল একটা সময় জাপানের প্রকৌশলীরা তৈরি করত,আর আজ ভারতের ছেলেমেয়েরা মেট্রো রেল তৈরি করছে এবং বিদেশে এক্সপোর্ট করছে।করোনা কারীন পরিস্থিতিতে ভারতেই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয় এবং এই দেশীয় ভেকসিন ভারতবাসীকে দেওয়ার সাথে সাথে বিশ্বের ১০০টি দেশে বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। একটা সময় বিদেশি কোম্পানির মোবাইল ভারতে এক্সপোর্ট হতো।আজ ভারতের ছেলেমেয়েরা ভারতে তৈরি এন্ড্রয়েড মোবাইল বিদেশে এক্সপোর্ট করেছে যেখানে ৩৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি রেভিনিউ এসেছে।সারা ভারতবর্ষে ৩৫০টিরও বেশি মেডিকেল কলেজ নির্মাণ হয়েছে এবং কিছু স্টেটে নির্মাণের কাজ চলছে।উত্তর পূর্বাঞ্চলে ২০১৪ সালের পূর্বে সাতটি বিমানবন্দর ছিল বর্তমানে ১৭ টি বিমানবন্দর রয়েছে।এই সরকার আসার পর ছয়টি জাতীয় সড়ক নতুন ভাবে তৈরি করা হয়েছে।স্বাস্থ্য পরিষেবার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, আয়ুষ্মান কার্ড প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়েছে। কৈলাসহর আর জি এম হাসপাতালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নেশা মুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে এবং বিশ্রামগঞ্জ মহকুমায়ও এই নেশা মুক্তি কেন্দ্র হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু হবে।ডেন্টাল কলেজ নির্মাণের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় চার লক্ষেরও বেশি ত্রিপুরাবাসী ঘর পেয়েছে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সান্তনা চাকমা বলেন রাষ্ট্র এবং সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই ভারতীয় জনতা পার্টির সরকারের মূল লক্ষ্য। সরকারের বিভিন্ন যোজনা এবং প্রকল্প গুলোকে রূপায়িত করেন কর্মচারী বন্ধুরাই।সরকারের সবকা সাত সবকা বিকাশের নীতিতে প্রায় চার লক্ষ লাখপতি দিদি হয়েছেন ত্রিপুরায়।ভারতবর্ষের অন্যান্য রাজ্যের সাথে মানুষের গড় আয় যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি ক্রমোন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরাও।বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা সভাপতি বিমল কর জানান, কর্মচারী হিতে কাজ করে চলেছে ত্রিপুরা রাজ্য কর্মচারী সংঘ।একটা সময় শোনা যেত ভেঙে দাও,গুড়িয়ে দাও, কলকারখানা বন্ধ করে দাও। আর আজ শ্রমিক হিতে রাষ্ট্র হিতে কাজ করছে এই সংগঠন।নিয়ম নীতি মেনে যেমন চাকরি দেওয়া হচ্ছে, তেমনি সুষ্ঠু বদলি নীতির মাধ্যমে কর্মচারীরাও উপকৃত হচ্ছেন।সম্মেলনের প্রথম পর্ব শেষ হবার পর নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়। নবনিযুক্ত জেলা সভাপতি হয়েছেন নিপুল দেবনাথ এবং সম্পাদক হয়েছেন পার্থ সারথি দত্ত।মহকুমা কমিটির সভাপতি হয়েছেন গৌতম চন্দ,সম্পাদক আশীষ দাস এবং ফাইনান্স সেক্রেটারি হয়েছেন প্রসেনজিৎ সিনহা।
52