ধর্মনগর প্রতিনিধি।
রাজ্য সরকারের তৎপরতায় এবং রেলওয়ে দপ্তরের সদিচ্ছায় অবশেষে দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে চলেছে পানিসাগরের চন্দ্র হলামপাড়া বাসীর । এর ফলে স্থানীয় উপজাতি হালাম জনজাতি অংশের বাসিন্দাদের থেকে শুরু করে সকলের মনেই আনন্দ পরিলক্ষিত হল। প্রসঙ্গত দীর্ঘদিন থেকেই পানিসাগর চন্দ্রহালাম পাড়ার জনগণদের দাবি ছিল একটি রেলওয়ে ক্রসিং এর সুব্যবস্থা করা । কেননা চন্দ্র হালাম পাড়ার ওপর দিয়ে অতিক্রম করা রেল লাইনটি, পানিসাগর জাতীয় সড়ক থেকে চন্দ্র হালাল পাড়ায় যাতায়াতের মূল সড়কটির উপর দিয়ে যাওয়ার ফলে ধর্মনগর আগরতলা রোডের প্রতিটি ট্রেন এই রেল লাইনের ওপর দিয়েই যাতায়াত করত। এর ফলে এই এলাকার জনগণদের জীবন অনেকটাই সংশয়ের মধ্যে পড়ে যায় রাস্তার উপর দিয়ে রেললাইন অথচ রাস্তার দুধারে ছিল না কোন ক্রসিং গেট। এর ফলে এই এলাকায় অনবরত দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। এমনকি রাস্তা দিয়ে মোটর গাড়ি অতিক্রম কালে রেল লাইনে চাকা আটকে পরবর্তীতে এই মোটর গাড়ির কারনে রেল দূর্ঘটনার কবলে পরে। একটা সময় এই রেল ক্রসিংটি স্থানীয় এলাকাবাসীদের কাছে একটি আতঙ্কের রূপ নেয়। এলাকা জুড়ে দাবি উঠতে থাকে রেল দপ্তর যেন অতিসত্বর এই সংশ্লিষ্ট স্থানে আন্ডার ব্রিজ তৈরি করার ব্যবস্থা নেয় ।স্থানীয়রা জানিয়েছেন ১৯৯৯ সাল থেকে এ দাবি উঠতে থাকে এলাকায় । যত দিন যায় দাবি আরও প্রক্ষর রূপ নেয় । একটা সময় স্থানীয় এলাকাবাসীরা মিলে রেললাইনে বসে রেলের জেনারেল ম্যানেজারের স্পেশাল ট্রেন আটকে দেন ।জেনারেল ম্যানেজার সংশ্লিষ্ট স্থানে রেল থেকে নামতে বাধ্য হন। উনি নেমে এলাকাবাসীদের সাথে আলোচনা করে খুব শীঘ্রই বিষয়টি দেখবেন বলেও আশ্বাস দেন ।এছাড়াও বহুদিন একই দাবিতে স্থানীয়রা রেল অবরোধও করে যান। একটা সময় বাধ্য হয়ে উত্তরের জেলা শাসকের তত্ত্বাবধানে রেলওয়ে দপ্তরের সাথে আলোচনার পর রাজ্য সরকারের অর্থানুকুল্যে রেলওয়ে দপ্তর বিগত দু বছর পূর্বে আন্ডার ব্রিজের কাজ শুরু করে। বর্তমানে কাজ সম্পন্ন হওয়ার পালা। এই কাজ সম্পূর্ণ করতে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে জোরদার প্রস্তুতি। বুধবার রেলওয়ে দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন বিগত কয়েকদিন যাবত ব্লক নিয়ে চলছে রেললাইনের কাজ। বুধবার ছিল প্রায় চার ঘন্টা রেললাইন ব্লক । এরফলে এই দিন শিলচর আগরতলা এবং আগরতলা শিলচর চলাচলের কিছুটা বিলম্ব হয়। সরকারের দেয়া প্রায় আড়াই কোটি টাকার খরচে তৈরি হচ্ছে এই ব্রিজ। উনি জানিয়েছেন আশা করা হচ্ছে আগামী ডিসেম্বর মাসেই কাজ সম্পূর্ণ শেষ করা যাবে ।পাশাপাশি এই ব্রিজের কাজ তড়িৎ গতিতে এগিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় গ্রামবাসীরা রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রাজ্য সরকারের তৎপরতায় এবং রেলওয়ে দপ্তরের সহযোগিতায় থানীয় এলাকার জনগণ এবার অনেকটাই নিস্তার পাবেন বলে তাদের আশা। কেননা এ এলাকার কচিকাঁচা থেকে শুরু করে সবাই এর রেল লাইন অতিক্রম করেই এতদিন যাতায়াত করত। এই রেল লাইন এর উপর দিয়ে পানিসাগর স্থিত কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের গাড়ির পাশাপাশি পানিসাগর হলিক্রসের ছাত্রদের গাড়ি থেকে শুরু করে বহু ছাত্ররা এর রেল লাইনের উপর দিয়ে হেঁটে অতিক্রম করতেন।এবার এই আন্ডার ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হলে ছাত্রদের সাথে সাথে অভিভাবরাও অনেকটা স্বস্তি পাবেন।
