প্রতিনিধি, বিশালগড়, ১৯ ডিসেম্বর।। দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান। অবশেষে বিজেপির সিপাহীজলা জেলার স্থায়ী কার্যালয় হলো। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী উপমুখ্যমন্ত্রী প্রদেশ সভাপতি সহ একঝাঁক প্রদেশ এবং জেলা স্তরের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় নবনির্মিত জেলা কার্যালয় তথা অটল ভবনের। বিশালগড় রঘুনাথপুরে সর্বসুবিধাযুক্ত এই কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। সোমবার কার্যালয়ের দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মন, বিজেপির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক টিংকু রায়, সম্পাদক তাপস মজুমদার, জসিম উদ্দিন,মৌসুমি দাস, আগরতলার মেয়র দীপক মজুমদার, সংগঠন মহামন্ত্রী ফণীন্দ্র নাথ শর্মা, যুব মোর্চার প্রদেশ সভাপতি নবাদল বণিক, বিধায়ক বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা,সিপাহীজলা জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, সিপাহীজলা (উত্তর) জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ ভৌমিক, (দক্ষণ) জেলা সভাপতি দেবব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ। এছাড়া সিপাহীজলার দুটি সাংগঠনিক জেলার কার্যকর্তা, পুর পরিষদ, নগর পঞ্চায়েত, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধি সহ কয়েক হাজার কার্যকর্তা ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের সাক্ষী ছিলেন। ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বলেন কার্যালয় এবং কার্যকর্তা কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই কার্যালয়ে কার্যক্রম তৈরি হবে জনগণের স্বার্থে। বিজেপি পার্টিতে ১৭ কোটি সদস্য রয়েছে। একাত্মমানববাদ আমাদের দর্শন। কাজেই এ কার্যালয় সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আমরা সেবাহি সংগঠনের মাধ্যমে কাজ করি। কাজেই এ কার্যালয় থেকেও সংগঠনের পাশাপাশি সেবামূলক কার্যক্রম জারি থাকবে। কার্যালয়টি প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ভারতরত্ন অটল বিহারি বাজপেয়ির নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কর্মজীবনের নানা দিকগুলি মার্গদশন হিসেবে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন রাজধানীর আস্তাবল ময়দানে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ত্রিপুরার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু এত জনজোয়ার আমি জীবনে কখনো দেখিনি। যাদের চোখের পর্দা সরছে না, তারা ঠান্ডা ঘরে বসে অপপ্রচার করছে। সিপিএমের কাছে আর কিছু নেই। তারা দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে। আর তাদের দোসর কংগ্রেস উশৃংখল পার্টি। কংগ্রেস এবং সিপিএমের আমল আমরা দেখেছি বিশলগড় সন্ত্রাসের আঁতুড় ঘর ছিল। বিশালগড় কেমন ছিল সবাই জানে। এই দিশাহীন উশৃংখলদের পেছনে পেছনে কিছু যুবক কেন ঘুরছে বুঝতে পারছি না। তাদেরকে বুঝিয়ে আমাদের সঙ্গে আনতে হবে। আজ সন্ত্রাস অস্ত্রের ঝংকার নেই বিশালগড়ে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কোন প্ররোচনায় ফাঁদে না দেওয়ার জন্য কার্যকর্তাদের পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। বিজেপির প্রদেশ সভাপতি রাজিব ভট্টাচার্য বলেন গতকালকের আস্তাবলের জনসভায় মানুষের উচ্ছ্বাস স্পষ্ট জানান দিয়েছে তেইশের নির্বাচনে বিজেপির জয় সুনিশ্চিত। কার্যকর্তারা ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছে। ঘরে ঘরে বিজেপি পৌঁছে গিয়েছে। আর ২৩ এর নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার পর গেরুয়া আবিরে বিজয় মিছিল করে ঘরে ফিরবে কার্যকর্তারা। গতকালকের জনসভা দেখে কংগ্রেস এবং সিপিএম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। রাজিব ভট্টাচার্য আরো বলেন এই একটি পরিবারের সংস্পর্শে যারা আসবে তারা পাগল হয়ে ঘুরবে। এর প্রমানও রয়েছে। একেবারে কালীঘাটে গিয়ে মাথা নেড়া করে পাগল হয়ে ঘুরতে হচ্ছে। সন্ত্রাস খুন রাহাজানি ছিল সিপিএমের পুঁজি। বিশালগড়ে বহু মানুষ বাড়ি ছাড়া হয়েছে। বিশালগড়ের দুই বিধায়ক খুন হয়েছে। আবারও সন্ত্রাস শুরু করেছে। এসব সন্ত্রাসের উচিত জবাব দেওয়ার জন্য কার্যকর্তারা প্রস্তুত রয়েছে। উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মন বলেন প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের পর কংগ্রেস এবং সিপিএম পাগলের প্রলাপ বকতে শুরু করেছে। সিপিএম সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী এবং কংগ্রেসের সুদীপ বর্মন একই সুরে কথা বলতে শুরু করেছে। আর আরেকজন বিশালগড়ের বিধায়ক শ্রীযুক্ত সাহা এলাকায় গোলমাল সৃষ্টি করে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। কংগ্রেসের এক নেতা তার ভাইকে বিশালগড়ে গোলমাল পাকানোর দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন সিপিএম ঘরে ঘরে চাঁদার রশিদ পৌঁছে দিত। আর বিজেপি ঘরে ঘরে সুশাসন পৌঁছে দিয়েছে। তিনি বলেন আগামী নির্বাচনে একটি আসনও পাবে না সিপিএম। সেই ব্যবস্থা হচ্ছে। যুব মোর্চার প্রদেশ সভাপতি নবদল বণিক বলেন এই কার্যালয় একটি মন্দির। এই মন্দিরের ভগবান কার্যকর্তারা। এদিন ১০ হাজার নর নারীর মধ্যাহ্নভোজনের আয়োজন করা হয়েছে। নতুন জেলা কার্যালয় পেয়ে অত্যন্ত খুশি জেলার সকল স্তরের কার্যকর্তারা। উদ্বোধনকে ঘিরে কার্যকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করেন স্থানীয় শিশু শিল্পীরা।
105
previous post