
ধর্মনগর , ৪ ই নভেম্বর ২০২৩। লোকেরা পরমপিতা পরমাত্মার কতো মহিমার গায়ন করেন তো নিশ্চয়ই উঁনি এই সৃষ্টিতে এসে কোনো দিব্য কর্তব্য করেছেন। হয়তো পিতা হয়ে পালনা দিয়েছেন, শিক্ষক হয়ে জ্ঞান দিয়েছেন, বা সদগুরু হয়ে সকলের সদগতি করেছেন। এর জন্য প্রজাপিতা ব্রহ্মার জীবন কাহিনী জানতে হবে যিনি নিজের সম্পূর্ণ জীবন পরমাত্ম- কার্যের জন্য সমর্পিত করে দিয়েছেন। উক্ত কথা ইন্দোর থেকে আগত প্রখ্যাত টেনশনমুক্তি বিশেষজ্ঞা ব্রহ্মাকুমারী পুনম বেহেনজী প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জ্ঞানদর্পণ ভবন, ধর্মনগর শাখার দ্বারা আয়োজিত ৯ দিন ব্যাপী নিঃশুল্ক “বিদায় টেনশন ” শিবিরের সপ্তম দিনে “পরমাত্মার অবতরণ” অন্তর্গত বিষয়ের উপরে বলেছেন। অতঃপর উনি বলেন- উনাকে সিন্ধুর হায়দ্রাবাদে সকলে দাদা লেখরাজ হিসেবে জানতেন। উনি ছোটবেলা থেকে অনেক সরল স্বভাব এবং মধুর ব্যবহারের ধনী ছিলেন। দাদা লেখরাজের পিতা প্রাইমারি স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। ছোটবেলাতেই উনার মা মারা গিয়েছিলেন আর কিছু বছর পরে উনার পিতাও মৃত্যুবরণ করেন। তারপরে উনার পালন পোষণ উনার কাকার দ্বারা হতে থাকে। দাদা উনার দানাশস্যের ব্যবসাতে সাহায্য করতে লাগলেন। পরে হীরা, সোনা- দানার ব্যবসা শুরু করেন দেখতে দেখতেই তিনি অনেক বড়ো গহনা বিক্রেতা, হীরার ব্যবসায়ী (জুয়েলার) হয়ে গিয়েছিলেন। রাজা মহারাজাদের সঙ্গেও উনার ব্যবসা চলতো। ১৯৩৬ সালে ৬০ বর্ষের আয়ুতে উনি সন্ধ্যার সময়ে মুম্বাইয়ের বাবুলনাথ মন্দিরে বসেছিলেন যেখানে উনার বিষ্ণু চতুর্ভুজের দর্শন হলো। তারপর থেকেই উনি এই জগৎ থেকে একটু হারিয়ে যেতে লাগলেন। কিছু সময় পরে বেনারসে উনার বন্ধুর ঘরে বসেছিলেন সেখানে উনি মহাবিনাশের সাক্ষাৎকারও করেছিলেন। পুরানো দুঃখদায়ী দুনিয়ার বিনাশের সাক্ষাৎকার পরমাণু বোমা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা গৃহযুদ্ধের দ্বারা কিভাবে হবে তার সাক্ষাৎকার হয়। কিছু সময় পরে সাক্ষাৎকার হলো যে উপর থেকে ছোট – ছোট তারারা নীচে আসছে এবং তারা দেবী – দেবতা হয়ে যাচ্ছে। তারপর আকাশবাণী হলো – এমন সুখের দুনিয়া বানানোর জন্য পরমাত্মা তোমাকে নিমিত্ত বানিয়েছেন। তারপর থেকেই দাদার মন আর বিজনেসে লাগেনি। ঐ সময় উনার বিজনেস টপে ছিল। তারপরে উনি ঘরে ফিরে এলেন। ঘরে একদিন উনার গুরুর সদ্সঙ্গ চলছিল কিন্তু তার মধ্যেই উনি উঠে এসে উনার রুমে চলে গেলেন উনার স্ত্রীও পিছে পিছে গেলেন। উনি দেখলেন যে রূম লাল প্রকাশে ভরপুর হয়ে গেছে, দাদা বসে আছেন। উনার মুখ থেকে বের আসছিলো “নিজানন্দ স্বরূপম শিবোহম্ শিবোহম্, প্রকাশ স্বরূপম শিবোহম্ শিবোহম্ , জ্ঞান স্বরূপম শিবোহম্ শিবোহম্ ……….”। উনি দাদাকে জিজ্ঞেস করলেন যে কি হয়েছে, উনি বললেন যে এক লাইট ছিল, এক মাইট ছিল। উনি কিছু বুঝতে পারলেন না। সেটা পরমধাম থেকে পরমজ্যোতি পরমাত্মা শিবের দিব্য অবতরণ দাদার শরীরে হয়েছিল। তারপর প্রতিদিন শিববাবা উনার শরীরের আধার নিয়ে জ্ঞান শুনানো আরম্ভ করলেন। এটাই জীবনকে পরিবর্তন করার মতো অদ্ভুত জ্ঞান ছিল যা আত্মাদের তৃপ্ত করতে লাগলো। দিব্য অবতরণের পরে পরমাত্মা উনাকে অলৌকিক কর্তব্য বাচক নাম দিলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা, যাকে ভালোবাসার সহিত সকলে বাবা বলতে লাগলো। পরমাত্মা শিব, বাবার শরীরের দ্বারা যে জ্ঞান শুনিয়েছেন তাকে ব্রহ্মাকুমারীজে মুরলী বলা হয়ে থাকে কারণ সেটাকে শুনার পর মন ময়ূরের ন্যায় ড্যান্স করতে শুরু করে। পরমাত্মা শিব উনার শরীরে সর্বদা থাকতেন না। জ্ঞান শুনিয়ে পুনরায় পরমধাম চলে যেতেন।
ব্রহ্মাকুমারী পুনম বেহেনজী আগে বললেন যে যখন পরমাত্মা শিব ব্রহ্মা বাবার শরীরের দ্বারা জ্ঞান দিতে লাগলেন তো ধীরে – ধীরে ভিড় বাড়তে লাগলো। তারপর সেখানের মুখ্য গণ্যমান্যদের অনুরোধে বাচ্চাদের জন্য হোস্টেল খোলা হলো যাকে পরে ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হয়েছে। তাতে ৮ থেকে ১৬ বর্ষের আয়ুর ৩০০ জন বাচ্চা থাকতে আসলো। উনি অলৌকিক পিতা হয়ে বাচ্চাদের অনেক সুন্দর পালনা করতে শুরু করলেন। ব্রহ্মাবাবা আমাদের গুরু নন, না তো সংস্থার সংস্থাপক। সংস্থার সংস্থাপক তো হলেন স্বয়ং পরমাত্মা শিব। সংস্থার নাম প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয়কে স্পষ্ট করার জন্য উনি বললেন যে এটা পুরো বিশ্বের আত্মাদের উন্নতির জন্য খোলা হয়েছে। এটা মোটামুটি সমস্ত দেশেই আছে এবং এখানে সর্ব ধর্মের লোকেরা এসে জ্ঞান প্রাপ্ত করেন তথা মেডিটেশন শিখেন। মা কে প্রথম গুরু বলা হয় এইজন্য এই সংস্থাকে ব্রহ্মাকুমারী সংস্থা বলা …