
প্রতিনিধি কৈলাসহর:-ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল হকিকত দেখতে আজ ২৪শে নভেম্বর দুপুর নাগাদ আচমকা পরিদর্শনে আসেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ডিরেক্টর ডক্টর সুপ্রিয় মল্লিক।জেলা হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ড পরিদর্শন সহ বর্তমানে মেডিসিনের স্টক কি পরিমান রয়েছে সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নিয়েছেন তিনি।এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধিকর্তা ডাঃ মল্লিক জানান জেলা হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি এবং পরিকাঠামোগত সমস্যা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্যে উনার এই পরিদর্শন। তিনি বলেন,এই মুহূর্তে জেলা হাসপাতালে ২২ জন চিকিৎসক রয়েছেন,তার মধ্যে ১৬ জন স্পেশালিস্ট। নার্সিংয়ে রয়েছেন ৪৩ জন। জেলা হাসপাতালে থাকা ডায়ালসিস,এক্স-রে,সিটি স্ক্যান,ল্যাবরেটরী ইত্যাদি পরিষেবা সুন্দরভাবেই চলছে বলে জানান অধিকর্তা।এছাড়া ওটি টেকনিশিয়ান রয়েছেন ৬জন এবং ওটি নার্স রয়েছেন তিনজন।তবে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে পরিকাঠামোগত অভাব থাকার কারণে ল্যাব টেকনিশিয়ান থাকলেও বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।যেখানে সরকারের তরফ থেকে ৬৩টি ল্যাব টেস্টের সুযোগ থাকলেও পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়ে উঠছে না।সেক্ষেত্রে সরকার এই সমস্যার সমাধান করে মানুষকে আরো বেশি বেশি করে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে বলে তিনি জানান। জেলার মানুষের কথা চিন্তা করে জেলা হাসপাতালে আগামী দিনে কার্ডিয়াক ইউনিট খোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। কৈলাসহরে অনুষ্ঠিত হওয়া রাজ্য ভিত্তিক একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডক্টর মানিক সাহা কৈলাসহর বাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে কিছুদিনের মধ্যেই আর জি এম হাসপাতালকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলা হবে।সেই মোতাবেক স্বাস্থ্য দপ্তর বিশেষভাবে আর জি এম হাসপাতালের দিকে নজর দিয়েছে এবং বর্তমানে প্রসূতি বিভাগ,শিশু বিভাগ সহ অন্যান্য বিভাগ চালু করতে সক্ষম হয়েছে।তবে আরজিএম হাসপাতালে পরিকাঠামোগত আরো উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিকর্তা নিজেই জানিয়েছেন।তিনি জানান আরজিএম হাসপাতালে ওটি পরিষেবা চালুর জন্য আগামী বছরের মার্চ মাসে একটি স্পেশালিস্ট টিম ভিজিট করবে।তারপর ওটি পরিষেবা চালু করা হবে।জেলা এবং আরজিএম হাসপাতালে প্রতিদিনের মেডিসিন স্টক কি রয়েছে তা প্রতিদিন পাবলিক কে জানানোর জন্য একটা নোটিশ বোর্ড তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন মেডিকেল সুপার কে।চলতি মাসের ২৯ এবং ৩০শে নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর এসপি সিং ভাগেল ঊনকোটি জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিদর্শন করবেন এবং বিভিন্ন লাইন ডিপার্টমেন্টের পাশাপাশি জনসাধারণের সাথে কথোপকথন করবেন বলেও জানা গেছে।এদিকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের ডিরেক্টর সুপ্রিয় মল্লিকের সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করতে জেলা হাসপাতালে আসেন কৈলাসহরের বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা।প্রথমেই বিরজিৎ বাবু স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই পরিদর্শনের জন্য।পাশাপাশি জেলা হাসপাতাল এবং আর জি এম হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিসেবার আরও মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য কিছু দাবি রাখেন স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে।তিনি বলেন,আইসিও পরিষেবা শীঘ্রই চালু করা এবং কেবিন সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন,প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান,জেলা পরিষদ সদস্য,ক্লাব থেকে শুরু করে সবাইকে নিয়ে বৈঠক করার আহ্বান রাখেন তিনি।এর ফলে পাবলিক কোরডিনেশন যেমন বাড়বে তেমনি ডাক্তার বাবুদের কাজের ক্ষেত্রেও অনেকটাই সুবিধা হবে।দাবিগুলোর সাথে সহমত পোষণ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডঃ সুপ্রিয় মল্লিক বলেন যে আগামী মাসের মধ্যেই সমস্ত ক্লাব,এনজিও, সামাজিক সংস্থা, জনপ্রতিনিধি সবাইকে নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডক্টর মল্লিক নিজেও উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন। এক-ই সাথে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিধায়কের কাছে এই পরিষেবা চালুর জন্য বিধায়ক তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য চাইলে বিধায়ক বিরজিৎ সিনহা ৫টি আইসিইউ বেড ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।বর্তমানে জেলা হাসপাতালে একজন সাইকিয়াটিস্ট চিকিৎসক রয়েছেন।আগামী দিনে ভগবান নগর জেলা হাসপাতালে একটি ডি-এডিকশন সেন্টার খোলার পরিকল্পনা রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের।যা পরিচালিত হবে ত্রিপুরা সরকারের সমাজ কল্যাণ এবং সমাজ শিক্ষা দপ্তর কর্তৃক।স্বাস্থ্য অধিকর্তার সাথে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডঃ শঙ্খ শুভ্র দেবনাথ এবং জেলা হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডঃ পূন্যক্রিত দেববর্মা সহ অন্যান্য চিকিৎসকরা।