
প্রতিনিধি, বিশালগড়, ১৬ এপ্রিল।। আমাদের নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি থেকে সরে যাওয়া যাবেনা। নিজস্ব ভাষা সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে এগোতে হবে। ত্রিপুরায় জাতি জনজাতি অংশের মানুষ আদিকাল থেকেই একসঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছে। আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা অনেক হয়েছে। বিভেদের বিরুদ্ধে জাতি জনজাতি সবাইকে কাজ করতে হবে। বিশালগড়ে অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে কথাগুলি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। রবিবার বিশালগড় টাউন হলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং বিশালগড় পৌর পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথা উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুশান্ত দেব, রাজ্যের বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজীব ভট্টাচার্য, সিপাহীজলা জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, বিশালগড় পৌরসভারচেয়ারম্যান অঞ্জন পুরকায়স্থ, জেলাশাসক ডঃ বিশাল কুমার, বিশালগড় মহকুমা শাসক বিনয় ভূষণ দাস , অনুষ্ঠান পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র সাহা, আহবায়ক সূজয় দে প্রমূখ। সন্ধ্যা ছয়টায় প্রদীপ প্রজ্জলন করে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে আরো বলেন ত্রিপুরায় বৈচিত্রের মধ্যে এক্য বিদ্দমান। বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠী তাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির চর্চা আরও বাড়াতে হবে। বই পড়া, খেলাধূলা, সংস্কৃতি চর্চা ইত্যাদি ইতিবাচক চিন্তা চেতনার নেশা জাগ্রত করতে হবে। তিনি আরও বলেন শান্তি এবং সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করলে কাউকে রেহাই দেয়া হবে না । অপসংস্কৃতি দূর করতে হবে। সন্ত্রাস এ রাজ্যের অপসংস্কৃতি। এগুলো পয়ত্রিশ বছরের অপসংস্কৃতি। এখন সতর্ক করা হচ্ছে। এরপরেও শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার চেষ্টা হলে সরকার অ্যাকশন মুডে যাবে। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এবারই প্রথম এতো শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের পর কোন অশান্তি হয়নি। এরপরও নিন্দুকেরা সমালোচনা করছে। যা-ই হোক নতুন বছরের শুরুতে প্রতিজ্ঞা করতে হবে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়বো। সদা সত্যের পথে হাঁটবো। শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখবো। তাহলেই ত্রিপুরা সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজীব ভট্টাচার্য বলেন সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব সমাজকে নিতে হবে। সমাজ জাগ্রত হলে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে। বিশালগড়ের বিধায়ক সুশান্ত দেব বলেন সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সুস্থ সমাজ, নেশা মুক্ত সমাজ গড়ার কাজ চলছে। শিশু থেকে যুবসমাজকে সংস্কৃতির অঙ্গন এবং খেলার মাঠে টানার কাজ শুরু হয়েছে। বিশালগড় সংস্কৃতি চর্চার ভূমি ছিল। ধীরে ধীরে তা নষ্ট হয়ে যায়। সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে স্থানীয় এবং অতিথি শিল্পীরা দলগত এবং একক নৃত্য সংগীত পরিবেশন করেন। এই প্রথমবারের মতো বিশালগড়ে প্রাণোচ্ছল বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আনন্দ উপভোগ করলো।