প্রতিনিধি কৈলাসহর:-পানিসাগর সরকারি ডিগ্রী কলেজের উদ্যোগে লাইট,পেন্টিং এবং ফটোগ্রাফি সহ বিভিন্ন বিষয়ের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক দিবসীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে ১১ই সেপ্টেম্বর।এই সেমিনারে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস। গত বছর থেকে এই মহাবিদ্যালয়ের যাত্রাপথ সূচিত হয়েছিল বর্তমান সরকারের হাত ধরে।তাই যে কজন ছাত্র-ছাত্রী এই মহাবিদ্যালয়ে পাঠরত রয়েছেন তাদের অধ্যায়নের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই এক দিবসীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এই কলেজের প্রিন্সিপাল ডঃ সৌভিক বাগচী।তিনি বলেন এই মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অনেক প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে।এই মেধাকে খুঁজে বের করে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে তাদের জীবন আরো সুন্দর এবং বিকশিত হবে। বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদ্বোধক তথা বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস বলেন মহাবিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান অন্বেষণের জায়গা।এই প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পরেই জীবনের পথ প্রশস্ত হয় এবং পেশাদারিত্ব জীবনের সঠিক পথ খোঁজার সুযোগ প্রাপ্তি হয়।কলেজ কর্তৃপক্ষকে এই আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন শ্রী দাস। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রী এবং উপস্থিত সকলকে আনন্দ প্রদানের জন্য বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস একটি গান শুনিয়ে সকলের মন জয় করেছেন। পরবর্তীতে সংগীতশিল্পী শাশ্বত চক্রবর্তী একটি লোকগান শুনিয়ে উপস্থিত সকলকে আনন্দ প্রদান করেছেন।এভাবেই কথায় এবং গানে প্রথম ধাপের অনুষ্ঠানের পরে শুরু হয় স্কিল ডেভলপমেন্ট নিয়ে দ্ধিতীয় পর্বের আলোচনা চক্র। আলোচনা চক্রের শুরুতেই প্রথমে ফটোগ্রাফি নিয়ে আলোচনা করেন আগরতলা থেকে আগত সমরজিত গুহ। ফটোগ্রাফির বিভিন্ন টেকনিক্যাল পার্ট এবং তার ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবহারিক প্রয়োগ ও নির্মাণের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।সেই সাথে বর্তমানে ফটোগ্রাফির পেশাগত দিক এবং ওয়েডিং ফটোগ্রাফির যে বাজার রয়েছে বর্তমানে সে বিষয়ে তিনি জোর দিয়েছেন।এরপর পেইন্টিং এর বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন আগরতলা থেকে আগত সবুজ সাহা।তিনি তার আলোচনায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পেন্টিং,আলপনা ছবি আঁকা,কাগজের কোলাজ সবগুলোই হচ্ছে শিল্পের রূপ।প্রতি ঘরের মেয়েরাই এ কাজগুলো সুনিপুণভাবে করে থাকেন। কিন্তু সঠিক জায়গাতে তার প্রয়োগ এবং ব্যবহারিক পদ্ধতি গুলো না জানার কারণে অনেকেই সেটাকে শিল্প হিসেবে বেছে নিতে পারেন না।সবুজ বাবু বলেন খুব ছোট থেকেই তিনি এই পেশার সাথে জড়িত এবং বর্তমানে উনার একটি বুটিক রয়েছে এবং পেইন্টিং এর বিষয় নিয়ে সারা রাজ্যেই তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।উনার এই দক্ষতা থাকায় প্রতিমাসে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারছেন এবং উনার মাধ্যমে বহু লোকের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে।তার জন্যে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের তিনি উৎসাহিত করেছেন পেইন্টিং এর বিষয় সম্পর্কে যাতে করে সকলেই পড়াশুনার পাশাপাশি এটাকেও একটা পেশা হিসেবে গ্রহণ করে নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারেন।ফটোগ্রাফি এবং প্রিন্টিং এই দুটো সম্ভাবনাময় শিল্প নিয়ে বিশদ ভাবে আলোচনার পর বাচিক শিল্পের স্কিল্ড নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন কৈলাসহর থেকে আগত সাংবাদিক সুকান্ত চক্রবর্তী।সুকান্ত বাবু তার আলোচনায় বাচিক শিল্পের কথা তুলে ধরে বলেন বর্তমানে এই শিল্পের কদর এবং গরিমা দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে।বহু মানুষ বাচিক শিল্পকে পেশা হিসেবে বেচে নিয়ে ভালো লাইফ স্টাইল মেইন্টেন করছেন এবং পরিবার প্রতিপালন করছেন। যেকোনো একটি মঞ্চকে সামগ্রিক পরিচালনার দায়ভার বর্তায় একজন সঞ্চালকের উপর।আর সেই কাজটি দক্ষতা এবং একাগ্রতার সাথে করতে পারলে অনেকটাই সফল সঞ্চালক হিসেবে দর্শকদের কাছে সম্মানিত হওয়া যায়। তার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন হয় মঞ্চানুযায়ী কথা বলা এবং সুনিপুণভাবে উচ্চারণের ব্যবহার ও সঠিক শব্দ প্রয়োগ।তার জন্য আবৃত্তি শেখারও যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বাচিক শিল্পের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে লক্ষ্য করা যায় অনেক ছাত্র-ছাত্রী এই শিল্পটাকে ভালোবাসেন এবং সেদিকে এগিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে ও প্রকাশ করেছেন।সবশেষে মনোজ্ঞ আলোচনায় অংশ নেন আগরতলা এমবিবি কলেজের সোসিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর সুরজিৎ সেনগুপ্ত।প্রাজ্ঞ এই আলোচক উনার আলোচনা পর্বের শুরুতেই শীর্ষক বিষয়গুলোর উপর আলোচনার পাশাপাশি তিনি তার সমাজতত্ত্বের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে।উনার মনোগ্রাহী আলোচনায় অভিভূত হয়েছেন উপস্থিত সকলেই।সব মিলিয়ে পানিসাগর সরকারি ডিগ্রী কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনার অনেকটাই সফল হয়েছে এবং আগামী দিনেও এ ধরনের সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
90
previous post