প্রতিনিধি,গন্ডাছড়া ৫ সেপ্টেম্বর:- বৃহস্পতিবার শিক্ষক দিবসের দিনে গন্ডাছড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল ডঃ শ্রীমন্ত রায় এক অভিনব উদ্যোগ হাতে নেয়। এদিন তিনি সকাল সাতটায় গন্ডাছড়া মহকুমা সদর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরবর্তী রমেশ কবিরাজ পাড়ায় ছুটে যান। সেখানে সম্প্রতি বন্যায় মানুষের ঘরবাড়ি, ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষনীয় সামগ্রী,কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তিনি এদিন রমেশ কবিরাজ পাড়া অঙ্গনওয়ারী সেন্টারের কচিকাঁচা শিশুদের মধ্যে খাতা, কলম, চকলেট বিতরণ করেন। পাশাপাশি সেন্টারের দিদিমণি, হেল্পার, স্থানীয় ক্লাব সদস্য এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের রাইটিং প্যাড, কলম তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। তাছাড়াও প্রিন্সিপাল ডিএসএলআর ক্যামেরা দিয়ে কিভাবে সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায় তা তিনি ছেলে-মেয়েদের হাতে কলমে শিখিয়ে দেন। সেখানে আলোচনা করতে গিয়ে প্রিন্সিপাল ডঃ শ্রীমন্ত রায় প্রথমেই শিক্ষক দিবসে উনার শিক্ষাগুরু স্যার ম্যাডামদের প্রণাম জানান। তিনি বলেন কচিকাঁচারা হলেন সবচাইতে বড় শিক্ষক। তারা না থাকলে শিক্ষকদের অস্তিত্ব থাকত না। ক্লাস রুমের মধ্যে পড়াশোনাটাই যদি শিক্ষকতা হয়, তবে এরকম শিক্ষকতা তিনি হতে চান না। আজকের দিনে শিশুদের মাঝে তার শৈশব খুঁজে পান। প্রিন্সিপাল বলেন ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলাও এক ধরনের নেশা। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন নেশা যদি করতে হয় ভালো নেশা করা দরকার। যা তোমাদের পরিচিতি দেবে, অর্থ উপার্জনের পথ দেখাবে। এদিন তিনি ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে জানান উনার পা তিন তিনবার অপারেশন করানো হয়। এরপর ছাত্র-ছাত্রীরাই উনাকে বাচ্চার মত হাঁটতে শিখিয়েছেন। সেই সময় উনার আত্মীয় স্বজনরা কেউ কাছে ছিলেন না। কারণ তিনি ত্রিপুরায় থাকেন। কলকাতায় উনার বাড়ি। বর্তমানে ছাত্ররাই ওনার পরিবার। তিনি আরো জানান ওনার পায়ের অপারেশনের সময় ওনার এক প্রতিবন্ধী ছাত্র টাকা নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনি নিতে চাননি, তবু দার হিসেবে দিয়ে গেছেন। তাদের ঋণ কোনদিন ভোলার নয়। এ কথা বলে তিনি তার চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন ত্রিপুরার সমাজ উনাকে অনেক কিছু দিয়েছে। এর জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। এদিন প্রিন্সিপাল স্যারের এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগে খুশি শিশু, অভিভাবক মহল সহ গোটা এলাকার সাধারণ মানুষ।
41
previous post